আলমডাঙ্গার 'মহিউদ্দিন একাডেমি'র আরবি শিক্ষককে রবখাস্ত
আলমডাঙ্গার কামালপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত মাল্টিমিডিয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান 'মহিউদ্দিন একাডেমি'র আরবি শিক্ষককে রবখাস্ত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের আরবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সাথে কুরুচিপূর্ণ আচরণের ঘটনায় তাকে বরখাস্ত করা হয়। আরবি শিক্ষকের কুটচালের ফাঁদে পড়ে ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানের জনপ্রিয় অধ্যক্ষকে চাকরি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়। এরইমধ্যে তিনদিন আগে তৃতীয় শ্রেনীর এক ছাত্রীকে জড়িয়ে ধরে ওই আরবি শিক্ষক। এ ঘটনায় গতকাল অভিভাবকরা প্রতিষ্ঠানে চড়াও হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে প্রতিষ্ঠানের চারতলার একটি কক্ষে আটকে রাখেন। সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ গণরোষ থেকে বাঁচাতে ওই শিক্ষককে থানায় নিয়ে আসে। এসব একেরপর এক ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদ ও জনপ্রিয় অধ্যক্ষকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে গতকাল তিনজন শিক্ষক একযোগে পদত্যাগ করে প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক পাঠদান ব্যবস্থা আরো জটিল করে তোলেন। অভিভাবকদের অনেকেই প্রতিষ্ঠানে পাঠদান ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে সাবেক অধ্যক্ষ শেখ দ্বীন মোহাম্মদকে ফিরিয়ে আনার কথা বলেছেন।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার কুলতলা গ্রামের তারিকুল ইসলাম ৯ মাস আগে মহিউদ্দিন একাডেমিতে আরবি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স করেন। যোগদানের পর থেকে তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সাথে কুরুচিপূর্ণ আচরণ করার অভিযোগ ওঠে। কিছুদিন আগে অষ্টম শ্রেনীতে পড়ুয়া এক ছাত্রীর সাথে কুরুচিপূর্ণ আচরণ করেন তারিকুল ইসলাম। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানে শোরগোল পড়ে। অধ্যক্ষ শেখ দ্বীন মোহাম্মদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে তারিকুলের এসব আচরণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন। তবে তারিকুলের হীন চক্রান্তের কাছে পরাস্ত হন অধ্যক্ষ শেখ দ্বীন মোহাম্মদ। প্রতিষ্ঠানের ভাইস চেয়ারম্যান জনিরদ্দীন অধ্যক্ষকে চাকরি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেন বলে জানা গেছে।
সূত্র মতে, পরিস্থিতিতে গত তিনদিন আগে আরবি শিক্ষক তৃতীয় শ্রেনীর এক ছাত্রীকে একা পেয়ে জড়িয়ে ধরেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে গতকাল সোমবার অভিভাবকরা প্রতিষ্ঠানে চড়াও হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক তারিকুলকে অপসারণের দাবি তোলেন এবং তারা মারমুখী হয়ে প্রতিষ্ঠানের চারতলার একটি কক্ষে আটকে রাখেন। সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে গণরোষ থেকে উদ্ধার করে তারিকুলকে থানা হেফাজতে নেয়।
একই দিনে এসব অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির প্রতিবাদে একযোগে তিনজন শিক্ষক পদত্যাগ করেন। তারা হলেন গণিত বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক ফারুক হোসেন, কম্পিউটার শিক্ষক সাজু আহমেদ ও সাধারণ শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন। পদত্যাগের পর তাদের শেষ কার্যদিবসে তারাও সাবেক অধ্যক্ষ শেখ দ্বীন মোহাম্মদকে ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দেন।
এব্যাপারে মহিউদ্দিন একাডেমির ভাইস চেয়ারম্যান জনিরদ্দিন বলেন, তিনদিন আগেই এ ঘটনার বিষয়ে অবহিত হয়েছিলাম। লন্ডনে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিতে দেরী হয়েছে। তিনি বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক তারিকুল গতকালই চাকরি থেকে অব্যহতি দিয়েছেন। আর যে তিনজন শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন তারা অন্যত্র ভাল চাকরি পেয়ে পদত্যাগ করেছেন।