আলমডাঙ্গায় নিখোঁজের প্রায় ২৪ ঘন্টা পর পরিত্যক্ত গর্ত থেকে শিশুর ভাসমান মরাদেহ উদ্ধার
আলমডাঙ্গায় নিখোঁজের প্রায় ২৪ ঘন্টা পর পরিত্যক্ত গর্ত থেকে শিশুর ভাসমান মরাদেহ উদ্ধার করেছে গ্রামবাসি। পরিবারের দাবী বড় ও মেজো চাচি শিশুটিকে পরিকর্ল্পিতভাবে হত্যা করে বাড়ির পেছনের বাঁশ বাগানের পরিত্যক্ত গর্তে ফেলে দেয়। ১৫ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুর থেকে গভীর রাত অবধি আশপাশের পুকুরে খোজ করেও লাশের সন্ধান মেলেনি। এমনকি খুলনা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি টিম বাড়ির পাশে একটি পুকুরে খোঁজাখুজি করে। তবুও লাশ মেলেনি। পরে বাড়ির অপর দিকের বাঁশবাগানের ভেতর একটি গর্তে মরাদেহ পাওয়া যায়।
আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ শিশুটির মরাদেহ সুরতাহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।
মৃত শিশু ফাহিম মালিথা (৫) উপজেলার রায়সা গ্রামের সানবাঁধাপাড়ার আব্দুল মালিথার ছেলে। তিন ভাই বোনের মধ্যে ফাহিম ছিল মেজো।
এলাকাবাসি জানান, গত তিনদিন ধরে দিনরাত বৃষ্টি হচ্ছে। ঘটনার দিন ফাহিম বাড়ি থেকে ভাত খেয়ে বের হয়। ফাহিমকে তার বাবা আব্দুল মালিথা ও মা ফাহিমা খাতুন দুপুর ২ টার দিকে বাড়িতে না পেয়ে গ্রামে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কোথাও না পেলে সকলে ধারণা করেন বাড়ির পাশে পুকুরে ডুবে গেছে। পুকুরে খোঁজাখুঁজি করেও মেলেনি লাশ। পানি থৈ থৈ পুকুরে ভালোভাবে খোঁজ করাও সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে সংবাদ দেওয়া হয় আলমডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসকে। ফায়ার সার্ভিস গিয়ে উর্দ্ধতন অফিসারের সাথে কথা বলে সন্ধ্যায় খুলনা থেকে ডুবুরি টিম নিয়ে খোঁজ করা শুরু করে। গভীর রাত অবধি ডুবুরি টিম খোঁজাখুঁজি করে ফাহিমের মরাদেহের সন্ধ্যাব করতে পারেনি। সকালে বাড়ির পিছনের বাঁশ বাগানের মধ্যে একটি পরিত্যক্ত গর্তে ফাহিমের মরাদেহ ভাসতে দেখে বাবা আব্দুল ও চাচাতো ভাই মিলন। ইতোপূর্বে একই গর্তে সোহেল আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ (৭) ডুবে মারা যায়। গত কয়েক বছরে গ্রামের এই পাড়ায় আরও ৩টি ছেলে ডুবে মারা গেছে।
ফাহিমের পিতা আব্দুল মালিথা জানান, তার মেজো ভাবি নাজমার সাথে পূর্ব থেকে বিরোধ চলে আসেছে। নাজমা তাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল। নাজমা তার ছেলেকে হত্যা করে দেখে নিল। তার ছেলেকে তার বড় ভাবি নার্গিসের সহযোগিতায় মেজো ভাবি নাজমা খাতুন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে বাঁশবাগানের পরিত্যক্ত গর্তে ফেলে দিয়েছিল। তাদের বাড়ির পাশে সকল পুকুরে পানি ভর্তি। বাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দূরে বাঁশ বাগানের মধ্যে গিয়ে তার মরাদেহ পাওয়া গেছে। তার পায়ে মহিলাদের চুলও পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়েছে।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ গণি মিয়া জানান, রায়সা গ্রামে ফাহিম নামের একটি শিশুর মরাদেহ বাড়ির পিছনের পরিত্যক্ত গর্ত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এবিষয়ে তার বাবা আব্দুল অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন। ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর সঠিক কারন জানা যাবে।
পরবর্তীতে সেই অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।