আলমডাঙ্গায় ঘর থেকে মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ উদ্ধার: পুলিশ হেফাজতে ছেলে ও স্ত্রী
আলমডাঙ্গায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক নৌ বাহিনির সদস্য আব্দুস সোবহানের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। মরদেহ থেকে দূর্গন্ধ ছড়ালে শনিবার দুপুরে প্রতিবেশিরা থানা পুলিশকে খবর দেন। মরদেহের ময়নাতদন্তের পর বিকেলে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় আলমডাঙ্গা দারুস সালাম কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী ও ছেলে শিশিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে এ সংবাদ লেখা অবধি নির্মম হত্যাকান্ডের ব্যাপারে মামলা দায়ের করা হয়নি।
মৃত আব্দুস সোবহান(৭৬) আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার থানাপাড়ার প্রয়াত রহমতুল্লাহ মাস্টারের ছেলে।
চুয়াডাঙ্গা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান লালন জানান, শনিবার দুপুরে আব্দুস সোবহানের বসত ঘর থেকে দুর্ঘন্ধ বের হলে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। মৃত ব্যক্তির মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। কয়েক দিন আগে তার মৃত্যু হতে পারে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানা যাবে।
পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্ত্রী ও ছেলেকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। তবে এখনও কোন মামলা হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, আব্দুস সোবহানের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে স্ত্রী সন্তানদের কলহ চলছিল। ছেলে শিশির সম্পর্কে এলাকাবাসী নানা নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। তিন দিন আগে রাতে বাবা ও ছেলের মধ্যে ঝগড়া হয় । সে রাতে ছেলে শিশির বৃদ্ধ বাবার গলাটিপে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার অপচেষ্টা করেন। ঘরের ওয়ালে মাথাও ঠুকে দিতে পারেন। প্রতিবেশিরা জানতে পারলেও ভয়ে কেউ যায়নি। তারপর নিজের রুমের (দোতলায়) দরজার সিটকিনি আটকে শুয়ে পড়েন। ঘরের নীচ তলায় ছেলে শিশির ও স্ত্রী থাকতেন। গত তিন দিনেও স্ত্রী কিংবা ছেলে হতভাগা বৃদ্ধের খোঁজ নেননি। খেতেও দেননি। এমতাবস্থায় গুরুতর আহত বৃদ্ধ কোন এক সময় মারা যান। এক পর্যায়ে গতকাল রুম থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে প্রতিবেশিরা দরজা ভেঙ্গে লাশ উদ্ধার করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহানের দুই কন্যা ও এক পুত্র রয়েছে। দুই কন্যাই বিবাহিত ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। একমাত্র ছেলে শিশির সকলের ছোট। সকলের আদর ও আস্কারায় শিশির অমানুষ বনে যায়। অল্প বয়সেই তিনি বেপরোয়া জীবন যাপন করতেন বলে অনেকেই অভিযোগ তোলেন।
আব্দুস সোবহান অত্যন্ত মার্জিত ভদ্রলোক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার এমন নির্মম মৃত্যু কেউ স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছেনা।