১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুমার নদে লাফ দেওয়া নারীর জীবন বাঁচাতে গিয়ে জীবন বিপন্ন করলেন মধ্য বয়সী আবুল কালাম

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৪
85
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

আলমডাঙ্গায় কুমার নদে লাফ দেওয়া নারীর জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন বিপন্ন করলেন মধ্য বয়সী আবুল কালাম। ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোবিন্দপুরের স্বামী পরিত্যক্ত এক নারী আত্মহত্যা করার জন্য কুমার নদের সাদাব্রীজ থেকে লাফ দেন। তাকে বাঁচাতে মধ্য বয়সী আবুল কালাম নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নারীকে উদ্ধার করলেও নিজে পানির স্রোতে ভেসে যান। গভীর রাত অবধি তার লাশের হদিস মেলেনি। নিখোঁজ আবুল কালাম (৬৫) আলমডাঙ্গা পৌর শহরের কাছারি বাজারের মৃত আব্দুল মজিদ মিয়ার ছেলে।


জানা গেছে, আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার গোবিন্দপুর গ্রামের হাশোর আলীর মেয়ে স্বামী পরিত্যক্ত সুমি খাতুন (৩২)। তিনি গতকাল সন্ধ্যায় আত্মহত্যা করতে সাদাব্রীজ থেকে কুমার নদে লাফ দেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ তাকে বাঁচাতে চেষ্টা না করলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত মধ্যবয়স্ক আবুল কালাম পানিতে লাফ দেন। এক পর্যায়ে সুমিকে জীবন্ত উদ্ধার করতে পারলে নিজে জীবন নিয়ে ডাঙ্গায় উঠতে পারেন নি। নদের প্রচন্ড স্রোতের তোড়ে হারিয়ে যান। এলাকাবাসীসহ আলমডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম গভীর রাত অবধি চেষ্টা করলেও লাশের সন্ধ্যান পাননি।

নিখোঁজ আবুল কালাম এক সময় ব্যবসা করতেন। ব্যবসায় সুবিধা করতে না পারায় বেশ কিছুদিন আগে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানা যায়। আবুল কালামের দুই ছেলে ১ মেয়ে রয়েছে।

অন্যদিকে, সুমি খাতুনের ইতোপূর্বে পৌর এলাকার বাবুপাড়ার মামুনের সাথে বিয়ে হয়েছিল। মামুনের সংসারে সুমির একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মামুনের সাথে বিচ্ছেদের কয়েক বছর পর সম্প্রতি সুমি রাসেল নামের আরেক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন। সুমির মা জানান, রাসেল গত দুমাস আগে তালাক দিয়েছেন।


প্রতিবেশিরা জানান, রাসেলের সাথে কথা কাটাকাটির পর সুমি আত্মহত্যা করতে কুমার নদে ঝাঁপ দেন।


প্রত্যক্ষদর্শি শিবলী জানান, বৃহস্পতিবার আলমডাঙ্গার সপ্তাহিক বাজার। কুমার নদের সাদাব্রিজের উপর বাজারের অনেক মানুষ বসে থাকে। কুমার নদ কানায় কানায় পানিতে পরিপূর্ণ । নদীতে স্রোত। সন্ধ্যা ৬ টার দিকে সুমি খাতুন সাদা ব্রিজের উপর থেকে নদে লাফ দেন। এসময় অনেকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলেও কেউ বাঁচাতে চেষ্টা করেনি। আবুল কালাম দৌড়ে এসে নদীতে লাফ দেন। ব্রিজের সাথে বেশ কয়েকটি দড়ি বাঁধা আছে। সুমিকে ধরে নিয়ে প্রায় ২০ মিনিট দড়ির সাথে ঝুলে ছিলেন আবু কালাম। এক পর্যায়েতিনি ক্লান্ত হয়ে যান। রকিবুল নামের এক ব্যবসায়ী নদীতে লাফ দিয়ে সুমিকে উপরে উঠানোর সহযোগিতা করেন। আবুল কালাম সাঁতার কেটে কিনারায় উঠতে গিয়ে পানির প্রবল স্রোতে হারিয়ে যান। চোখের সামনে আলবু কালামকে ডুবে যেতে দেখলেও কেউ উদ্ধার করতে যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।


অভিযোগকারিরা জানান, আবুল কালাম পানিতে ডুবে গেলে আলমডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসকে সংবাদ দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উপস্থিত হলেও সাথে সাথে পানিতে নামেন নি। নদীর কিনারায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দৃশ্য দেখেছেন।


ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যায়। স্থানীয়দের সাথে নিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করেছি। এক পর্যায়ে উর্দ্ধতন কর্মকর্তার পরামর্শে খুলনা থেকে ডুবুরি পাঠাতে অনুরোধ করি। রাতেই লাশ উদ্ধার করতে নদীতে অভিযান শুরু হবে।


সংবাদ পেয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা দাস ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি নিখুঁত ব্যক্তির দ্রæত খোঁজ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram