নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রস্তুতিতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের বৈঠক আজ
ড. মুহাম্মদ ইউনূস, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, আজ আবারও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। দুপুর ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনার মূল বিষয় হবে "রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচন ইস্যুতে" একটি রোডম্যাপ তৈরি করে তা জনগণের সামনে উপস্থাপন করার সময়সীমা নির্ধারণ। বৈঠকের পর, অন্তর্বর্তী সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করবে। রোডম্যাপ তৈরি হলে তা জনগণের সামনে পেশ করবেন প্রধান উপদেষ্টা।
আজকের বৈঠকটি হবে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়। ধারণা করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলীয় জোটের কেউ বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন না, যেমনটা গত ৮ আগস্ট ও ২৯ আগস্টের বৈঠকেও দেখা গেছে। আজকের বৈঠকে অংশ নেবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ (নূর), গণঅধিকার পরিষদ (ড. রেজা কিবরিয়া), ১২ দলীয় জোট, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, এবং আরও কয়েকটি দল।
পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার প্রক্রিয়া চালু রাখবে এবং তাদের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করবে। অন্যদিকে, এলডিপির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মূল্য যেন বিসর্জন না দেওয়া হয়, সেই বিষয়ে তিনি প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক আহমদ আবদুল কাইয়ুম বৈঠকের বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকার রাজনৈতিক নয়, ছাত্র-জনতার ম্যান্ডেটে গঠিত। তিনি জানান, তাদের দল আজকের বৈঠকে অংশ নিচ্ছে না। অন্যদিকে, আহমদ আবদুল কাইয়ুম জানান, তাদের দলের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের নেতৃত্বে আজকের বৈঠকে অংশ নেবেন এবং সমসাময়িক বিষয়ে আলোচনা করবেন।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, বর্তমান সরকারকে প্রথমে পুলিশ বিভাগকে কার্যকর করতে হবে এবং পরে আইন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোর সংস্কার করতে হবে।
এদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান সরকার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংস্কার এবং নির্বাচনের প্রসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ব্যাপকভিত্তিক সংলাপ শুরু করবে। সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর ব্যাপারে বিএনপির পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
জানা গেছে, আগামী দু-তিন সপ্তাহের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার একটি রোডম্যাপ জনগণের সামনে পেশ করতে পারে। রোডম্যাপ ঘোষণার আগে সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করবে। আলোচনার পর নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংস্কার শুরু করবে সরকার। তারপরই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে।