আলমডাঙ্গার বেলগাছী ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে অনাস্থা
আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছী ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান চঞ্চলের বিরুদ্ধে সকল সদস্য (মেম্বর) অনাস্থা জানিয়েছেন। অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে অনাস্থা প্রকাশ করে জেলা প্রশাসকের নিকট ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। তার অনুলিপির কপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। এক যোগে সকল সদস্যের পদত্যাগে ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর বেলগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন মাহমুদুল হাসান চঞ্চল। তিনি একই সাথে বেলগাছি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। ইউপি চেয়ারম্যান রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচনের পর থেকে ইউপি সদস্যদের হুমকী-ধামকী ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছেন। মেম্বারদের জোর করে ইউনিয়ন পরিষদ অংশের ৩২ মাসের বকেয়া বেতন না দিয়ে বেতন রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে কয়েকজন মেম্বারকে পরিষদ থেকে বের করে দেয়।
তিনি সকল ওয়ার্ড সদস্যের বেতন ভাতা না দিয়ে নিজের সম্মানী ভাতা আগস্ট-২৪ সাল পর্যন্ত নিজ ক্ষমতাবলে উত্তোলন করে নেন। ইতোপূর্বে বেলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের আয়-ব্যয়ের হিসাব মাসিক সভায় উপস্থাপন না করে মেম্বারদের ভয় দেখিয়ে মাসিক সভায় স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এছাড়া তিনি দলীয় প্রভাব খাটিয়ে গৃহীত প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন না করে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেন। হতদরিদ্র কর্মসূচির ৬৪ জন লেবারের সিম ৬৪ জন লেবারের কাছে থাকার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান তা লেবারদের দেন নি।
চেয়ারম্যান নিজের আত্মীয়-স্বজন ও মিজের কর্মীদের নামে সিমগুলো উঠিয়ে নিজের আয়ত্বে রাখেন এবং নিজেই টাকা উত্তোলন করে নেন। কিন্তু সেই টাকা কাউকে না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেন। বেলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের রিপিয়ারিং কাজের জন্য বাজেট সরকাকরি ভাবে অনুমদিত ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ আসে। কিন্তু চেয়ারম্যান নিজেই পিআইসি হয়ে নামমাত্র রং কর। ইউনিয়ন পরিষদের উপরে সিরামিক টালি দেওয়ার কথা থাকলেও সে সেরামিক টালি না দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেন। বেলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের ৩ বছরের ট্যাক্স আনুমানিক ২৪ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা আদায় হয়। সচিবের কাছে মেম্বাররা হিসাব চাইলে হিসাব দেয় না, এই বিষয়টি সম্পূর্ণ চেয়ারম্যান জানেন বলে জানিয়ে দেন।
আমরা চেয়ারম্যানের কাছে উক্ত বিষয়ে জানতে গেলে চেয়ারম্যান ক্ষমতার বলে কোন হিসাব না দিয়ে আমাদের বেধড়ক মারধর করে ও গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে টিউবওয়েল বাবদ সচিবের কাছে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা জমা দেওয়া হয়। এই টাকা দিয়ে সাবর্মাসিবুল টিউবওয়েল ও অগভীর নলকূপ দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেয় নি। সম্পূর্ণ টাকা চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদ গ্রাম আদালতে যে বিচার সালিশ করা হয়, যেমন- তালাক, পারিবারিক ও অন্যান্য বিষয়ে মীমাংসার পরে বাদী ও বিবাদীরা দেনমোহর ও খোরপোষ বাবদ যে টাকা দেয় তাহা চেয়ারম্যান সাহেব নিজে আত্মসাৎ করেন। তাঁর এরুপ দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের কারণে মেম্বররা অনাস্থা জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
একই সঙ্গে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন।