আওয়ামীলীগে যোগদান করায় হামলার শিকার আলমডাঙ্গার সাকিব মিয়া: ভয়ে এলাকা ছাড়লেন

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কারণে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়েছেন সাকিব মিয়া। একদল সন্ত্রাসী তাকে মারধর করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করেছে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেন। এরপর ৬ আগস্ট সাকিব মিয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। ৭ আগস্ট কালিদাসপুর গ্রামের ৫০-৬০ জনের একটি দল তার ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে এবং তার বাড়িতে ভাঙচুর চালায়।
সাকিব মিয়া প্রথমে নির্দলীয় অবস্থানে ছিলেন। কিন্তু তার পরিবার পূর্বেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছিল। তার পিতা মো. আশরাফুল ইসলাম পিন্টু পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে সাদা ব্রিজের মাথায় আলমডাঙ্গা বড় ক্যানেলের পাড়ে জমি লিজ নিয়ে ব্যবসা করতেন। তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জায়গার প্রতি লালসা প্রকাশ করে এবং চাঁদা আদায়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করত। পরবর্তীতে প্রতিহিংসার জেরে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে বিনা নোটিশে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়।

পরিবারের আর্থিক অনটন কাটাতে ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে সাকিব মিয়া আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি নয়ন ও কলেজ ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হুসাইন বাদশার মাধ্যমে তিনি ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দারের অনুমতি নিয়ে তিনি পূর্বের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জায়গায় পুনরায় ব্যবসা শুরু করেন এবং নির্বাচনে ছেলুন জোয়ার্দ্দারের পক্ষে কাজ করেন। নির্বাচনে জয়লাভের পর তিনি ছাত্রলীগের সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন।
তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ৭ আগস্ট সকালে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে কালিদাসপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ার সামসুল হকের ছেলে জাফর আলী, হাসেম শেখের ছেলে কুরবান আলী, বারেক আলীর বিপুল, ইলিয়াস আলীর ছেলে আইয়ুব আলীর নেতৃত্বে ৫০-৬০ জনের একটি দল তার বাড়িতে হামলা চালায়। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় রেখে তার বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে। বিকেলে আবারও তারা বাড়িতে এসে খুঁজে না পেয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
৮ আগস্ট সাকিব মিয়া থানায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। শুরুতে পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকৃতি জানালেও পরে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) গ্রহণ করে। তবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এর মধ্যেই ৯ আগস্ট তার বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতারের জন্য কয়েক দফা বাড়িতে তল্লাশি চালায়। রাজনৈতিক হুমকি ও গ্রেফতারের আতঙ্কে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। বর্তমানে সাকিব মিয়ার দোকানের জমি প্রতিপক্ষরা তারকাঁটার বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছে। এ ঘটনায় সাকিব মিয়া ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন।