বলরামপুরে অবৈধ সেচপাম্পের নীচে ঝুলে থাকা সংযোগ তারের স্পৃষ্টে হয়ে এক দিনমুজুরের মৃত্যু
আলমডাঙ্গার বলরামপুরে অবৈধ সেচপাম্পের বৈদ্যুতিক লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হয়ে বজলুর রহমান নামের এক দিনমুজুরের মৃত্যু হয়েছে। ২ আগস্ট শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলার বলরামপুর গ্রামের ফজোখালীর মাঠে ধান লাগানোর জন্য জমি প্রস্তুতের কাজে গিয়ে নীচে ঝুলতে থাকা সেচপাম্পের বৈদ্যুতিক তারে স্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন তিনি।
বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত দিনমুজুর বজলুর রহমান (৪০) আলমডাঙ্গা উপজেলার বলরামপুর গ্রামের মন্ডলপাড়ার ছানোয়ার হোসেনের ছেলে। নিহত বজলুর রহমানের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলেটি ৬ষ্ঠ শ্রেনিতে পড়ালেখা করে। মেয়েটি বিবাহিত।
অবৈধ সেচপাম্পের মালিক গ্রামের মৃত বোরহান উদ্দিন সাজ্জাদ হোসেন। তার প্রায় এক ডজন সেচপাম্প রয়েছে যার অধিকাংশ অবৈধ বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রত্যক্ষদর্শিরা জানান, দিনমজুর বজলুর রহমান দিন শুক্রবার সকালে গ্রামের মৃত ফরিদ মন্ডলের ছেলে বুদো মন্ডলের জমিতে ধান লাগানোর জন্য জমির আঁইল কাটার কাজ করতে যান। জমির পাশেই বোরহান উদ্দিনের ছেলে সাজ্জাদ হোসেনর সেচ পাম্প রয়েছে। সেচ পাম্পের জন্য অনেক দূর থেকে অবৈধভাবে বৈদ্যুতিক তার টেনে নিয়ে আসা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে বৈদ্যুতিক তার অনেক নীচু হয়ে মাটি ছুঁই ছুঁই অবস্থায় ছিল। জমির আইল কাটার এক পর্যায়ে অসাবধানতাবশত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।
বজলুর রহমানের মৃত্যুর সংবাদ শুনে পরিবারসহ আত্মীয়স্বজনদের কান্নায় বলরামপুর গ্রামের আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠে। গ্রামের লোকজন শেষ বারের মত বজলুর রহমানের মরাদেহ একবার দেখার জন্য বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছুটে যায় তার বাড়িতে। সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্ত হয়ে মরাদেহ বাড়িতে আসে। রাতেই জানাযার নামাজ শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে, দু:খজনক এ মৃতুর পর সাজ্জাদ হোসেনের অবৈধ সেচপাম্পের রমরমা ব্যবসার বিষয়টি এলাকায় আলোচনার ঝড় তুলেছে। এলাকাসূত্রে জানা গেছে, সাজ্জাদ হোসেনের প্রায় এক ডজন সেচপাম্প রয়েছে যার অধিকাংশ অবৈধ। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও ওজোপাডিকোর কতিপয় স্টাফকে ম্যানেজ করে সাজ্জাদ হোসেন দীর্ঘ বছর ধরে অবৈধভাবে সেচপাম্প ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।
এবিষয়ে সাজ্জাদ হোসেন জানান, তার ৫ টি লাইসেন্স রয়েছে। তিনি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও ওজোপাডিকোর প্রায় এক ডজন সেচ পাম্প চালান। বিদ্যুৎ অফিস তাকে অনুমতি নিয়েই তো সেচপাম্প দিয়েছি।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ গনি মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বজলুর রহমান নামের দিনমজুরের বিদ্যুৎ স্পুষ্টে মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে। মরাদেহের সুরতাহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।