আলমডাঙ্গার বক্সিপুর গ্রামের ইমরাম হত্যা মামলার আসামি ঝন্টু গ্রেফতার
মামলা দায়েরের মাত্র ৪ দিনের মধ্যে আলমডাঙ্গার বক্সিপুর গ্রামের ইমরাম হত্যা মামলার একমাত্র আসামি ঝন্টুকে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার ২৬ জুলাই ভোর রাতে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতিকালে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম নিশ্চিন্তপুর থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারের পর শনিবার তাকে সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে সোপর্দ করলে তিনি ১৬৪ ধারায় বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট নিজেকে হত্যাকান্ডে সম্পৃক্ত করে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।
গ্রেফতারের পর তার নিকট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত হেসো।
হত্যাকারী মাদক সেবক ঝন্টু আলী(৪০) উপজেলার বকসিপুর গ্রামের মোখছার আলীর ছেলে।
গ্রামসূত্রে জানা যায়, বক্সীপুর গ্রামের মিনারুলের ছেলে ইমরান (২৫) ও কবীর আলীর ছেলে ইব্রাহিম(২৫) মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের সক্রীয় সদস্য। তারা মাদকসেবীও। ইমরান, ইব্রাহিম ও ঝন্টু একসাথে মাদক সেবন করতো।
জানা যায়, গত ২২ জুলাই ঘটনার দিন ইব্রাহিম ও ইমরান দুজন মিলে ঝন্টুর গোয়াল ঘরে ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট সেবন করছিলেন। এসময় ঝন্টু বাড়িতে এসে তাদেরকে ট্যাপেন্টাডল সেবন করতে দেখে রাগারাগি করেন। তাদের মধ্যে কথাকাটাটি শুরু হয়। ঝন্টু তার গোয়ালঘর থেকে একটি হেসো নিয়ে ইমরান ও ইব্রাহিমকে ভয় দেখিয়ে বাড়ির বাইরে নিয়ে যায়। বাড়ির বাইরে গেলে ইমরান ও ইব্রাহিম বাঁশ দিয়ে ঝন্টুকে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে ঝন্টু হাতে থাকা হেসো দিয়ে ইমরানের বুকে কোপ বসিয়ে দেয়। এরপর ইব্রাহিমকে তাড়া করেন। রক্তাক্ত জখম ইমরান পাশের কালাচাঁদের ঘরের পিঁড়িতে গিয়ে চিৎকার করতে থাকে। প্রতিবেশিরা ইমরানকে সেখান থেকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হারদী নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে, ওই রাতেই ঝন্টু গ্রামের একটি পান বোরজে পালিয়ে ছিলেন। সকালে উঠে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে পালিয়ে ছিলেন। সেখান থেকে ভারতে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ২৭ জুলাই দিনের বেলা একমাত্র ছেলেকে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া কথা ছিল ঝন্টুর। এরই মাঝে গ্রেফতার হন তিনি।
২৩ জুলাই ইমরানের পিতা মিনারুল বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ গনি মিয়া জানান, ঘটনা পর থেকে ঝন্টুকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করেছে। সে আলমডাঙ্গা থেকে পালিয়ে ঝিনাইদাহ জেলার মহেশপুর উপজেলার নিশ্চিন্ত গ্রামের তার এক আত্মীয়র বাড়ি পালিয়ে ছিল। পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে। তার নিকট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যার কাজে ব্যবহৃত হাসুয়া। ঝন্টু ১৬৪ ধারায় বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট নিজেকে হত্যাকান্ডে সম্পৃক্ত করে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।