পরকীয়া প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা কারী প্রবাসির স্ত্রীর প্রেমিক সবুর গ্রেফতার
আলমডাঙ্গায় পরকীয়া প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে প্রবাসির স্ত্রীর আত্মহত্যা মামলার আসামি প্রেমিক প্রবর সবুর আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া গ্রাম থেকে পলাতক অবস্থায় আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া মামলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিজ্ঞ আদালতের কাছে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ।
গত ৮ জুলাই রাত আড়াইটার দিকে তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামে অবস্থিত খালার বাড়ি থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার সবুর আলী আলমডাঙ্গার হারদী ইউনিয়নের বামানগর গ্রামের আজিবর রহমানের ছেলে।
২৮ মে দুপুরে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ পৌর সভা এলাকার এক্সচেঞ্জপাড়ার ভাড়া বাসা থেকে প্রবাসীর স্ত্রীর মরাদেহ উদ্ধার করে। জানা গেছে, আলমডাঙ্গার বেলগাছি গ্রামের সাইদুর রহমানের মেয়ে রেশমা খাতুনের সাথে ১৪ বছর আগে চুয়াডাঙ্গার দৌলতদিয়াড়ের শিমুল সর্দ্দারের বিয়ে হয়। এই দম্পতির পঞ্চম শ্রেণিতে পড়য়া সিমি নামের একটি মেয়ে রয়েছে। স্ত্রী এবং মেয়েকে বাড়িতে রেখে শিমুল সর্দ্দার প্রায় ৭ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। এরই মধ্যে বেলগাছি গ্রামে এক বিয়ে বাড়িতে আলমডাঙ্গার বামানগর গ্রামের সবুর নামের এক ভিডিও ম্যানের সাথে রেশমার পরিচয় হয়।
এরপর থেকে তাদের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক চলতে থাকে। সম্পর্ক গভীর হলে রেশমা বিদেশ থেকে তার স্বামীর পাঠানো টাকায় প্রেমিক সবুরকে সৌদিতে পাঠায়। এক বছর সৌদিতে অবস্থান করেও তেমন সুবিধা করতে না পেরে সবুর সৌদি থেকে দেশে ফিরে আবারও ভিডিও'র কাজে যোগ দেয়। দামি ভিডিও ক্যামেরা কেনার জন্য টাকা চায় রেশমার নিকট। পরকীয়া প্রেমিকের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখতে রেশমা ৬ মাস আগে মেয়ের স্কুলে পড়ানোর অজুহাতে আলমডাঙ্গার পৌর এলাকার ৭ং ওয়ার্ডে এক্সচেঞ্জপাড়ার এক প্রবাসীর বাড়ি ভাড়া নেয় ওই বাড়ির নাম মোল্লা বাড়ি।
রেশমার বোনের মেয়ে শিমলা জানায়, সবুর রেশমার ভাড়া বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করত। তারা বিয়ে করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে সবুর রাজি থাকলেও তার বাড়ির লোকজন রাজি ছিল না।
শিমলা আরও জানায়, সম্প্রতি সবুর একটি দামি ক্যামেরা কিনতে রেশমার কাছে উপর্যুপরি টাকা দাবি করে আসছিল। এতে দু'জনের মধ্যে দ্ব›দ্ব দেখা দেয়. দ্বন্দ্বের জেরে ২৮ মে দুপুরে রেশমা প্রেমিক সবুরকে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিতে থাকে। সবুর দ্রæত ভাড়া বাড়ির পাঁচতলায় উঠে দরজা খোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে বাড়ির ছাদে উঠে বারান্দার গ্রীল ভেঙে ভেতরে ঢুকে গলার ফাঁস কেটে রেশমাকে নিচে নামায়। রেশমার মোবাইলফোন থেকে ভিডিও ডিলিট করেন। এরপর নিজের দোষ ঢাকতে রেশমার মৃতদেহ ঘরে রেখেই সবুর পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় রেশমার বাপ থানায় প্রাথমিকভাবে অপমৃত্যু দায়ের করেন।