আলমডাঙ্গায় বন্ধুর মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে ট্রাক্টরের চাকায় ঝরল কিশোরের প্রাণ
আলমডাঙ্গার খাসকররায় বন্ধুকে পিছনে নিয়ে তার মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে ট্রাক্টরের চাকায় ঝরল মোটরসাইকেল চালক কিশোর মুন্না হোসেনের প্রাণ। গুরুতর আহত হয়েছেন মোটরসাইকলের মালিক পেছনে বসে থাকা বন্ধু সাজিদ হোসেন। শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা বাজারপাড়ার বড় মসজিদ সংলগ্ন মরহুম আলারদ্দিনের বাড়ির সামনে ওই দূর্ঘটনা ঘটে।
মুন্না ও সাজিদ মোটরসাইকেল যোগে খাসকররা বাজার থেকে রায়সায় ফিরছিল। খাসকররা বাজারপাড়া বড় মসজিদ পার হয়ে মরহুম আলারদ্দিনের বাড়ির সামনে পৌছলে ইটভর্তি ট্রাক্টর পেছন দিক থেকে ধাক্কা দেয়। এতে মুন্না সড়কের উপর ছিটকে পড়লে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
নিহত মুন্না খাসকররা ইউনিয়নের রায়সা গ্রামের রাইচ মিল ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দীনের ছেলে ও আহত সাজিদ একই গ্রামের ইতালি প্রবাসী শরিফুল ইসলামের ছেলে। মুন্না চারভাই বোনের ছোট। মুন্না খাসকররা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনী লেখাপড়া করতে করতে ছেড়ে দিয়েছে। বর্তমানে রাইচ মিল দেখাশোনা করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাজিদের মোটরসাইকেল যোগে তারা দুই বন্ধু খাসকররা বাজারে আসে। বাজারে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার সময় মুন্না মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল। তারা মরহুম আলারদ্দিনের বাড়ির সামনে পৌছালে পিছন থেকে দশমাইলের আরএম২৪ ইট ভাটার একটি ইট বোঝাই ট্রাক্টর ধাক্কা দেয়। ট্রাক্টরের ধাক্কায় মুন্না মোটরসাইকেলসহ রাস্তার উপরে পড়ে ও সাজিদ ছিটকে গিয়ে পড়ে পাশের পুকুরে। ট্রাক্টরের পিছনের চাকা মুন্নার মাথার উপর দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই মুন্না মারা যায়। অবস্থা বেগতিক বুঝে ট্রাক্টর ফেলেই চালক পালিয়ে যায়।
আহত সাজিদ জানায়, মুন্না ও সে এক মোটরসাইকেল যোগে খাসকররা বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিল। তার নিজের মোটরসাইকেল হলেও চালাচ্ছিল মুন্না। খাসকররা বাজারপাড়ার বড় মসজিদ পার হয়ে মরহুম আলারদ্দিনের বাড়ির সামনে পৌছালে পিছন থেকে আসা একটি দ্রæতগতির ট্রাক্টর মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এসময় মোটরসাইকেলটি ট্রাক্টরের পিছনের অংশে লেগে চালক মুন্না ছিটকে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মুন্না মারা যায়। মোটরসাইকেল থেকে সাজিদ ছিটকে রাস্তার ডানপাশের পুকুরে পড়ে আহত হয়। লোকজন আসার আগেই সুযোগ বুজে পালিয়ে যায় ট্রাক্টর চালক।
এদিকে, মুন্নার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে নিজ এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। ছেলেকে হারিয়ে শোকে বাকরুদ্ধ বাবা-মা। স্বজনদের কান্নায় পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ গনি মিয়া জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে মুন্নার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পরই ট্রাক্টরটি ফেলে রেখে চালক পালিয়েছে। ট্রাক্টরটি জব্দ করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।