১৫ দিনের ব্যবধানে আলমডাঙ্গায় সোনালী ব্যাংক থেকে দুই গ্রাহকের টাকা হাতিয়েছে প্রতারকেরা
মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে সোনালী ব্যাংক আলমডাঙ্গা শাখায় একই ঘটনার পূণরাবৃতি ঘটল। সোনালী ব্যাংকের এই কর্মব্যস্ত শাখায় ঘাপটি মেরে থাকা প্রতারকচক্র দুই গ্রাহকের টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে পূর্বের মত নিরাপদে সটকে পড়েছে। গ্রাহকের নিরাপত্তার পদক্ষেপ নিতে অনীহায় প্রশ্নবিদ্ধ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা।
জানা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদী গ্রামের মলয় কুমার আলমডাঙ্গা রেজিষ্ট্রি অফিসের কিছু দলিল লেখকের জমি রেজিষ্টির টাকার চালান সোনালী ব্যাংকে জমা করে থাকেন। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টায় তিনি সোনালী ব্যাংক আলমডাঙ্গা শাখার ক্যাশ কাউন্টারে টাকা জমা দিয়ে দাড়িয়ে ছিলেন। এমতাবস্থায়, তার মোবাইলফেনে কল আসলে তিনি কথা বলতে ছিলেন। কিছুক্ষণ পরে দেখেন টাকা আর নাই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ঘটনাটি ব্যাংকের কর্মকর্তাকে জানান। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
একই সময়ে মোশারফ হোসেন নামের আরেক ব্যক্তি একই ব্যাংকে যান আলমডাঙ্গার পৃথক আরেকটি ব্যাংকের ক্যাশ কালেকশানে। ক্যাশ কাউন্টার থেকে তার ৫ হাজার ৬ শ টাকা প্রতারকচক্র হাতিয়ে নিয়েছে।
সোনালী ব্যাংক আলমডাঙ্গা শাখার ম্যানেজার এইচ এম আব্দুল আওয়াল জানান, ভুক্তভোগী মলয় কুমারকে থানায় জিডি করতে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি এখনও পর্যন্ত থানায় যায়ন নি। এমন আচরণে তাকেও আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। সিসিটিভির ফুটেজ চেক করেছি। চোর সনাত্বক করার চেষ্টা চলছে।
ব্যাংকের পক্ষ থেকে থানায় কেন জানানো হয়নি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব সিকিউরিটি ব্যবস্থা আনসার সদস্য আছে এটার মাধ্যমে আমরা ব্যবস্থা নিব।
এদিকে, ঈদের পূর্বে আলমডাঙ্গা সোনালী বাংকে টাকা তুলতে গিয়ে নারী প্রতারক চক্রের কবলে পড়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন আলমডাঙ্গা পাইকপাড়ার আলো খাতুন নামের এক নারী। গত ৯ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, আলমডাঙ্গা পাইকপাড়া গ্রামের প্রবাসী আলাউদ্দিনের মেয়ে আলো খাতুন সোনালী ব্যাংক আলমডাঙ্গা শাখা থেকে ৩৫ হাজার টাকা উত্তোলন করে। সে সময় ২৯ হাজার টাকা ভ্যানিটি ব্যাগে রেখে বাকী ৬ হাজার টাকা খুচরা নিতে ক্যাশ কাউন্টারে যান। কাউন্টার থেকে খুচরা টাকা নিয়ে পুণরায় ভ্যানিটি ব্যাগে রেখে ব্যাংক ভবন থেকে নেমে যান। সিড়ি দিয়ে নামার সময় ভ্যানিটি ব্যাগ হাতড়ে দেখেন ভ্যাগে শুধুমাত্র খুচরা ৬ হাজার টাকা রয়েছে। বাকী ২৯ হাজার টাকা গায়েব।
এমতাবস্থায়, আলো খাতুন দ্রæত ব্যাংকে ফিরে গিয়ে ম্যানেজারকে সব খুলে জানান। পরে ব্যাংকের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, টাকা খুচরা করার সময় ৫ নারী প্রতারকের সঙ্ঘবদ্ধ চক্র আলো খাতুনকে ঘিরে রেখেছিল। ধারণা করা হচ্ছে -- আলো খাতুন ক্যাশ কাউন্টার থেকে টাকা গুনে নেওয়ার সময় প্রতারকচক্র ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে টাকা সরিয়ে নিয়েছে।
মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে সোনালী ব্যাঙ্কের মত গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে একই ঘটনার পূণরাবৃত্তি গ্রাহক সাধারণের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। গুরুত্বপূর্ণ ওই ব্যাঙ্ক শাখার কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীলতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।