আলমডাঙ্গায় প্রতিবন্ধীর যাতায়াতের বন্ধ করে দিয়েছেন বিজিবি সদস্য সিরাজুল ইসলাম
আলমডাঙ্গায় প্রতিবন্ধীর পরিবারসহ দুটি পরিবারের যাতায়াতের পথ প্রাচীর উঠিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন বিজিবি সদস্য সিরাজুল ইসলাম। একমাত্র যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেওয়ায় গত ৮ দিন ধরে চরম দুর্ভোগের শিকার পরিবার দুটির। এ ঘটনা আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার ৬ নং ওয়ার্ড গোবিন্দপুর গ্রামের মন্ডলপাড়ার।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গার গোবিন্দপুর গ্রামের মন্ডলপাড়ার প্রতিবন্ধী কোরবান আলী কবিরাজ দীর্ঘ ৩৫ বছর আগে জমি কিনে বাড়ি করেন। তখন ওই এলাকায় আর কোন বাড়ি ছিল না। পরবর্তীতে প্রতিবন্ধী কোরবান আলীর অনুরোধে পাশ্ববর্তী জমির মালিক উম্বাদ আলীর ছেলে রেজাউল হক তাদের জমির মাঝ দিয়ে চলাচলের রাস্তা তৈরি করে দেন। কয়েক বছর আগে সিরাজুল ইসলাম নামের এক বিজিবি সদস্য প্রতিবন্ধীর চলাচলের রাস্তার একপাশের জমি ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণ করেন। তার কিছুদিন পর বাড়ির ফিছনের জমি টুকু ক্রয় করে। গত ৮ দিন আগে বিজিবি সদস্য সিরাজুল ইসলাম প্রতিবন্ধী কোরবান আলীর যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা প্রাচীর উঠিয়ে বন্ধ করে দেন। পথ বন্ধ করে দেওয়ায় ঘরবন্দি হয়ে পড়েন কুরবান আলীর পরিবার।
প্রতিবন্ধী কুরবান আলী কবিরাজ জানান, তার পরিবারের উপার্জন করার কেউ নেই। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় ভ্যানে চলাফেরা করেন। যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেওয়ায় তার পরিবারটি গত আট দিন ধরে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ৮ দিন ধরে বাড়িতে বন্দি অবস্থায় রয়েছেন। বিজিবি সদস্য তার জমি কেনার অনেক আগেই ওই জমির মালিক পথটি তৈরী করে দিয়েছিলেন তাদের যাওয়া আসার জন্য। এখন সেই পথটি বিজিবি সদস্য বন্ধ করে দিয়েছেন।
কোন অজুহাতে প্রতিবন্ধীর পরিবারের যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন সিরাজুল ইসলাম? এ প্রশ্নের জবাবে প্রতিবন্ধী কোরবান আলী জানান," সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, এটি তার কেনা জমি। তাই জমি দিয়ে যেতে দিবে না। প্রতিবন্ধী জমি বিক্রি করে দিয়ে এখান থেকে চলে যেতে বলেছেন।"
জমির পূর্বের মালিক মালিক রেজাউল হক জানান, এখানে আমার পিতা ও মাতার ৪৬ শতক জমি আছে। আমরা ৪৫ শতক বিক্রয় করেছি। এখনো ১ শতক জমি অবশিষ্ট আছে। যেটা পথ হিসেবে দিয়েছিলাম। বিজিবি সদস্য সিরাজুল ইসলাম যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দখল করে নিয়ে জঘন্য অপরাধ করেছেন।
পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড গোবিন্দপুর গ্রামের কাউন্সিলর ডালিম হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই পথ দিয়ে দুটি পরিবার যাওয়া আসা করছেন। গত ১৬ বছর আগে কুরবান আলী উঠানে পড়ে গিয়ে প্রতিবন্ধি হয়ে যান। তিনি একটি ভ্যানে করে চলাফেরা করে। কয়েকদিন আগে বিজিবি সদস্য ওই দুটি পরিবারের যাওয়া আসা পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রতিবন্ধি কুরবান আলীর কোন ছেলে নেই। সে যা উপার্জন করে তা দিয়েই সংসার চলে।
এবিষয়ে বিজিবি সদস্য সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে গিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তিনি তার ছেলে মাধ্যমে জানান তিনি ঘুমাচ্ছে। এখন কথা বলা যাবে না।