দুবাই গিয়ে খুন হওয়া আলমডাঙ্গা কুমারীর কাজলী খাতুনের লাশ নিজ গ্রামে দাফন সম্পন্ন
উল্লেখ্য, গত ১৯ এপ্রিল শুক্রবার সকালে দুবাই কোম্পানির সুপার ভাইজারের সাথে বাড়িতে বেতনের টাকা পাঠানো কথাকাটাকাটি হয়। এসময় সুপারভাইজার লুকমান ওরফে সাইকো মদের বোতল দিয়ে মাথা আঘাত করলে কাজলী মারা যায়। মারা যাওয়ার পর বাড়িতে মোবাইল করে কোম্পানিতে চাকুরীরত ঢাকার মেয়ে জানায় কাজলীকে মেরে ফেলেছে।
সুপারভাইজারের হাতে নিহত কাজলী খাতুন(২৫) আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের কুমারী গ্রামের তছের আলীর মেয়ে। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মেজো কাজলী। কাজলীর মরার সংবাদ পাওয়ার পরিবারের নেমে আসে শোকের ছায়া। কাজলীর মা ও বাবা মেয়ের শোকে পাগল প্রায়। কান্না করতে করতে মাঝে মাঝে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে মা ও বড় বোন।
জানাগেছে, কাজলীর পিতা ব্যাটারি চালিত পাখিভ্যান চালক। কাজলীরা চার ভাইবোন। পিতার অভাব অনাটনের সংসারের হাল ধরতে ছোট বোনকে সাথে নিয়ে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকুরী করতে যায়। কয়েক বছর কাজ করার পর হঠাৎ কোন এক মাধ্যমে দুবাই চলে যায় কাজলী। প্রায় সাড়ে তিন মাস পর বাড়িতে মোবাইল করে কাজলী জানায় আমি দুবাই চলে এসেছি। এখানে ভাল কাজ পেয়েছি। বেতনও ভাল দিচ্ছে। ছোট বোন ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকুরী করে। বড় বোন ও ছোট ভাই বাড়িতে মা বাবার সাথে থাকে। দুবাই থেকে ৬ মাস পর পরিবারের সাথে ঈদ করতে গত ৬ রমজান বাড়িতে আসে কাজলী। ঈদের আগে কোম্পানি থেকে ফোন করলে কাজলী ২৬ রমজান আবার দুবাই চলে যায়।
৬ মাস পর দুবাই থেকে ঈদ করার জন্য বাড়িতে আসে কাজলী। কিন্তু পরিবারের সাথে ঈদ না করেই আবার দুবাই চলে যেতে হয়। এমাসে বাড়িতে টাকা পাঠানোর কথা। কাজলী খাতুন সুপারভাইজারের নিকট বেতনের অনেক টাকা পাবে। সুপারভাইজারের সাথে টাকা নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় তাকে মেরে ফেলেছে। সুপারভাইজার লোকমান হোসেন ওরফে সাইকোর বাড়ি বাংলাদেশে। সুপারভাইজারের শ^শুর বাড়ি টাঙ্গাইল। তার বাড়ির কোন জেলা তা জানা যায়নি। তিনি আরও বলেন, তার মেয়ে কাজলী খাতুনকে যে সুপারভাইজার মেরে ফেলে তার বিচার চাই।
এবিষয়ে কুমারী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ পিন্টু বলেন, কাজলী খাতুনকে দুবাই তার কোম্পানির সুপারভাইজার মেরে ফেলেছে। সংবাদ পাওয়ার তার লাশ দেশে নিয়ে আসার জন্য দ্রæত সকল প্রকার আবেদন সম্পন্ন করা হয়। যার কারণে মাত্র ১১ দিনেই লাশ দেশে নিয়ে আসা হয়েছে। লাশ বাড়িতে নিয়ে আসার পর রাতেই জানাযার নামাজ শেষে গ্রামের কবস্থানে দাফন করা হয়েছে।