চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় অতিতীব্র তাপদাহ থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টি আশায় ইস্তিস্কার নামাজ আদায়
অতি তীব্র তাপদাহের সাথে কড়া রোদ আর অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গারসহ এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। তীব্র এই গরম থেকে পরিত্রাণের জন্য আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়ে আলমডাঙ্গা শহরের গোবিন্দপুর ঈদগাহ ময়দানে শনিবার(২৭ এপ্রিল) সকাল ৮ টায় ইস্তিস্কার নামাজ আদায় করেছেন এলাকাবাসী। আলমডাঙ্গার সব শ্রেণী-পেশার মানুষ এই নামাজে অংশ গ্রহণ করেন। নামাজ শেষে চলমান এই তীব্র তাপদাহ থেকে বাঁচতে ও বৃষ্টির জন্য বিশেষ মুনাজাত করা হয়। মুনাজাত পরিচালনা করেন সাবেক শিক্ষক মাওলানা ইছাহক আলী ।
একটানা প্রায় ১৬/১৭ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার অঞ্চল চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা। গত বছরের মত এ বছরও চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গায় চলছে দাবদাহ। ২৬ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৭ ও ২৭ এপ্রিল ৪২.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা -আলমডাঙ্গা অনলপ্রবাহের জনপদে পরিণত হয়েছে। সেই সাথে দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি নেই। আলমডাঙ্গা এলাকার টিউবয়েলেও ঠিকমত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পানির স্থর অনেক নিচে নেমে গেছে। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। দীর্ঘ একটানা দাবদহে মানুষসহ প্রাণিকুলের ওষ্ঠাগতপ্রাণ। বৃষ্টির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে চারদিকে। জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলায় প্রায় ১২ হাজার ৫ শ ৯০ হেক্টর জমির বোরো ধানসহ ফসলি জমি শুকিয়ে গেছে। এবছরের শুরু থেকেই গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রজেক্টের ইরিগেশন খালে পানি দেওয়া হয়নি। ফাঁরাক্কার ছোবলে শস্য শ্যামলা মাঠপ্রান্তর আজ বিবর্ণ। ফলে বোরো আবাদে ফলন বিপর্যয় ঘটার সমূহ শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আলমডাঙ্গা শহরের গোবিন্দপুর ঈদগাহ ময়দানে ইস্তিস্কার নামাজে উপস্থিত ছিলেন সাবেক পৌর চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম সবেদ আলী, সাবেক ব্যাংক সিরাজুল ইসলাম, মাদ্রাসাপাড়া জামে মসজিদের ঈমাম মাওলানা আনিসুজ্জামান, পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সাইফুর রহমান পিন্টু পৌর কাউন্সিলর আশরাফুল হক বাবু, ডালিম হোসেন, সাবেক কাউন্সিলর আব্দুর রাজ্জাক, শরিফুল ইসলাম, গোবিন্দপুর জামে মসজিদের পেশ ঈমাম জাকারিয়া হাবিব, হারদী মীর সামসুল ইসলাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান, পৌর ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি রেজাউল হক তবাসহ কয়েকশ মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন। গত শুক্রবার নামাজের জন্য পৌর এলাকার সকল মসজিদে মুসল্লিদের দাওয়াত দেওয়া হয়।
নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা জানান, "একটানা ১৬/১৭ দিন প্রচন্ড দাবদাহে স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। সকাল ১০ টা হতে না হতেই অনলপ্রবাহ শুরু হয়ে যায়। দুপুরে অনলবর্ষণ। বাইরে বের হওয়া যায় না। দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারণে শুকিয়ে যাচ্ছে মাঠঘাট কৃষিজমি। তীব্র খরায় ফলস উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন মানুষ।"