ভূমিহীন হতদরিদ্র বৃদ্ধার বাড়ি ভেঙ্গে প্রাচীর দিয়ে খাস জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ
সাত সকালে ভূমিহীন হতদরিদ্র বৃদ্ধার বাড়ি ভেঙ্গে প্রাচীর দিয়ে খাস জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অভয়নগরের প্রভাবশালী মিজানুর রহমান গং'র বিরুদ্ধে। অসহায় বৃদ্ধা শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। বৃদ্ধার মাথা গোজার ঠাঁই ভেঙ্গে দেওয়ার তাকে খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করতে হবে বলে গ্রামের অনেকে মনে করেছেন।
জানা যায়, আলমডাঙ্গার অভয়নগর গ্রামের মৃত সাধনের বৃদ্ধা স্ত্রী ফিরোজা খাতুন ইটভাটায় কাজ করেন। বসবাস করেন গ্রামের খাস জমিতে স্বামী শ্বশুরের ভিটেয়। একটা মাটির ছাপড়া ঘর, রান্না ঘর ও বাথরুম। এই ছিল বৃদ্ধার ঘর গেরস্থালী। কামাল নামের এক শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে কাটছিল দিন।
একই গ্রামের মিজানুর রহমানরা বেশ প্রভাবশালী। তাদের পর পর দুটি দোতলা বাড়ি রয়েছে। সার, ও কীট নাশকের ব্যবসা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মিজানুর গং-দের নজর পড়ে বৃদ্ধার বসবাসরত খাস জমির উপর। ২০১৫ সালে টাকার বিনিময়ে গোপনে তৎকালীন সহকারি কমিশনার ভ‚মি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হাত খাস জমির একাংশ নিজের নামে করে নেয়। দীর্ঘ কয়েক বছর পর গতকাল মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে বৃদ্ধার পরিবারকে হতবাক করে দিয়ে মিজানুর রহমান ও তার দুই ছেলে তরিকুল ও বকুলের নেতৃতে বৃদ্ধার ঘর বাড়ি ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। সাথে সাথে প্রাচীর তুলে দখল নেওয়া হয়েছে জমি।
মাথাগোজার ঠাইটুকু হারিয়ে ভূমিহীন নি:স্ব বৃদ্ধা এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। খোলা আকাশের নিচে জীবন যাপন করছে।
গ্রামসূত্রে জানা যায়, অনেক আগে থেকেই বৃদ্ধার বসবাসের খাস জমির উপর শৈন দৃষ্টি পড়ে ধনাঢ্য মিজানুরের। তিনি তিন লাখ টাকা ব্যয় করে নিজ বাড়ির সামনে অবস্থিত বৃদ্ধার বসবাসের খাস জমিটি গোপনে লিজ নেন।
বৃদ্ধার আরেক ছেলে ভ্যানচালক জামাল উদ্দীন জানান, "আমার বাপ দাদা ওই জমিতে বসবাস করেছেন। এখন আমরা করছি। মিজানুর ও তার ছেলেরা হঠাৎ মিস্ত্রি নিয়ে এসে সকালে আমার মায়ের ঘর, রান্নাঘর ও বাথরুম ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়ে প্রাচীর দিয়ে ঘিরে নিয়েছে।"
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বৃদ্ধা ইটভাটার কাজ শেষ করে ক্ষুদা পেটে বাড়ি এসেছে দুপুরে। বাড়িতে ঢুকেই দেখতে পায় তার ঘর, রান্নাঘর ও বাথরুম নেই। প্রতিবেশি মিজানুর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে। ভাঙ্গা ঘরের মাটির উপরে দাড়িয়ে কান্না করতে থাকে বৃদ্ধা ফিরোজা খাতুন। তার সাথে কথা বলতে গেলে সে কান্না করতে করতে বলে আমার থাকার জায়গা টুকু কেড়ে নিয়েছে। তাকে এখন খোলা আকাশের নিচে থাকতে হবে।
অভিযুক্ত মিজানুর রহমান বলেন, "অনেক আগেই আমি ওই খাস জমি লিজ নিয়েছি। বৃদ্ধা জমি ছেড়ে দেয় না। তাই দখল করে প্রাচীর দিয়ে নিলাম।