আলমডাঙ্গায় নীলা-শুকতারা ফাউন্ডেশনের চক্ষু হাসপাতাল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন
আলমডাঙ্গায় নীলা-শুকতারা ফাউন্ডেশন নামের একটি অত্যাধুনিক চক্ষু হাসপাতাল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে চুয়াডাঙ্গা -১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন গত ১৪ এপ্রিল এ হাসপাতাল নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন করেন। জন্মস্থানের মানুষের জন্য তিনি যে অপরিসীম ঋণ, সেই ঋণের কিছুটা দায়মুক্তি হিসেবে আমেরিকা প্রবাসী গবেশক আলমডাঙ্গার সন্তান শেখ আব্দুল কাদির এখানে অত্যাধুনিক হাসপাতালে করতে উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রথমে আই কেয়ার ডায়াবেটিক ম্যানেজমেন্ট এন্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টার নির্মান করবেন।
উদ্বোধনকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি বলেন, হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা অবশ্যই জনকল্যাণকর ও মহৎ একটি উদ্যোগ। তিনি সমাজের এক শ্রেনীর মানুষকে ঈঙ্গিত করে বলেন, সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা পেছন থেকে টেনে ধরে নিচে নামিয়ে ভাল কাজকে বাঁধা দেয়। তিনি হাসপাতালের মত ভাল কাজে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেন, আলমডাঙ্গায় চক্ষু হাসপাতাল হচ্ছে এটা জেনে আলমডাঙ্গার সন্তান হিসেবে আমি গর্বিত। সমাজসেবার মহাপরিচালক থাকাকালীন এলাকার জন্য ভালো কিছু করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমি আলমডাঙ্গাকে ভালবাসি। আলমডাঙ্গার মানুষের জন্য ভালো কিছু করতে চাই।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, নীলা-শুকতারা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে চক্ষু হাসপাতাল মহৎ প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত ও গর্বিত। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানান তিনি।
নীলা-শুকতারা ফাউন্ডেশন(প্রস্তাবিত)“র আমেরিকা প্রবাসী খালিদ মাহমুদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা ১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক গ্রেড-১ অতিরিক্ত সচিব ডঃ আবু সালেহ মোস্তফা কামাল, কুষ্টিয়া ৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ¯িœগ্ধা দাস, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিকেল বোর্ড এন্ড প্রাইভেট ক্লিনিকে সহকারি পরিচালক ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ সাঈদ, কালিদাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ শেখ আশাদুল হক মিকা। নীলা-শুকতারা ফাউন্ডেশন হাসপাতালের স্বপ্ন দ্রষ্টা আমেরিকা প্রবাসী ডা. শেখ আব্দুল কাদিরের উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মঈন উদ্দিন আহমেদ, দর্শনা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক পৌর চেয়ারম্যান এম সবেদ আলী, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শর্ফিউর রহমান জোয়ার্দ্দার সুলতান, আলমডাঙ্গা হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহসভাপতি আলহাজ¦ লিয়াকত আলী লিপু মোল্লা, বণিক সমিতির সভাপতি আরেফিন মিয়া মিলন, শেখ পরিবারের সন্তান শেখ সাইফুল ইসলাম, শেখ আব্দুর জব্বার, শেখ আমিনুল ইসলাম লিন্টুসহ আলমডাঙ্গার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
প্রসঙ্গত, এই শেখ আব্দুল কাদির? আলমডাঙ্গা শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মিয়াপাড়ার বাসিন্দা মরহুম শেখ শামসুদ্দিন আহমেদের দ্বিতীয় পুত্র শেখ আব্দুল কাদির। তিনি আমেরিকা প্রবাসী গবেষক ও সমাজসেবক। শিক্ষা জীবন কৃতিত্বের সাথে সমাপ্তির পর জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলো হিসেবে (১৯৮২-৮৪), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে জ্বালানী গবেষণা ও উন্নয়ন ইন্সটিটিউট (Bangladesh Council of scientific & Industrial Rrsarch (BCSIR), ঢাকা'র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৮৪-৯৫ সাল অব্দি কর্মরত ছিলেন।তিনি নবায়নযোগ্য জ্বালানী শক্তি নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছেন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান জার্নালে তাঁর অনেক গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তি প্রযুক্তি সংক্রান্ত বেশ কিছু পেটেন্ট ও তাঁর করায়ত্ত। ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয় জাপানের সৌজন্যে Indian Institute of Technology (IIT) দিল্লি ভারতে ফেলোশিপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৈজ্ঞানিক সমাবেশে উপস্থিত থেকে বৈজ্ঞানিক গবেষণা উপস্থাপনা করেছেন।
১৯৯৫ সাল থেকে অভিবাসী হিসেবে আমেরিকায় বসবাস করছেন এবং ২০১৮ সাল পর্যন্ত সেখানকার একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে "কোয়ালিটি কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ার ও ল্যাবরেটরি ইনচার্জ" হিসেবে চাকুরি করেছেন। বর্তমানে "ফাউন্ডেশন অফ চ্যারিটেবল এক্টিভিটিস বাংলাদেশ" (এফসিএবি) নামক একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কান্ট্রি ডিরেক্টর। সংস্থাটি ফ্রি হেলথ ক্লিনিক, অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন, ফ্রি প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা, গর্ভবতী ও দুগ্ধপ্রদানকারী মায়েদের পুষ্টিকর খাবার বিতরণ ও গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যকর পায়খানা বিতরণ কর্মসূচি পরিচালনা করে।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি জনসেবামূলক বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন। তিনি শিক্ষার্থিদের বৃত্তি প্রদান,দরিদ্রদের এককালীন অনুদানসহ নানা সেবামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করেন। ১৯৮৮ সাল থেকে আজোবধি এলাকায় বিনামূল্যে চক্ষু শিবিরের আয়োজন, অপারেশন ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছেন।