আলমডাঙ্গায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে একাধিক মামলার আসামী বোমা কালাম গ্রেফতার
আবারও ডাকাতির অপচেষ্টা রুখে দিল আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ। ডাকাতির প্রস্তুতিকালে একাধিক মামলার আসামী বোমা কালামকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কালামের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় অস্ত্র, বোমা হামলা, মাদক, ছিনতাই, চুরি, মারামারিসহ এক ডজন মামলা রয়েছে। শনিবার(৩০ মার্চ) দিনগত গভীর রাতে আলমডাঙ্গা-চুয়াডাঙ্গা সড়কের রোয়াকুলি গ্রামের ঘোড়ামারা মাঠ থেকে বোমা কালামকে গ্রেফতার করা হয়।
এক ডজন ভয়ংকর মামলার আসামী আবুল কালাম ওরফে বোমা কালাম (৪২) উপজেলার বেলগাছি গ্রামের বাগানপাড়া সাহেব মালিথার ছেলে। কালাম এলাকার চিহ্নিত মাদক সম্রাট। মাদক ব্যবসা করতে নিষেধ করায় নিজ মায়ের উপর বোমা হামলা করে কালাম। তারপর থেকে বোমা কালাম নামে পরিচিত তিনি।
একাধিক মামলার আসামী সজিব ওরফে ফজাকে অস্ত্রসহ গ্রেফতারের ৪দিন পরই ডাকাতি প্রস্তুতিকালে বোমা কালামকে গ্রেফতারের পর জনমনে স্বস্তি ফিরেছে।
এলাকাবাসি জানায়, আবুল কালাম ওরফে বোমা কালাম দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছেন। নিজের বাড়ির সামনে সরকারি জায়গা দখল করে করেছেন ব্যক্তিগত অফিস। সেখানে বোমা কালাম সাউন্ডবক্সে লাউড ভলিউমে মিউজিক বাজিয়ে মাদকদ্রব্য বিক্রি করেন বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বেশ কয়েকবার মাদকজন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দও করেছে। জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি এসে আবারও শুরু করেন মাদক ব্যবসা। মাঝে মধ্যে সে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিও করে বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ইতোপূর্বে তাকে পুলিশ অস্ত্রসহ গ্রেফতারও করেছে।
আলমডাঙ্গা থানাসুত্র জানা যায়, শনিবার দিনগত গভীর রাতে আলমডাঙ্গা চুয়াডাঙ্গা সড়কের রোয়াকুলি গ্রামের ঘোড়ামারা মাঠের নিকট হাইওয়ে রাস্তায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদল পালানোর চেষ্টা করে। তারা দৌড়ে পাশের ভুট্টা ক্ষেতে প্রবেশ করে। এসময় আলমডাঙ্গা থানার এসআই সৈয়দ ফরহান হোসেন ও এএসআই রাসেল তালুকদার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে আবুল কালাম ওরফে বোমা কালামকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে। তার নিকট থেকে ৩টি রাম দা, ১টি ছোরা ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত রশি উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, গত ৪ দিন আগে আলমডাঙ্গায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পৌর এলাকার একাধিক মামলার আসামীকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার করে প্রশংসায় ভাসছে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ।
গত ২৭ মার্চ পৌর এলাকার নওদাবন্ডবিল গ্রামের একাধিক মামলার আসামী সজিব ওরফে ফজাকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়। তার ৪দিন পর ডাকাতি প্রস্তুতিকালে বোমা কালামকে গ্রেফতার করায় জনমনে স্বস্তি ফিরেছে।
প্রসঙ্গত, আসন্ন ঈদ উৎসব সামনে রেখে আলমডাঙ্গা শহরের বিপণিবিতানে জমজমাট হয়ে উঠেছে বিকিকিনি।
আলমডাঙ্গা উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী গাংন্নী, মিরপুর, হরিণাকুন্ডু ও কুষ্টিয়ার ইবি থানার বড় অংশের মানুষ আলমডাঙ্গা শহরে মার্কেট করতে আসেন। সব মিলিয়ে ঈদ উপলক্ষে গভীর রাত অবধি আলমডাঙ্গার শপিংমলগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় থাকে। গভীর রাত পর্যন্ত বেড়েছে মানুষের চলাচল, বেড়েছে যানচলাচল। আর এ সুযোগেই অন্যান্য বছরের মত এ ঈদেও যথারীতি ছিনতাইকারি ও ডাকাত চক্রের অপতৎপরতা শুরু হয়েছে। আলমডাঙ্গার বন্ডবিল - মাদারহুদা, লতিডাঙ্গা-গোয়ালবাড়ি সড়ক, কুষ্টিয়া - চুয়াডাঙ্গা সড়কের বন্ডবিল ও রোয়াকুলি মাঠ, কুষ্টিয়া সড়ক ও আটকপাট ছিনতাই ও ডাকাতি প্রবণ পয়েন্ট।
ভীড় এড়িয়ে নিজেদের পছন্দের পোশাক কিনতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক ক্রেতারা ইফতারির পর বাড়ি থেকে আলমডাঙ্গার উদ্দেশ্য রওনা হন। কেনাকাটা করে বেশ রাত করেই বাড়ি ফেরেন। এমন ক্রেতাদের টার্গেট করেই অপরাধিচক্র সুবিধাজনক স্থানে ওৎ পেতে থাকেন।
গত ৪ দিনের ব্যবধানে দুটি ডাকাতির অপচেষ্টা রুখে দিল পুলিশ। শুধু রুখে দেওয়া না, অপরাধিদের আটকও করেছে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা উভয়ে মোস্ট ওয়ান্টেড আসামী। পুলিশের এ ইতিবাচক সাফল্যে প্রশংসা পাচ্ছেন আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ। সাথে সাধারন্যে ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে উঠছে ওসি শেখ গণি মিয়ার।