স্ত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করা মামলায় প্রাগপুরেরর আশাদুল মন্ডলকে গাংনী থেকে গ্রেফতার

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: স্ত্রীর আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার মামলায় আলমডাঙ্গার প্রাগপুরের আশাদুল মন্ডলকে পলাতক অবস্থায় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২১ আগস্ট ভোরে মোবাইলফোন ট্র্যাকিং করে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের একটি টিম তাকে গ্রেফতার করেছে। যৌতুক না পেয়ে ৩ সন্তানের মাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করার অভিযোগে গত ১৩ আগস্ট রাতে তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
আলমডাঙ্গা থানার ওসি (তদন্ত) মাসুদুর রহমান জানান, স্ত্রীর আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার মামলার আসামি আলমডাঙ্গার প্রাগপুরের আশাদুল মন্ডল পলাতক ছিলেন। তার ব্যবহৃত মোবাইলফোন সেট ট্র্যাকিং করে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের একটি টিম পলাতক অবস্থায় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা আমতৈল গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে।
এলাকাসূত্রে জানা যায়, প্রাগপুর গ্রামের রূপচাঁদ মন্ডলের ছেলে আশাদুল মন্ডল প্রায় ১৬ বছর পূর্বে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার মালিহাদ গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ের রূপালী খাতুনকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে রয়েছে ৩ সন্তান। বড় সন্তান নানা-নানির সাথে অবস্থান করে। দুই সন্তান থেকে মা-বাপের কাছে। ১৩ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে পুলিশকে জানানো হয় যে, ৩ সন্তানের মা রূপালী খাতুন আত্মহত্যা করেছেন। দুপুরে আলমডাঙ্গা থানার ওসি (তদন্ত) মাসুদুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। গৃওহবধুর মৃত্যু রহস্যজনক মনে হওয়ায় তিনি সুরতহাল রিপোর্ট নিয়ে দ্রæত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠান।
আলমডাঙ্গা থানা পুলিশসূত্রে জানা যায়, গৃহবধু রূপালী খাতুনকে তার স্বামী আশাদুল মন্ডল হত্যা করেছে – এমন দাবি প্রতিবেশি অনেকের। আশাদুল মন্ডল মাঝে মধ্যেই যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্মমভাবে পেটাতো বলে তারা তথ্য দিয়েছেন। তবে মৃত মহিলার গলায় দাগ ছিল। মৃত মহিলার বাপ অভিযোগ করেছেন যে তার মেয়েকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করতে স্বামী আশাদুল মন্ডল বাধ্য করেছে। তবে প্রাথমিকভাবে রূপালী খাতুনের বাপের অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা দায়ের করা হয়।
রুপালী খাতুনের বাপ রবিউল ইসলাম সে সময় অভিযোগ করে বলেন যে, বিয়ের সময় আশাদুল মন্ডলকে সাধ্যমত যৌতুকও দেওয়া হয়েছিল। তারপরও মাঝে মধ্যেই যৌতুকের দাবিতে পাষন্ড আশাদুল মন্ডল স্ত্রী রূপালী খাতুনকে বেদম পেটাতো। এমন নির্যাতন করতো যে শুনলেও গা শিউরে উঠতো। নির্যাতন শেষে অনেক বার আশাদুল এক হাতে বিষ ও অন্য হাতে দড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো স্ত্রী রূপালী খাতুনের সামনে। বলতো – “হয় বিষ খাবি না হয় গলায় দড়ি দিয়ে মরবি।“ তিনি দাবি করেন, রূপালী খাতুনকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে তার পাষন্ড স্বামী আশাদুল মন্ডল।
শুক্রবারই তাকে সংশ্লিষ্ট মামলায় জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।