আলমডাঙ্গার বগাদী গ্রামে চাঁদা না পেয়ে দুষ্কৃতকারীদের ছোড়া বোমা হামলা ঘটনায় গ্রেফতার ৩
আলমডাঙ্গার বগাদী গ্রামে চাঁদা না পেয়ে দুষ্কৃতকারীদের ছোড়া বোমা হামলা ঘটনার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। মামলা দায়ের করার ২৪ ঘন্টার মধ্যে চুয়াডাঙ্গা ডিবি ও আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে তিনজনকে গ্রেফতারের পর তাদের স্বীকারোক্তিতে ওই বোমা হামলার রহস্য উন্মোচিত হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, আলমডাঙ্গার বগাদী গ্রামের আব্দুল্লাহর ছেলে রকিবুল, সাহেবপুর গ্রামের মৃত রমজান আলীর ছেলে রাজ্জাক ও মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের মৃত বিল্লার হোসেনের ছেলে স্বপন পেশাদার চাঁদাবাজ চক্রের সদস্য। এরা বিভিন্ন টাকাওয়ালা লোককে টার্গেট করে চাঁদা দাবি করে। চাঁদার কাটা দিতে রাজি না হলে হত্যা ও গুমের হুমকিও দেয়।
এই চক্র তাদের পরবর্তী টার্গেট করে বগাদী গ্রামের মৃত জিন্নাত আলীর ছেলে পান ব্যবসায়ী মিন্টুকে।
পরিকল্পনানুযায়ী তারা গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে ০১৯০৯-৫৫১৬৫৫ নাম্বার দিয়ে মিন্টুকে রিং করে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। মিন্টু টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এরপর চাঁদাবাজরা ক্ষীপ্ত হয়ে মিন্টুর প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই একই নাম্বারে রিং করে মিন্টুর কাছ থেকে চাঁদার তাগিদ দিতে থাকে। এক পর্যায়ে টাকা না পেয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর রাত ১ টার দিকে চাঁদাবাজরা মিন্টুর বাড়িতে বোমা হামলা করে। বোমাটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার পর পান ব্যবসায়ী মিন্টু আলমডাঙ্গা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
বোমা হামলা ঘটনায় মামলার পর চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন নির্দেশে ডিবির ইনচার্জ ফেরদৌস ওয়াহিদের নেতৃত্বে এসআই শহিদুল বাশার, সুমন্ত বিশ্বাস, মুহিদ হাসান, আলমডাঙ্গা থানার এসআই দেবাশিষ মহলদার, এএসআই রজিবুল হক, বিজন ভট্টচার্য, রমেন কুমার সরকার সঙ্গীয় ডিবি ও আলমডাঙ্গার ফোর্সসহ পার্শ্ববর্তী মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা জেলায় অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত আসামী রকিবুল, রাজ্জাক ও স্বপনকে গ্রেফতার পূর্বক ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করে।
গ্রেফতার তিনজনের মধ্যে রকিবুল ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে সে জানায়, তারা মিন্টুর কাছে চাঁদা চেয়ে টাকা পাচ্ছিল না। এরপর রাজ্জাক মোবাইলে মেহেরপুরের আইসউদ্দিনের সাথে রকিবুলের পরিচয় করিয়ে দেয়।
আইসউদ্দিন নিজেকে আরিফ পরিচয় দিয়ে রকিবুলের সাথে মোবাইলে কথা বলতে থাকে। পান ব্যবসায়ী মিন্টুর কাছে একের পর এক রিং করে চাঁদা চেয়ে না পেয়ে এক পর্যায়ে ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে তারা।
মিন্টুকে শায়েস্তা করতে আসমানখালীর সোহাগ মোড়ের এক গোপন জায়গায় বৈঠকে বসে তারা। বৈঠকে পান ব্যবসায়ী মিন্টুর বাড়িতে বোমা মারার সিদ্ধান্ত হয়।
এরপর ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে আইসউদ্দিন তার এলাকা মেহেরপুর থেকে একটি বোমা এনে রকিবুলের কাছে দিয়ে যায় এবং বোমা মারার কৌশলও শিখিয়ে দিয়ে যায়। বোমা পেয়ে রকিবুল ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে পাস ব্যবসায়ী মিন্টুর বাড়িতে বোমা হামলা চালায়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।