উচ্চমান সহকারীর হাতে আলমডাঙ্গা উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শারীরিকভাবে লাঞ্চিত
আলমডাঙ্গা উপজেলা সমাজসেবা অফিসার নাজমুল হোসেনকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেছেন তাঁরই অধীনস্ত উচ্চমান সহকারী মনিরুজ্জামান। অফিসিয়াল কাগজপত্র টাইপ করতে বার বার ভুল করা নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে রোববার (১৬ জুলাই) বিকেলে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে।
আহত সমাজসেবা অফিসারকে হারদী স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
লাঞ্চিত সমাজসেবা অফিসার নাজমুল হোসেন জানান, ডিজি বরাবরে একটি চিঠি টাইপ করার জন্য অফিসের উচ্চমান সহকারী মনিরুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি চিঠিটা টাইপ করতে গিয়ে বার বার ভুল করলে সেটি সংশোধন করতে বলি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি আমাকে কিল ঘুষি মেরে রক্তাক্ত জখম করেছেন। যখন আমাকে মারধর করেন অফিসের কেউ বাঁধা দিতে আসেননি। মনিরুজ্জামান দীর্ঘ বছর ধরে নিজ এলাকার একই অফিসে চাকরি করেন। তার ভয়ে কেউ বাধ দিতে আসেননি।
এ ঘটনায় মামলার দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ সাঈদ বলেন, রোববার বিকেল ৬টা ২০ মিনিটের দিকে নাজমুল হোসেনকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। তিনি কিল-ঘুষিতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। এছাড়া আঘাতে তার ঠোট কেটে গেছে। তার মুখের ডান চোয়ালে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি শঙ্কামুক্ত।
চুয়াডাঙ্গা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিদ্দিকা সোহেলী রশীদ জানান, "এ ঘটনা জানার পরই আমি হারদী স্বাস্থ কমপ্লেক্সে যাই। সমাজসেবা অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে অভিযুক্ত উচ্চমান সহকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
মনিরুজ্জামান দীর্ঘ বছর ধরে নিজ এলাকার একই অফিসে চাকরি করেন। তার ভয়ে কেউ বাধ দিতে আসেননি।
অভিযুক্ত উচ্চমান সহকারী মনিরুজ্জামান জানান,তর্কাতর্কি হয়েছে। বিষয়টি আপোষ মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
এদিকে, ন্যাক্কারজনক এ ঘটনায় এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে। অভিযুক্ত উচ্চমান সহকারীর ভাই সচিব। সেই দাপটে তিনি নিজের কর্মকর্তাকেও তাচ্ছিল্য করেন বলেও অনেককে মন্তব্য করতে দেখা গেছে। প্রকাশ্যে অনেকেই এ ন্যাক্কারজনক কাজের জন্য অভিযুক্ত উচ্চমান সহকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন। এ ঘটনায় উপজেলার বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তাদের মাঝেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা যায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা দাস বলেন, "উপজেলা সমাজ সেবা অফিসারকে লাঞ্চিতের বিষয়টি শুনেছি। তাকে অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে। উচ্চমান সহকারীর বিরুদ্ধে ওই দপ্তর বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।"