মূলহোতাসহ আন্তজেলা মোবাইলফোন চুরি ও ছিনতাইকারী চক্রের ১০ জন আটক
নির্জন স্থান। আশেপাশে লোকজন নেই। কেউ একজন হাতে মোবাইল নিয়ে ব্যক্তিগত কাজ করছিলেন। হুট করেই রূপক ও তার এক সহযোগী যুবক সামনে এসে হাজির হন। জোরালো স্বরে প্রশ্ন করেন, "আমার ছবি তুললেন কেন?"
লোকটি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলেন, 'কই ছবি তুলিনি তো।'
এসময় রূপক ছবি তুলেছে কি- না তা নিশ্চিত হওয়ার ভান করে লোকটির হাত থেকে মোবাইলফোন নিয়ে দেখতে থাকেন। ঠিক এসময় রূপকের চক্রের আরও দু'জন সদস্য মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে এসে রূপকের হাত থেকে ছোঁ মেরে মোবাইলটি নিয়ে দ্রæত পালিয়ে যায়। রূপক এমন অভিনয় করেন যেন তিনি ছিনতাইকারীদের দেখেননি কোন দিন।
রূপক এমন কৌশল প্রয়োগ করে অসংখ্য মোবাইলফোন নিজেই চুরি ও ছিনতাই করেছেন। তিনি মোবাইলফোন চুরির এই অভিনব প্রতারণার ফাঁদ পাতেন বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত শনিবার রাতে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে এই চক্রের হোতা রূপকসহ ছিনতাই মোবাইলফোন কেনাবেচায় জড়িত ১০ জনকে আটক করেছে। তাদের কাছ থেকে ৭ টি মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোষবিলা গ্রামের মৃত স্বাধীন খন্দকারের ছেলে আন্তজেলা ছিনতাই চক্রের নেতা রূপক খন্দকার। এই চক্রের সদস্য ও কেনাবেচায় জড়িত থাকায় আরো আটক করা হয়েছে কুষ্টিয়া জেলার ইবি থানার শংকরদিয়া গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে সাহিল রহমান(২৪), কলেজপাড়ার শ্রী শ্যামল কুমার সাহার ছেলে শ্রী সুবেন্দ্র কুমার সাহা(২৮), আজিজুর রহমানের ছেলে আজহারুল ইসলাম আকাশ(২৫), শ্রী সুবেন্দ কুমার সাহার ছেলে শ্রী শুভ সাহা(৩০), এরশাদপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম(৩৮), মাদ্রাসাপাড়ার শ্রী নিতাই কুমার বিশ্বাসের ছেলে শ্রী তাপস কুমার বিশ্বাস(২০), ক্যানালপাড়ার শ্রী প্রেমানন্দ অধিকারীর ছেলে বিশ্বজিৎ অধিকারী(২২), রথখোলাপাড়ার সোলাইমান হোসেনের ছেলে নাহিদ হাসান(২০)ও), ও বাবুপাড়ার মহন আলির ছেলে আব্দুল্লাহ(৩০)।
পুলিশ জানায়, রূপক ট্রেন যোগে ঢাকা থেকে আসছে খবর পেয়ে তাকে স্টেশন থেকেই আটক করা হয়। আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কৌশলে মোবাইল চুরি ও কেনাবেচায় অনেকেই জড়িত। থানার ওসি (তদন্ত) একামুলের নেতৃত্বে এসআই শরীয়তুল্লাহ, এসআই আমিনুল ইসলাম, এএসআই জামির হোসেন রাতভর অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে অপর ৯ জনকে আটক করেন।
আলমডাঙ্গা থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, কৌশলে মোবাইল চুরির আন্তজেলা ছিনতাইকারী চক্রের মূল হোতা রূপকসহ কেনাবেচায় জড়িত মোট ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। এই আটকাভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, আন্তজেলা মোবাইলফোন ছিনতাইকারী সিন্ডিকেটের নেতাসহ ১০ জনকে আটকের সফল পুলিশি অভিযানের বিষয়টি শহরে বেশ আলোচিত হচ্ছে। প্রশংসা পাচ্ছেন এ সফল অভিযানে সম্পৃক্ত পুলিশ কর্মকর্তরা। পুলিশ আন্তরিক হলে যে কোন ধরণের অপরাধ সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা সম্ভব বলেও অনেককে মন্তব্য করতে শোনা গেছে।