আলমডাঙ্গায় বৃষ্টির চেয়ে বিশেষ নামাজ পড়লেন কয়েক শ মুসল্লি
২ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল একটানা ১৬ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার অঞ্চল চুয়াডাঙ্গা -আলমডাঙ্গা। ৯ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গেছে এ বারের দাবদাহ। চুয়াডাঙ্গা -আলমডাঙ্গা অনলপ্রবাহের জনপদে পরিণত হয়েছে। এখন আবার অনলপ্রবাহের সাথে রীতিমত প্রতিযোগিতা করছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। দীর্ঘ একটানা দাবদহে মানুষসহ প্রাণিকুলের ওষ্ঠাগতপ্রাণ। বৃষ্টির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে চারদিকে। জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলায় প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধানসহ ফসলি জমি শুকিয়ে গেছে। গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রজেক্টের ইরিগেশন খালে পানি নেই। ফাঁরাক্কার ছোবলে শস্য শ্যামলা মাঠপ্রান্তর আজ বিবর্ণ। ফলে বোরো আবাদে ফলন বিপর্যয় ঘটার সমূহ শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় আলমডাঙ্গায় বৃষ্টি চেয়ে ইস্তিসকার নামাজ ও বিশেষ দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
১৮ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে আলমডাঙ্গা শহরের দারুস সালাম ঈদগাহ মাঠে এই নামাজ আদায় করেন আলমডাঙ্গার কয়েক শ' আলেম উলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লি।
নামাজ ও দোয়া পরিচালনা করেন আলমডাঙ্গা মডেল মসজিদের ইমাম মাওলানা মাসুদ কামাল।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডাক্তার আব্দুল্লাহ আল মামুন, আলমডাঙ্গা অগ্রণী ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম, সরকারি কলেজের প্রভাষক গোলাম মোস্তফা, জিয়াউর রহমান, পৌর কাউন্সিলর খন্দকার মুজিবুল ইসলাম, বৃহত্তর কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম রহমান সিঞ্জুল, মুফতি মেহেদী হাসান, হাফেজ আকরামুল হোসেন, আনিসুজ্জামান, প্রমুখ।
নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা জানান, "একটানা ১৫/১৬ দিন প্রচÐ দাবদাহে স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। সকাল ১০ টা হতে না হতেই অনলপ্রবাহ শুরু হয়ে যায়। দুপুরে অনলবর্ষণ। বাইরে বের হওয়া যায় না। দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারণে শুকিয়ে যাচ্ছে মাঠঘাট কৃষিজমি। তীব্র খরায় ফলস উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন মানুষ।"
বৃষ্টি চেয়ে নামাজে অংশ নেওয়া মোস্তফা কামাল বলেন, 'প্রচÐ গরম। এই গরমে মানুষ অতিষ্ঠ। ঝড় বৃষ্টির এই মৌসুমে এমন গরম আগে কখনো দেখিনি। ঘর থেকে বের হওয়া দায়। ফসল হবে না। কৃষকরা খুব কষ্টে আছেন।'
নামাজ ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনাকারী মাওলানা মাসুদ কামাল বলেন, ' একটানা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আমাদের জেলায়। অসহ্য দাবদহের সাথে সাথে বেড়েছে লোডশেডিংভ
দীর্ঘদিন এমন পরিস্থিতিতেও বৃষ্টি না হওয়ায় হাহাকার চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বোরো ধানের ক্ষেতে পানি দিতে পারছে না। কৃষকরা চাষাবাদ করতে পারছেন না। এমন দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে ও মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনসহ আনুগত্য প্রকাশে এই নামাজ আদায় ও দোয়া মোনাজাত করা হয়। আল্লাহ যেন রহমত নাজিল করেন, এটিই আমাদের উদ্দেশ্য।'