আলমডাঙ্গা সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান
দীর্ঘ এক যুগ পর আলমডাঙ্গা সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এক যুগ ধরেই স্কুলটিতে আর্থিক অনিয়ম, ক্লাস না হওয়া, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অস্বাভাবিকহারে কমে যাওয়া, শিক্ষকদের চরম অনৈক্য, শিক্ষারমান তলানীতে নেমে যাওয়াসহ নানাবিধ অব্যাবস্থাপনার কারণে অভিভাবকমহলে তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনার মুখে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হল।
২০ ফেব্রæয়ারি সোমবার বেলা ১১টার সময় বিদ্যালয় মাঠে এ অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ও অভিভাবকদের বক্তব্যেও এ সংক্রান্ত স্কুল ম্যানেজমেন্টের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ফুটে ওঠে। বিদ্যালয়ের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নূরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই বিদ্যালযের প্রধান শিক্ষককে ভৎসনা করে বলেন, গত ১৮ সালে সরকার এই বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ ঘোষণা করেছে। অথচ ভবনের গায়ে আজও বিদ্যালয়ের আগের নামই রয়েছে। আগের নাম পরিবর্তন করে সরকারি বিদ্যালয় লেখা হয় নাই। এটা খুবই দুঃখজনক। তিনি অত্যন্ত ক্ষোভের সাথে বলেন, স্কুলে শিক্ষার্থীরা আসতে চায় না, কারন ক্লাস হয় না। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় জিপিএ পায়, অথচ জিপিএ'র মানে বোঝে না। এটা শিক্ষকদের ব্যর্থতা। তিনি বলেন, কেবল পাঠ্যপুস্তক পড়ানো শিক্ষকের কাজ না। একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন দেখাবেন। ভবিষ্যতে ছাত্ররা কে কি হবেন ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে শিক্ষকরা কাজ করবেন। শিক্ষকদের আদেশ দিয়ে তিনি বলেন,স্কুলে শতভাগ ছাত্র উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে অভিভাবকদের সাথে মোবাইলে ক্লাস শিক্ষকরা যোগাযোগ করবেন।
তিনি আরো বলেন, এই বিদ্যালয়ের অনেক সম্পদ আছে। শুনেছি এই সম্পদই নানা অব্যস্থাপনার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। তিনি বিদ্যালয়ের সকল টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করতে নির্দেশ দেন। এ সময় তিনি স্কুল শিক্ষকদের কোচিং ও প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ করার ওপর জোর দিয়ে বলেন, উপজেলার কোন স্কুলের কোন কোন শিক্ষক কোচিং ও প্রাইভেট পড়ান তাদের নামের লিস্ট আমাকে দিতে হবে।
এসময় প্রধান অতিথি মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান আলমডাঙ্গা উপজেলায় কোল সম্প্রদায়ের ছাত্রীদের জন্য ৫টি এবং বাগদী সম্প্রদায়ের ছাত্রীদের জন্য ৫টি বাইসাইকেল প্রদান ও ১১০জন শিক্ষার্থীকে নগদ অর্থ প্রদান করেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারি কমিশনার ভ‚মি রেজওয়ানা নাহিদ,নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রহমান, একাডেমি সুপারভাইজার ইমরুল হক, আলমডাঙ্গা থানার এসআই জমির হোসেন, প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান, সহকারি প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন। মানপত্র পাঠ করেন দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সামিউল বাসিত। সহকারি শিক্ষক আনোয়ারুজ্জামনের উপস্থাপনায় অভিভাবকদের মধ্যে খন্দকার হাবিবুল করিম চঞ্চল, আফরোজা পারভীন, শিক্ষার্থীদো মধ্যে বক্তব্য রাখেন অষ্টম শ্রেণীর তূর্য, দশম শ্রেনীর নাঈম, এছাড়া উপস্থিত ছিলেন এমএস জোহা কলেজের সহকারি অধ্যাপক এ.কে.এম ফারুক, সহ সকল শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ।