বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে সারা দেশে প্রথম রানার আপের গৌরব অর্জন করেছে চুয়াডাঙ্গা - আলমডাঙ্গার শিশু নাবাত রেহান মারফী
রহমান মুকুলঃ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতায় চুয়াডাঙ্গা - আলমডাঙ্গার ছেলে নাবাত রেহান মারফী অংশ নিয়ে সারা দেশে ১ম রানার আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। এখন নাবতের আকাশ ছোয়া প্রত্যয় আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড জয়ের।
গণিত অলিম্পিয়াডের মূল লক্ষ্য সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের গণিতে আগ্রহী করে তোলা, সমস্যা সমাধানের চেয়ে সমস্যাটি নিয়ে অনেক বেশি চিন্তাভাবনা করতে উৎসাহিত করা। পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি সহ-শিক্ষাক্রমিক কার্যক্রমে মেধার বিকাশে সহায়তা করা, গণিতসহ বিজ্ঞান, ও ইংরেজি বিষয়ের প্রতি তাদের আগ্রহ বৃদ্ধি করা এবং তাদেরকে জীবনব্যাপি শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করা। অলিম্পিয়াডে ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন শিক্ষামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, যা পরবর্তীতে তাদের বুদ্ধিমত্তা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতাকে বিকশিত ও আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ব্যক্তিত্বে পরিণত করে।
নাবাত রেহান মারফী
আলমডাঙ্গা অ্যাকাডেমির ( আল ইকরা) ৬ ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থি ও শিক্ষক দম্পতির সন্তান। তার আব্বা শফিউল হক মিল্টন আলমডাঙ্গা মহিলা কলেজের পরিসংখ্যানের শিক্ষক। মা সাহেরা খাতুন প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক। নাবাত রেহান ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চায়। প্রাথমিক গ্রুপে অংশ নিয়ে সে এই গৌরবময় সাফল্য অর্জন করেছে।
গত ১০ ফেব্রæয়ারি ঢাকার সেন্ট যোসেফ স্কুল এন্ড কলেজে জাতীয় পর্যায়ের ওই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন ১১ ফেব্রæয়ারি বিজয়ীদের পুরষ্কার প্রদান করা হয়। সারা দেশের ২০টি অঞ্চলের মোট ৪৫ প্রতিযোগি জাতীয় পর্যায়ের এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। জাতীয় পর্যায়ের অংশ নেয় ১২৪৫ জন।
ইতোপূর্বে সাবাত অন্যান্যদের সাথে অনলাইনে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে প্রতিযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করে আবেদন করে। সে সকল আবেদন যাচাই বাচাই করে অপেক্ষাকৃত বেশি মেধাবীদের সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করা হয়। গত ৭ জানুয়ারি তারিখে কুষ্টিয়া সরকারি জিলা স্কুলে আঞ্চলিক প্রেিত্যাগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড বাংলাদেশের প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের গণিতের সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতা। তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা এতে অংশগ্রহণ করে থাকে।
প্রতি বছর বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। দৈনিক প্রথম আলো এবং ডাচ্-বাংলা ব্যাংক অলিম্পিয়াড আয়োজনে সহায়তা দিয়ে আসছে। ২০০২ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে গণিত অলিম্পিয়াড আয়োজিত হয়। তখন থেকে প্রতি বছরই নিয়মিতভাবে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই অলিম্পিয়াড তিনটি স্তরে সম্পন্ন হয়ে থাকে: বাছাই অলিম্পিয়াড ( অনলাইনে আবেদনের প্রেক্ষিতে), আঞ্চলিক অলিম্পিয়াড এবং জাতীয় অলিম্পিয়াড।
বাছাই অলিম্পিয়াডের নির্বাচিত ছাত্রছাত্রীরা আঞ্চলিক অলিম্পিয়াডে এবং আঞ্চলিক অলিম্পিয়াডের নির্বাচিতরা জাতীয় অলিম্পিয়াডে অংশ নেবে। জাতীয় পর্যায়ে কৃতিত্ব প্রদর্শনকারীদের নিয়ে জাতীয় গণিত ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়, আর সেখানে থেকেই বাছাই করা হয় আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের জন্য বাংলাদেশের জাতীয় টিম।
নাবাত রেহান মারফী এখন সকল শিশু কিশোরের অনুপ্রেরণা। সবিশেষ উৎসাহের নাম। শুধু সহপাঠীরা না, অভিভাবকদের এখন অনুপ্রেরণা নাবাত রেহান। আগামি বছর আলমডাঙ্গা থেকে গণিত অলিম্পিয়াডে অনেক নতুন মুখ অংশ গ্রহণ করবে।