আলমডাঙ্গায় কৃষি যন্ত্রপাতির সহায়তায় সমলয় পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপনের উদ্বোধন
আলমডাঙ্গার কালিদাসপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর মাঠে সমলয় পদ্ধতিতে কৃষি যন্ত্রপাতির সহায়তায় ধানের চারা রোপনের উদ্বোধন করা হয়েছে। ৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার বিকালে জগন্নাথপুর মাঠে সমলয় চাষাবাদের উদ্বোধন করা হয়। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছওে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওয়ায় কৃষি যন্ত্রপাতির সহায়তায় ১০৩ জন কৃষকের দেড়শ বিঘা জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে চাষের আওতায় আনা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবীদ বিভাস চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ কবীর হোসেন। এসময় তিনি বলেন, সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদ হচ্ছে- একই সাথে ও একই সময়ে অনেক জমিতে একই শস্যে চাষাবাদকে সমলয় বলা হয়। সমলয় পদ্ধতিতে কৃষকের সময় ও খরচ অনেক কমে যায়। এক বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপন করতে কয়েকজন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আধুনিক যন্ত্রের কারণে দশ জনের কাজ এখন একজনে করা সম্ভব। বর্তমান সরকার কৃষকের ভাগ্যন্নোয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষকের উন্নয়নে সরকার কৃষিতে ভর্তুকি দিচ্ছে। কৃষক উপকৃত হচ্ছে।
বিশেষ অতিথি উপজেলা চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন বলেন, কৃষিতে শ্রমিকরা এখন মৌসুমি। মৌসুম শেষে তারা অন্যান্য কাজে নেমে পড়ে। অনেকে পরবর্তী মৌসুমে কৃষিকাজে পুনরায় আসেন না। ফলে ফসল ঘরে তোলার সময় শ্রমিক সঙ্কট এখন নিত্যনৈমিত্তিক। অথচ ক্রমবর্ধমান মানুষের খাদ্যের উৎপাদন ত্বরান্বিত করার বিকল্প নেই। তাই কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ সময়োপযোগী ও যথাযথ সিদ্ধান্ত। আধুনিক কৃষি যন্ত্রগুলো অল্প সময়ে অধিক পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করে শ্রমিক সঙ্কট নিরসন করছে।
বিশেষ অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাঃ রনি আলম নূর বলেন, জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য ধান ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। সমলয়ে চাষাবাদের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসারসহ বোরো ধানের উৎপাদন খরচ কমানো, শ্রমিক সঙ্কট নিরসন ও সময় সাশ্রয় সম্ভব।
সভাপতির বক্তেব্য চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবীদ বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন , এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে তুলনামূলক কম খরচে অধিক লাভ করবে কৃষক। এতে করে বোরো আবাদে আগ্রহ বাড়বে কৃষকের।সমলয়ে চাষ পদ্ধতির উপযোগিতা সম্পর্কে তিনি বলেন, সনাতন পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি না করে প্লাস্টিকের ফ্রেম বা প্লাস্টিকের শেডে বীজ বপন করে ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ধানের চারা উৎপাদন করা সম্ভব। পরবর্তী ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ করতে পারবেন। এতে করে কৃষক ভালো মানের চারা উৎপাদন করে অল্প সময়ের মধ্যে অধিক জমিতে ফসল আবাদ করতে পারবেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. সালমুন আহাম্মদ ডন, কালিদাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ শেখ আশাদুল হক মিকা, আলমডাঙ্গা কৃষি অফিসের অতিরিক্ত কৃষি অফিসার রেহেনা পারভীন।
স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার হোসেন শহীদ সরোওয়ার্দী।
কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা সোহেল রানার উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন কৃষক রবিউল ইসলাম, জার আলী, আব্দুল্লাহ, আনারুল ইসলাম, আনারুল হক, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম, মহাবুল ইসলাম, মিনারুল ইসলাম, শিপন, ইমরান হোসেন সাগর, আফিল উদ্দিল, নাকিব উদ্দিন নেকবার, ফিরোজ, সাবিহা খাতুন, জলি খাতুন, আলিয়া খাতুন, কৃষি প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন পাহলোয়ান, চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উন্নয়ন শাখার উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা শাহীন শাহনেয়াজ রাব্বি, উপসহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াহেদ, উপসহকারি কৃষি অফিসার আহসান উল হক শাহিন, আ: রফিক, খালিদ সাইফুল্লাহ, বিএডিসি বীজ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ আব্দুর জব্বার প্রমুখ।