আলমডাঙ্গার আনন্দধামের শান্ত প্রতারণার শিকার হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে সৌদি আরবে
আলমডাঙ্গার আনন্দধামের জাকারিয়া শান্ত নামের এক যুবক প্রতারণার শিকার হয়ে সৌদি আরবে কাটাচ্ছে মানবেতর জীবন। কুয়েত প্রবাসি কোটচাঁদপুরের ফরহাদ, তার স্ত্রী রোজিনা ও সৌদি প্রবাসি রুবেল চক্রের প্রতারণায় তার হয়নি আকামা, বাড়িতেও ফিরতে পারছে না সে। দিশেহারা শান্তর পিতা আদালতে মামলা করেছেন ওই চক্রের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গার আনন্দধামের শহিদুল ইসলাম মাস্টারের ছেলে জাকারিয়া শান্ত একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। করোনা মহামারি কালিন সময়ে অনেকের মত শান্তও চাকুরি হারায়। সেই দুঃসময়ে তার সাথে পরিচয় ঘটে সৌদি প্রবাসি কামরুজ্জামান রুবেলের।
কামরুজ্জামান রুবেল আলমডাঙ্গার কালিদাসপুরের আজহারুল ইসলাম সেন্টুর ছেলে। তিনি নিজেলে ঢাকার সবুজ বাংলা ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিতে চাকুরী করেন বলে দাবি করেন। তিনি শান্তকে টোপ দেন মাত্র এক লাখ টাকা বিমান ভাড়া দিয়ে সৌদি আরবে ১২শ রিয়ালের চাকুরী করার। এক পর্যায়ে শান্তর পরিবার রাজি হয়।
কামরুজ্জামান রুবেলের নির্দেশে তার দুলাভাই কোর্টচাঁদপুরের ফরহাদ ও তার স্ত্রী রোজিনা শান্তর বাড়ি গিয়ে ১ লাখ টাকা নিয়ে আসেন স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে। কিন্তু নানা বাহানায় শান্তকে এক লাখ টাকায় সৌদি পাঠাতে রাজি হয়নি চক্রটি। শান্ত নিজের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল বিক্রি করে আরও ১ লাখ টাকা দেয়।
এই টাকার নেওয়ার পর আরও টাকা দাবী করলে শান্তর স্ত্রী বাধ্য হয়ে এনজিও থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে সেই টাকাও রোজিনার হাতে তুলে দেয়।
এভাবে নানা সময়ে ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েও শান্তকে প্রতারণা করতে পিছুপা হয়নি। আরও ৫০ হাজার টাকা বিমানের টিকেট বাবদ হাতিয়ে নেন।
অবশেষে সৌদি পৌঁছে শান্ত। সেখানে রিসিভ করেন রুবেল। তিনি সৌদি আরবের আল কাশিম শহরে হাউজ ড্রাইভিং চাকুরীর জন্য পাঠান। সেখানে এক মাসও চাকুরী করতে পারেন্ নি শান্ত । তার ফ্রী ভিসার কারণে আকামা লাগানো সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে কামরুজ্জামান রুবেলের সাথে অনেক যোগাযোগ করেও ল্কাভ হয়নি। উলটো জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়েছে। এরই মধ্যে শান্তকে বিপদে সহযোগিতা না করেই রুবেল দেশে বাড়িতে আসেন। এ সময় শান্তর পরিবার তার সাথে বার বার কথা বলেও সমস্যার সমাধান করতে পারেনি।
রোজিনার কাছে টাকা ফেরত চায়লে তিনি তার স্বামী ফরহাদের সাথে কথা বলতে বলেন। ফরহাদ টাকা ফেরত দেও্যার পরিবর্তে শান্তকে অবৈধভাবে সৌদি আবরে থাকার অপরাধে পুলিশ দিয়ে আটক করানোর হুমকি দেয়। শুধু শান্ত না, তার সাথে আরও ১৩ জন যুবককে ফ্রী ভিসায় নিয়ে গিয়ে বিপদে ফেলেছে ওই চক্র। এখন ১০ মাস যাবত শান্ত সৌদি আত্মগোপনে মানবেতর অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।
ফরহাদ-রোজিনা-রুবেল চক্রের হাত থেকে ক্ষতি পূরণসহ ছেলেকে ফিরে পেতে প্রতারণার শিকার শান্তর পিতা শহিদুল ইসলাম মাস্টার অবশেষে আদালতে অভিবাসী আইনে মামলা দায়ের করেছেন। তিনি প্রশাসনের কাছে এ প্রতারণার সুষ্ঠ বিচারের দাবী জানিয়েছেন।