দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় : শীতার্ত মানুষ পুরাতন কাপড়ের দোকানে ছুটছে : আগুনে দগ্ধ বৃদ্ধা
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্র ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। হিমেল বাতাস আর ঘন কুয়াশায় শীতার্ত মানুষ গুলো অসহায়। তিন দিন ধরে চুয়াডাঙ্গার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। কুয়াচ্ছন্ন আকাশ ভেদ করে কয়েক দিনপর সূর্যের দেখা মিলল চুয়াডাঙ্গায়। শীতার্ত মানুষ তীব্র শীত থেকে বাঁচতে পুরাতন কাপড়ের দোকান গুলোতে ভিড় করছেন।
শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে হাসপাতালে শীতজনিত রোগির সংখ্যা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগুন তাপাতে গিয়ে এক বৃদ্ধা দগ্ধ হয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাদীন রয়েছে। শুক্রবার দুপুরে সূর্য উঠার পর সাধারণ মানুষ বাইরে বের হন। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন ধরে চুয়াডাঙ্গার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ৯ডিগ্রির মধ্যে থাকছে জেলার তাপমাত্রা। শুক্রবার সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে জেলায়। কয়েকদিন সূর্যের দেখা মেলেনি। হিমেল বাতাস ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে।
দুপুরে হঠাৎ আকাশে সূর্যের দেখা মেলে। শীতার্ত মানুষ শীত থেকে বাঁচতে চুয়াডাঙ্গার সড়কের পাশে অস্থায়ী পুরাতন কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন। শীত থেকে রক্ষা পেতে ছিন্নমূল, খেটে খাওয়া মানুষ গুলো পেটের তাগিতে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন। অনেকে আগুন জ্বালিয়ে উঞ্চতা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। পুরাতন জ্যাকেট, সোয়েটারসহ অন্য প্রয়োজনীয় শীতের কাপড় কিনছেন সাধারণ মানুষ। জ্যাটেক ও সোয়েটার গুলো ১শ টাকা থেকে ৩শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও টুপি, হাত মোজা, পা মোজা কিনছেন। নিম্ন আয়ের ও ছিন্নমূল মানুষ গুলো পুরাতন কাপড় কিনছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কয়েক গুণ বেশি রোগি ভর্তি রয়েছে। শিশুরা বেশি শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডে শয্যার তুলনায় ৩ গুণ বেশি রোগি ভর্তি রয়েছে। শিশু ওয়ার্ডে ৪৯ জন ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৭০ জন রোগি ভর্তি রয়েছে। বহির বিভাগ থেকে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ জন শিশু চিকিৎসা নেয়। বাড়তি রোগির চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক, নার্সসহ দায়িত্বরতদের।
শুক্রবার সকালে আলমডাঙ্গা উপজেলার বড়পুটিমারি গ্রামে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে নিহারণ নেছা নামের এক বৃদ্ধা আগুন তাপাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন। তার শরীর আগুনে ঝলসে গেছে। তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল ইসলাম বলেন, সর্বনি¤œ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গা রেকর্ড করা হয়েছে। শৈত্য প্রবাহ কয়েক দিন থাকতে পারে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু কনসালটেন্ট ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, শীতের তীব্রতা বাড়ায় শিশুরা বেশি শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালে বাড়তি রোগির চাপ সামাল দিতে কষ্ট হচ্ছে।