স্বপ্নের ফাইনালে আর্জেন্টাইন ভক্তদের জন্য দুঃসংবাদ
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতে ফাইনাল নিশ্চিত করার পর নতুন করে ফের এই প্রশ্নের মুখোমুখি আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। মেসির উত্তরে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের জন্য আছে মন খারাপের খবর।
১৮ ডিসেম্বরের ফাইনালই বিশ্বকাপে মেসির শেষ ম্যাচ। বয়স পেরিয়েছে ৩৫। আরেকটি বিশ্বকাপ আসতে আসতে বয়সটা পেরিয়ে যাবে ৩৯ এর ঘর। স্বাভাবিকভাবেই সে বয়সে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নটা বাড়াবাড়ি।
কিন্তু মানুষটা যদি হয় লিওনেল মেসি, তবে আশায় বুক বাঁধা যায়। কাতার বিশ্বকাপের পর ২০২৬ বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা বিশ্বকাপেও লা পুলগা খেলবেন কি-না, তা নিয়ে সমর্থকদের কৌতূহলের শেষ নেই।
এই বিশ্বকাপ শুরুর আগে মেসি নিজেই জানিয়ে দিয়েছিলেন আরেকটা বিশ্বকাপে তাকে দেখার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তারপরও শেষ কথা তো থেকেই যায়। যদি-কিন্তুর ওপরও তো অনেক কিছু নির্ভর করে।
লুসাইলে মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠে গেছে আর্জেন্টিনা। নিজে পেনাল্টি থেকে একটা গোল করার পাশাপাশি হুলিয়ান
আলভারেজকে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে বানিয়ে দিয়েছেন আরেকটি গোল। দুর্দান্ত খেলে জয় তুলে নেয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক।
ম্যাচ শেষে মিক্সড জোনে মেসির কথা শুনতে অপেক্ষায় ছিলেন আর্জেন্টাইন সাংবাদিকরা। উপস্থিত ছিলেন আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ‘ওলে’ ও স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’র সংবাদকর্মীরাও। তাদের সামনেই মন খারাপের খবরটা দেন মেসি।
পাঁচ মিনিটের মতো সময় ধরে দেয়া বক্তব্যের শুরুতেও সমর্থকদের হৃদয়ভাঙা খবরটা দেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘ফাইনাল দিয়ে বিশ্বকাপ ক্যারিয়ার শেষ করতে পারব ভেবে গর্ব লাগছে।
নিশ্চিতভাবেই রোববার (ফাইনাল) হবে বিশ্বকাপে আমার শেষ ম্যাচ। পরের বিশ্বকাপ (২০২৬) অনেক দূরের পথ। ততদিন পর্যন্ত সময় থাকবে বলে মনে হয় না। তাই সবচেয়ে ভালোভাবে শেষ করার আশা রাখি।’
মেসির কথায় অবশ্য উৎসবের প্রস্তুতি নেয়া শুরু করতে পারে আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। ‘সবচেয়ে ভালোভাবে শেষ করা’ মানেই তো শিরোপা উঁচিয়ে উদযাপন করতে করতে বিদায় নেওয়াটাই বোঝায়।
তার মানে ১৮ ডিসেম্বর লুসাইলে আকাশি-সাদা জার্সিধারীদের শিরোপা উৎসবের প্রতিশ্রুতিই দিচ্ছেন সাতবারের ব্যালন ডি’অরজয়ী। ফাইনালে নিজের সবটুকু নিংড়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
মেসি বলেন, ‘সত্যিটা হলো, এখন মাথার ভেতর অনেক কিছুই কাজ করছে। বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচটা খেলব, যেটা আমরা চেয়েছি। জানি না এটা আমার সেরা বিশ্বকাপ কি-না। আমরা এখানে (কাতারে)
আসার পর থেকেই উপভোগ করছি। হার দিয়ে শুরু করলেও জানতাম এই দলটা কী করতে পারে। আর্জেন্টিনা আবারও বিশ্বকাপের ফাইনালে এবং ফাইনালে আমরা নিজেদের সর্বস্বই নিংড়ে দেব। জয়ের জন্য যা যা করা দরকার, তাই করব।’ ২০১৪ বিশ্বকাপেও ফাইনালে উঠেছিল আর্জেন্টিনা। ব্রাজিলের মারকানায় সেদিন অবশ্য অতিরিক্ত সময়ের গোলে জার্মানির বিপক্ষে হেরে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল মেসিদের।
সেই স্মৃতি ভোলার সময় এবার। তার দলের ওপর আস্থা রাখতে মেসি বলছেন, ‘ভক্তদের বলছি, আস্থা রাখুন। এই দলটা দুর্দান্ত। আমরা আরেকটি বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলব এবং উপভোগ করব। পরিবারের কথা মনে পড়ছে। তারা সব সময় পাশে ছিল। ভালো ও খারাপ—দুই রকম সময়ই পার করেছি। এখন দারুণ মুহূর্ত কাটছে। এখানে সবাই উপভোগ করছি, আনন্দ করছি। আর্জেন্টিনায় না জানি কী হচ্ছে।‘ রোববারের ফাইনালে মেসি শিরোপা উঁচিয়ে ধরেই ‘বিদায়’ বলবেন এমনটাই প্রত্যাশা বিশ্বজুড়ে আর্জেন্টিনার কোটি কোটি সমর্থকের।