প্রবাসীকে বিয়ে করে প্রায় কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ আলমডাঙ্গার নওলামারী রিনা খাতুনের বিরুদ্ধে
মালেশিয়া প্রবাসীকে বিয়ে করে নগদ টাকা ও সম্পত্তি মিলে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাত করে স্বামীকে পথে বসিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে আলমডাঙ্গার নওলামারী গ্রামের রিনা খাতুনের নামে। জমি কেনা, বাড়ি কেনা, বিয়ের পর দেওয়া স্বর্ণ বিক্রয়ের টাকা ও চাকরীর জন্য ঘুষের নাম করে বিপুল অংকের ওই অর্থ হাতিয়ে নেন। দীর্ঘ বছরের প্রবাস জীবনের উপার্জিত কষ্টের সব টাকা হারিয়ে একেবারে পথে বসেছেন স্বামী রেজাউল ইসলাম। হারানো টাকা ফিরে পেতে রেজাউল স্ত্রী রিনা খাতুনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, কেশবপুর গ্রামের মৃত আবু বকরের ছেলে রেজাউল ইসলাম ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে মালেশিয়ায় পাড়ি জমান। বিদেশে গিয়ে ভাগ্যের চাকাও ঘুরিয়ে ফেলেন। সেখানে একটি দোকান দিয়ে তিনি দুই হাতে টাকা উপার্জন করেন। এরই মাঝে গত ১৫ সালে মোবাইলে যোগাযোগ হয় নওলামারী গ্রামের মৃত ইকতার আলীর স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়ে রিনা খাতুনের সাথে। মোবাইলেই তাদের মধ্যে সখ্যতা থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে মোবাইলে তাদের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়। এরপরের বছর ২০১৬ সালে রেজাউল রিনাকে মালেশিয়ায় নিয়ে যান। তাদের সংসারে জন্ম নেয় একটি পুত্র সন্তান।
এরপর থেকে রিনা মালেশিয়া-বাংলাদেশ করতে থাকেন। রিনা এর মাঝেই ছড়িয়ে দেন প্রতারনার জাল। তিনি প্রথ মে নিজের কাছে নিয়ে নেন ২০ লক্ষ টাকা মুল্যের ৩শ গ্রাম স্বর্ণ। এরপর মাঠে ৭ লক্ষ টাকা দিয়ে জমি কেনেন নিজ নামে। আলমডাঙ্গা শহরে ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে একটি বাড়ি কেনেন। এসব রেজাউলের নামে কেনার কথা থাকলেও রিনা গোপনে নিজের নামে করে নেন। শুধু জমি ও বাড়ি হাতিয়ে নিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি রিনা। এবার সমাজসেবা অধিদপ্তরে চাকরী হচ্ছে জানিয়ে রেজাউলের কাছ থেকে আরো ১১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন রিনা।
সবকিছু হাতিয়ে নিয়ে রিনা করোনার আগে দোকানের টাকা লুটে নিতে আবারো মালেশিয়ায় যান। রেজাউল রিনাকে পেয়ে বাড়ি ও জমির দলিল দেখতে চান। পরে রেজাউল জানতে পারেন সবকিছু রিনার নামেই করেছেন তিনি। এ সময় বিষয়টি জানাজানি হলে মালেশিয়ায় বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ রেজাউল ও রিনাকে নিয়ে সমঝোতায় বসেন। রিনা কথা দেয় বাংলাদেশে গিয়ে বাড়ি ও জমি রেজাউলের নামে ফিরিয়ে দিবেন।
সব ফিরে পেতে রেজাউল স্ত্রী সন্তান নিয়ে গত মাসের ২৫ তারিখে দেশে আসেন। বাড়ি এসেই রিনা নিজেকে পরিবর্তন করে ফেলেন। স্বামী সংসার গেলেও তিনি হাতিয়ে নেওয়া কোন কিছুই ফিরিয়ে দিতে রাজি হননি। এ নিয়ে বেশী বাড়াবাড়ি করলে রেজাউলের জীবন হুমকির মধ্যে পড়বে বলেও জানিয়ে দেন রিনা।
জীবনের কষ্টার্জিত সবকিছু হারিয়ে রেজাউল অবশেষে পথে বসেছেন। ন্যায্য বিচার পেতে তিনি থানায় প্রতারক স্ত্রী রিনার নামে এ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করেছেন।