প্রেমিকার বিয়ে ভাঙতে গিয়ে বরের বাড়ি আটক হলেন প্রেমিকের তিন বন্ধু
কিশোরী প্রেমিকার বিয়ে ঠেকাতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে প্রেমিক প্রবর সাব্বির ও তার তিন বন্ধু। তারা বিয়ের দিন সকালে হবু বরের বাড়িতে গিয়ে কনের সাথে সাব্বিরের প্রেমকাহিনী স্ব-বিস্তারে বর্ণনা করে বিয়ে ভেঙ্গে দিতে অনুরোধ করে। বরের বাড়ির লোকজন স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে বিয়ে ভাঙতে যাওয়া তিন বন্ধুকে আটকে রাখে।
এখানেই কিন্তু ঘটনার ইতি ঘটেনি। বরং তারপরই ঘটনা নাটকীয় মোড় নিয়েছে। বরপক্ষ বিয়ের সমুদয় খরচ দাবি করে আটকে রাখা তিন বন্ধুকে ছাড়ার ঘোষণা দেয়। সকাল থেকে মঙ্গলবার রাত অব্দি তিন বন্ধু বরের বাড়িতে আটকাবস্থায় ছিল।
এরপূর্বে বেলা ১১টার দিকে প্রেমিক সাব্বির প্রেমিকার বিয়ে ঠেকাতে বাল্য বিয়ে হচ্ছে জানিয়ে জাতীয় সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে। দুপুরের দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নুর থানার এসআই হাদিউজ্জামানকে সাথে নিয়ে কনের বাড়িতে উপস্থিত হন। তিমি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বাল্যবিয়ে বন্ধ করেন ও কনের পিতা নাসির উদ্দিনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। মঙ্গলবার দিনভর বর ও কনের বাড়িতে এসব ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গার পৌর এলাকার এম সবেদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে ফরিদপুর গ্রামের শাহাবুদ্দিনের কলেজপড়ুয়া ছেলে সাব্বির। কিন্ত হঠাৎ করেই ফাতেমার পরিবার তার বিয়ের দিন পাকা করে ফেলেন মিরপুর উপজেলার নকরবাঁকা গ্রামের ইদবারের ছেলে রুবেলের সাথে। মঙ্গলবার বিয়ের দিন ধার্য করা হয়। সকাল থেকেই কনের বাড়িতে বিয়ে উৎসব আমেজে রান্না-বান্না চলতে থাকে। এ খবরে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে প্রেমিকপ্রবর সাব্বিরের। সে বিয়ে ঠেকাতে তার তিন বন্ধু ফরিদপুর গ্রামের শাকিল, শামিম ও রাজনকে হবু বরের বাড়িতে পাঠায়। একই সাথে সাব্বির জাতীয় সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে বাল্যবিয়ের খবর জানিয়ে দেয়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নুর পুলিশ নিয়ে কনের বাড়ি ফরিদপুরে বিয়ে বাড়িতে হাজির হন। বাল্য বিয়ে দেয়ার অপরাধে কনের পিতা নাসির উদ্দিনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন ও বিয়ে বন্ধ করে দেন।
অপরদিকে, মিরপুরের নগরবাঁকায় বরের পরিবারসূত্রে জানা গেছে, তিন বন্ধু শাকিল, শামিম ও রাজন সকালের দিকে বরের বাড়িতে উপস্থিত হয়। তারা কনে ফাতেমার প্রেম আছে জানিয়ে বিয়ে না করতে অনুরোধ করে। এ অদ্ভুত কান্ডে হতবাক হয় বরের পরিবার। তারা প্রতিবেশী ও বিয়ে বাড়িতে আগত আত্মীয়-স্বজনের সাথে আলাপ করে বিয়ে ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে এ পর্যন্ত বিয়ের সমূদয় খরচ বিয়ে ভেঙে দেয়া তিন বন্ধুর কাছে দাবি করেন। তিন বন্ধু পালিয়ে আসার আগেই তাদেরকে বরের বাড়িতে আটকে রাখা হয়। বরপক্ষ সমস্ত খরচ আদায় করে তিন বন্ধুকে ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দেয়। রাত অব্দি টাকার বিনিময়ে তিন বন্ধুকে ছাড়িয়ে আনা হয়নি বলে জানা গেছে। তবে প্রেমিকার বিয়ে ভাঙতে গিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে হওয়ায় প্রেমিক সাব্বির বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। কথিত প্রেমিকের এমন অদ্ভুত কান্ডে সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ কনের পিতা সাব্বিরের নামে থানায় মামলা করার প্রস্ততি নিচ্ছেন বলে জানান।
এবিষয়ে বেলগাছী ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান চঞ্চল জানান, এঘটনা সবই আমি জানি। এ ঘটনায় আমি নিজেকে সম্পৃক্ত করতে চাচ্ছি না।