প্রেমিকের কথায় স্বামীকে তালাক দিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে আলমডাঙ্গার দোলনচাঁপা
প্রেমিকের নিকট থেকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি পেয়ে স্বামীকে তালাক দিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে আলমডাঙ্গার শ্যামপুর গ্রামের এক সন্তানের জননী দোলনচাঁপা । বিয়ে করবে বলে ফুঁসলিয়ে স্বামীকে তালাক দেয়ার ব্যবস্থা করে প্রেমিক জাহিদুল বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। গ্রাম্য মাতুব্বরদের নানামুখি কারসাজিতে সব কুল হারিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়ার আশংকা তৈরী হয়েছে দোলনচাঁপার । দোলনচাঁপা ন্যায় বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ জানানোর পর প্রেমিকের প্রভাবশালী পরিবারের চাপে তাদের গ্রামে থাকা দায় হয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্যামপুর গ্রামের প্রবাসী আসলামের ছেলে জাহিদুল ৯ বছর আগে প্রতিবেশী দোঁলনচাপা নামের কিশোরীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। সে সময় তারা অন্তরঙ্গ মূহুর্তে স্থানীয়দের কাছে ধরাও পড়ে। এ নিয়ে গ্রামে সালিশ বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। জাহিদুলের পরিবার গ্রামে প্রভাবশালী হওয়ায় দোলনচাঁপার পরিবার চরমভাবে প্রতারিত হয়। দোলনচাঁপা সম্ভভ্রম হারিয়ে নিরুপায় হয়ে বাড়ি থেকে চুয়াডাঙ্গার এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠে। সেখান থেকেই নাটোরের আত্রাইয়ে রনি নামের এক যুবকের সাথে দোলনচাঁপার বিয়ে হয়। আট বছরের সংসার জীবনে দোলনের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। মেয়ের বয়স এখন চার বছর।
জানা গেছে, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই জাহিদুল মোবাইলে দোলনের সাথে কথা বলা শুরু করে। প্রতারনা করা ভুল হয়েছে বলে জাহিদুল ক্ষমাও চায়। বিয়ে করে সংসার শুরু করার প্রতিশ্রæতি দিতে থাকে জাহিদুল। দোলনচাঁপা দোটানায় পড়ে যায়। ইচ্ছা না থাকলেও জাহিদুলের প্রচন্ড রকমের চাপাচাপিতে দোলনচাঁপা শেষ পর্যন্ত ৭ মাস আগে শ্যামপুরে মায়ের বাড়িতে চলে আসে। এরপর শুরু হয় জাহিদুলের রঙ্গলীলা। রাত হলেই সে দোলনের বিছানায় চলে আসে। এরপর দোলন বিয়ের জন্য চাপ দেয়। জাহিদুল তার স্বামীকে তালাকের প্রসংগ আনে। দোলনচাঁপা জাহিদুলের পরামর্শে তার স্বামীকে তালাক দিয়ে দেয়। এরপর জাহিদুলের নাটকের দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়ে যায়। সে দোলন থেকে পিছু হটতে থাকে। উপায়ান্তর না পেয়ে গত সপ্তাহে দোলন বিয়ের দাবি নিয়ে প্রেমিক জাহিদুলের বাড়িতে গিয়ে ওঠে। এরপর গ্রাম্য মাতুব্বররা নড়েচড়ে বসে। এ সময় জাহিদুল বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। মাতুব্বররা বিচারের প্রতিশ্রæতি দিয়ে আবারও সালিশে বসেন। সালিশে সেই একই বিচার, সেই একই রায়, বিয়ে হবে না। কারন জাহিদুলের পরিবার গ্রামে প্রভাবশালী। দীর্ঘ ৯ বছর পর আবারও দোলনের বাড়ি থাকা দায় হয়ে পড়েছে।
এবার দোলন সরাসরি থানায় এসে ন্যায় বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। জাহিদুল গ্রাম্য মাতুব্বরদের ইশারায় যথারীতি বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।
এ ঘটনায় দোলনের মা পিঞ্জিরা খাতুন বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমার মেয়েকে নিয়ে জাহিদুল ও মাতুব্বররা যেমন পেরেছে-তেমনভাবে খেলেছে। তিনি জানান, আমার মেয়ে দুই কুল হারিয়ে আত্মহত্যা ছাড়া কোন পথ খোলা নেই। তিনি এ ঘটনার ন্যায় বিচার চান।