আলমডাঙ্গায় হাত-পা ও মুখ বেধে ধারালো অস্ত্রদিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে হত্যা ঘটনায় ঘটনায় আলমডাঙ্গা থানায় মামলা
আলমডাঙ্গা শহরে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক স্বামী-স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আলমডাঙ্গা থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে। ২৫ সেপ্টেম্বর রবিবার রাতে নিহত দম্পতির একমাত্র সন্তান দিলারা পারভীন শিলা বাদী হয়ে ওই এজাহার দায়ের করেন। এজাহারে কাউকে নির্দিষ্ট করে আসামী করা হয়নি।
আলমডাঙ্গা শহরের চাঞ্চল্যকর বয়স্ক দম্পতি নজির উদ্দীন- ফরিদা খাতুন হত্যাকান্ডের ঘটনা মানুষের মুখে মুখে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে ঘরে ঢুকে বৃদ্ধ দম্পতিকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় এ মফস্বল শহর জুড়ে এক ধরণের অস্বস্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। চায়ের দোকানের আড্ডা দ্রæত সাঙ্গ করা হচ্ছে।
বৃদ্ধ দম্পতি হত্যাকান্ডের এখনও কোন কুলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ। করা হয়নি কাউকে গ্রেফতার। গতকাল থেকেই আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পাশাপাশি, চুয়াডাঙ্গা পুলিশ, ডিবি পুলিশ,সি আইডি, পিবি আই, র্যাবের গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন এজেন্সি নেমেছেন মাঠে। হত্যাকান্ডে জড়িতদের সনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছেন। গতকাল গভীর রাত অবধি পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন আলমডাঙ্গায় অবস্থান করেন। নিহত দম্পতির জামাই ও মেয়ের সাথে কথা বলেছেন।
চাঞ্চল্যকর ও নৃশংস এ নৃসংশ হত্যাকান্ড ঘিরে এলাকাবাসির মনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। এ ব্যাপারে তাদের নানা সন্দেহ দানা বেঁধেছে। অনেকের ধারণা এ নৃশংস হত্যাকান্ডের কারণ হতে পারে পারিবারিক, ব্যবসায়িক কিংবা জমিজমা সংক্রান্ত । এ দিকগুলি গুরুত্ব দিয়ে প্রশাসন খতিয়ে দেখছেন।
প্রসঙ্গত, আলমডাঙ্গা শহরে হাত-মুখ বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক স্বামী-স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১১ টার দিকে আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার পুরাতন বাজারের অর্পিত সম্পত্তির বাড়ি থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, নিহত নজির উদ্দীন এক সময় শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী স্বর্গীয় শীব নারায়ণ ভৌতিকার পোষ্যপুত্র হিসেবে পরিচিত। শীব নারায়নের অপার স্নেহ লাভের পর নিহত নজির উদ্দীন তার মূল্যবান সম্পত্তি জাল দলিল করে নেন। ক্ষুদ্ধ শীব নারায়ণ নজিরের বিরুদ্ধে মামলা করেন এ ঘটনায়। সে মামলা চলমান। পরবর্তিতে নজির উদ্দিন ও তার প্রতিবেশি ব্যবসায়ী অসীত কুমার মিলে শীব নারায়নের সরকারের সাথে মামলা চলমান জমি লিজ নিয়েছেন। নজির উদ্দীন ও অসীত কুমারদের শহরের মূল্যবান জমি নিজের দখলে নিতে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন। এই ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের অন্তদ্ব›েদ্বর কারণে এ হত্যাকান্ড ঘটতে পারে বলে জোর গুঞ্জন রয়েছে। পুলিশ এদিকটাও গভীরভাবে খতিয়ে দেখছে। নিহতের পারিবারিক দিকটাও তদন্তের আওতায় রাখা হচ্ছে। অনেক টাকা এবং সহায় সম্পত্তি থাকায় কারো ব্যক্তিগত লাভ হচ্ছে কিনা সেদিকটাও খেয়ার রাখছে তদন্তকারীরা।
অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, নিহতের মেয়ে দিলারা পারভীন শিলা বাদী হয়ে রবিবার রাতে মামলা দায়ের করেছেন। হত্যাকান্ডের পর থেকেই পুলিশের বিভিন্ন সংস্থা তদন্তে মাঠে আছে। হত্যা রহস্য উন্মোচনে পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা নিবিড়ভাবে কাজ করছে।