পুলিশের তাড়া খেয়ে জুয়ার আসর থেকে নদীতে ঝাপ দিয়ে সাতার না জানা যুবক নিখোঁজ
আলমডাঙ্গা ব্যুরো/ হাটবোয়ালিয়া প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গায় পুলিশের তাড়া খেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ সাঁতার না জানা এক যুবক। নিখোঁজ যুবকের নাম টোকন হোসেন (৩২)। তিনি আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া গ্রামের আদুসদ্দীনের ছেলে।
গ্রামবাসীরা জানান, ৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে ৪ যুবক গ্রামের বাঁশবাগানে তাস খেলছিলেন। সে সময় হাটবোয়ালিয়া ফাঁড়ি পুলিশের টু আই সি জাহিদুল ইসলাম সঙ্গীয় কনস্টেবল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দু'যুবককে আটক করলেও টোকনসহ বাকী দু'যুবক দৌড়ে গিয়ে পাশের মাথাভাঙ্গা নদীতে লাফ দেন। নদীতে লাফ দেওয়া দু'যুবকের একজন সুন্নত আলীর ছেলে নাজিম উদ্দীন নদী সাঁতরে ওপারে গিয়ে উঠলেও টোকন সাঁতার জানতেন না। ফলে পানিতে ডুবে যান। তবে এখনও লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সংবাদ পেয়ে বিকেলে আলমডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের একটা টিম ঘটনাস্থলে যায়। তারা লাশ উদ্ধার করতে ব্যর্থ হলে খুলনা ফায়ার সার্ভিসের নিকট ডুবুরি চাওয়া হয়েছে। ডুবুরি এসে পৌঁছলে লাশ পুণরায় উদ্ধারে অভযান চালানো হবে।
বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান লালন, আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মোহাম্মদ আব্দুল আলিম, পুলিশ পরিদর্শক অপারেশন একরামুল হোসাইন। এ ঘটনায় স্বজনদের অসন্তষ্টি ও ক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ।
"নিখোঁজ টোকনের বড় ভাই আকালী বলেন, পুলিশের তাড়া খেয়ে আমার সাঁতার না জানা ভাই নদীতে ঝাপ দিতে বাধ্য হয়েছে। আমার ভাই তাস খেলছিলো, জুয়া খেলেনি। পুলিশ আমার নির্দোষ ভাইকে নদীতে ঝাপ দিতে বাধক্স করেছে। উলিশের কারণে সে মারা গেছে। আমি এর বিচার চাই। আমি আদালতে যাব।" পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে এলাকাবাসীরও।
এলাকাবাসীর অনেকে অভিযোগ তোলেন, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ওই গ্রামের ইয়াদুলের ছেলে করিরুল ও আব্দুর রহমানের ছেলে আকসেদকে আটক করে। পরে স্থানীয় মেম্বর আসমতুল্লাহ সুজনের মধ্যস্থতায় টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মোহাম্মদ আব্দুল আলিম বলেন, ভাংবাড়িয়া গ্রামের নদীর তীরে বাঁশবাগানে জুয়া খেলা চলছে এমন সংবাদ পেয়ে হাটবোয়ালিয়া পুলিসজ ফাঁড়ির ৩ জন ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। দুজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে। বাকী দুজন দৌড়ে পালিয়ে যায়। জিয়া খেলার আলামত না পাওয়ায় আটক দু'ব্যক্তিকে স্থানীয় মেম্বারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দৌড়ে পালিয়ে যাওয়া দুজন পাশের নদীতে লাফ দেন। তাদের ভেতর টোকন নামের একজন সাঁতার জানতেন না। তিনি নিখোঁজ আছেন।