আলমডাঙ্গায় বেশি দামে ইউরিয়া সার বিক্রির দায়ে দুই সার ব্যবসায়ীকে ১ লাখ টাকা জরিমানা
আলমডাঙ্গায় ইউরিয়া সারের দাম বেশি নেওয়ায় ও মেয়াদোত্তীর্ণ কীটনাশক বিক্রির অপরাধে দুই সার ও কিটনাশক ব্যবসায়ীকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ৩ আগস্ট বুধবার দুপুরে আলমডাঙ্গা শহরে পৃথক এলাকায় দুই সার ব্যবসায়ীর দোকানে অভিযান পরিচালনা করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সজল আহমেদ।
জানা যায়, কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে রাসায়নিক সার বিক্রি করে আসছিলেন আলমডাঙ্গার অনেক স্যার ব্যবসায়ী। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আলমডাঙ্গা শহরের নতুন বাস টার্মিনাল এলাকার বিসিআই সারের ডিলার মেসার্স নুর মোহাম্মদ ট্রেডার্সে অভিযান চালিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। সে সময় ভোক্তা সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪০ ধারায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এরপর, শহরের হাফিজ মোড়ে অবস্থিত মেসার্স জনির উদ্দীন এন্ড ব্রাদার্সে গিয়েও অভিযোগের সত্যতা পায় ভোক্তাধিকার অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমান অভিযান টিম। দেখা যায় ইউরিয়া সার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দরে বিক্রয় করছেন এবং কীটনাশকের মেয়াদোত্তীর্ণ। সরকার নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে সার বিক্রি ও মেয়াদোত্তীর্ণ কীটনাশক বিক্রির অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকেও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় আলমডাঙ্গা থানার এসআই আমিনুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে, আলমডাঙ্গা এলাকায় কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বেশকিছু দিন ধরে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে সার বিক্রি করা হচ্ছে। বিশেষ করে ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) ও মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার অনেক বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। যদিও কৃষি অধিদপ্তর সারের কোনো সংকট নেই বলে জানিয়েছে।
কৃষকদের অভিযোগ, তাঁদের কাছ থেকে সারের দাম বেশি নেওয়া হলেও ডিলাররা কোনো রসিদ দিচ্ছেন না। প্রতিবাদ করলে সার বিক্রি করবেন না জানিয়ে দিচ্ছেন। এ বিষয়ে ডিলারদের দাবি, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ার কারণে বাজারে সারের কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামেই সার বিক্রি করছেন তাঁরা।
অভিযোগকারীরা জানান, আলমডাঙ্গা শহরের সার ডিলারদের গোডাউনে সার ভর্তি থাকলেও সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করা হয়েছে। আনন্দধামসহ শহরের সর্বত্র সার ডিলারদের গোডাউন ভর্তি ইউরিয়া সার। গত সোমবার থেকে সরকারিভাবে ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সোমবারের পর থেকে আজোবধি কোন ডিলারের গোডাউনে ৩/৪ ট্রাকের বেশি ইউরিয়া সার আসেনি। অথচ, অনেক ডিলারের গোডাউনে ৪/৫ হাজার বস্তা ইউরিয়া সার রয়েছে। অধিকাংশ সারই সোমবারের পূর্বে আমদানিকৃত। অথচ, পূর্বে ক্রয়কৃত সারও বর্তমানে বৃদ্ধিকৃত দামে অর্থাৎ বস্তাপ্রতি ৩শ টাকা অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
আলমডাঙ্গার গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি আলমডাঙ্গা শহরের কয়েকজন পরিচিত সার ডিলারের দোকানে গিয়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার পাননি। পরে অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধ করে সার কিনতে হয়েছে। তবে, বাড়তি দামের রসিদ দেননি।
পাঁচলিয়া গ্রামের গ্রামের কৃষক তোতা মন্ডল বলেন, কয়েক দিন আগে আলমডাঙ্গার একজন সার বিক্রেতার কাছ থেকে প্রতি বস্তা টিএসপি সার দেড় হাজার টাকায় কিনেছেন। রসিদ চাওয়ায় দোকানদার তাঁর সারের বস্তা কেড়ে নিতে চাচ্ছিলেন।