আলমডাঙ্গা সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পর এবার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে শিক্ষকদের রোষানলে পড়েছেন আলমডাঙ্গা সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান। ক্ষোভে ফেটে পড়া শিক্ষকদের সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে তিনি নগদ তিন লক্ষ টাকা দিয়ে আপাতত পার পেলেও শিক্ষকরা বলছেন প্রায় ৩১ লক্ষ টাকা প্রধান শিক্ষক আত্মসাৎ করেছেন। সম্প্রতি আলমডাঙ্গার সন্তান এক সচিব 'স্কুল সরকারিকরণে কোন দপ্তরে টাকা লাগেনি বলে জানিয়ে দিলে প্রধান শিক্ষকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা সামনে চলে আসে।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগে জানা গেছে, পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ ঘোষিত হওয়ার পরপর প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান বিভিন্ন দপ্তরে টাকা দেওয়ার নাম করে সহকারী শিক্ষকদের কাছ থেকে ৯ লক্ষ টাকা তোলেন। কিন্ত সম্প্রতি এক সচিব আলমডাঙ্গায় নিজ বাড়িতে বেড়াতে এলে শিক্ষকরা তাঁর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। এ সময় তিনি শিক্ষকদের জানান, স্কুল সরকারিকরণে কোন দপ্তরে টাকা দিতে হয়নি। এতেই প্রধান শিক্ষকের টাকা উত্তোলনের পুরানো কাসুন্দি ভেসে ওঠে।
গত ৩০ জুলাই শনিবার শিক্ষকরা একত্রিত হয়ে প্রধান শিক্ষকের ওপর চড়াও হন। তারা বিভিন্ন দপ্তরে টাকা দেওয়ার নাম করে নেওয়া তাদের ৯ লক্ষ টাকা প্রধান শিক্ষকের কাছে ফেরৎ চান। জোটবদ্ধ শিক্ষকদের রোষানলে পড়ে এক নেতার মধ্যস্থতায় প্রধান শিক্ষক রবিউল ইষলাম খান নগদ তিন লক্ষ টাকা ফেরৎ দিয়ে আপাতত মুক্তি পান। তবে শিক্ষকরা বলছেন, করোনাকালীন দুই বছর স্কুল বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি ও পরীক্ষা বাবদ প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা কালেকশন করেছেন প্রধান শিক্ষক। গত দুই বছরে এছাড়া প্রতি মাসে স্কুলের দোকান ভাড়া ৩৭ হাজার টাকারও কোন হদিস নেই দাবি করে শিক্ষকরা এসব টাকারও হিসাব চান।
সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতের উদ্ভুত ঘটনা শহরজুড়ে আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। আলমডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দূর্নীতির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তারা এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।
ওই বিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষক সিদ্দিক জানান, বিদ্যালয়ে অনেক গরীবের সন্তান পড়ে। তাদের কষ্টের টাকা একজন নয়ছয় করবেন, এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা সকল শিক্ষক এর প্রতিবাদ করেছি। আমরা চায়, আর্থিকসহ সকল ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা ফিরে আসুক।
এদিকে, প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান তার বিরুদ্ধে ওঠা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের অধিকাংশ অতিরঞ্জিত বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, স্কুল সংক্রান্ত কাজ ও আর্থিক লেনদেন সহকারী শিক্ষকরা করেন। তার কাগজপত্র আছে।