পুলিশের ভয় দেখিয়ে টাকা দাবির ঘটনায় বাদেমাজু বিধবা বৃদ্ধা নাহারের স্ট্রোকে মৃত্যুঃ সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষীদের শাস্তির দাবি
আলমডাঙ্গার বাদেমাজু গ্রামের হতভাগ্য দরিদ্র বৃদ্ধা নাহার খাতুন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিতসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গত মঙ্গলবারে একই গ্রামের চিহ্নিত ফরহাদ ওরফে ফুরহাদ মোল্লা ও মিঠু নামের দুই টাউট পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে বৃদ্ধার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। অন্যথায় বৃদ্ধার নাতিছেলেকে পুলিশ গ্রেফতার করবে মর্মে হুমকি ধামকি দিলে বৃদ্ধা অসুস্থ হয়ে এক পর্যায়ে স্ট্রোক করেন। গত কয়েকদিন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে গত ২২ জুলাই দিবাগত ভোর রাতে হেরে গেলেন তিনি।
জানা গেছে, বাদেমাজু গ্রামের মৃত শামসুর রহমানের বৃদ্ধ স্ত্রী নাহার খাতুন (৭০) একমাত্র নাতিছেলে সানমুনকে নিয়ে বসবাস করেন। গত মঙ্গলবার একই গ্রামের জবেদ আলীর ছেলে ফরহাদ ওরফে ফুরহাদ (৫৫)ও তার মিঠু (৩৩) নামের বন্ধ, দুই টাউট বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে বলেন যে “ তোমার নাতিছেলে সানমুনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ আছে যে সে মাদক সেবন ও বিক্রি করে। পুলিশকে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। না হলে পুলিশ সানমুনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে।” এক্মাত্র অবলম্বন নাতিছেলের গ্রেফতারের কথা শুনে বৃদ্ধা আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। দুই টাউটকে বৃদ্ধা তার সঞ্চিত ২ হাজার টাকা ঘর থেকে এনে দিলে তারা তা ফেলে দেন। ১০ হাজার টাকার দাবিতে অনড় থাকেন। এক পর্যায়ে তারা বৃদ্ধার নাতিছেলেকে গ্রেফতারের হুমকি দিয়ে চলে যান।
এ ঘটনার পর পর বৃদ্ধা প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে স্ট্রোক করেন। তাকে দ্রæত কুষ্টিয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত হার মাএনেছেন তিনি। গত ২২ জুলাই দিবাগত ভোর রাতে চিকিতসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। গতকাল দুপুরে জানাযা শেষে গ্রামের গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে বৃদ্ধের লাশ।
এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোন মামলা দফায়ের করা হয়নি। তবে পুলিশ বৃদ্ধার স্ট্রোকের ঘটনা জানতে পেরে পরের দিনই অভিযুক্ত ২ টাউটকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে পুলিশের ভয় দেখিয়ে বৃদ্ধার কাছে অর্থ দাবির ঘটনা জানতে পেরে ওইদিনই পুলিশ অভিযুক্ত দু ব্যক্তিকে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, পুলিশের ভয় দেখিয়ে বৃদ্ধার নিকট টাকা দাবি ও এর প্রেক্ষিতে বৃদ্ধার মৃত্যুর ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষ ব্যথিত ও ক্ষুদ্ধ। তারা আটক দুই টাউটের শাস্তি দাবি করেছেন। অনেকে জানিয়েছেন যে, এলাকায় এই চক্রটি মামলা ফ্যাসাদ, জমির জাল দলিল তৈরিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত।