চুয়াডাঙ্গা জেলায় সবচে' বেশি সাইকেল বিতরণ আলমডাঙ্গায়: আলমডাঙ্গার ১৬২ কিশোরী শিক্ষার্থিকে সাইকেল প্রদান
আলমডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৬২ কিশোরী শিক্ষার্থিকে সাইকেল প্রদান করা হয়েছে। ২০২১ -২০২২ অর্থ বছরের এলজিএসপি - ৪ প্রকল্পের অর্থে ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থিদের হাতে সাইকেল তুলে দেন আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নূর। চুয়াডাঙ্গা জেলায় আলমডাঙ্গাতে সবচে বেশি সাইকেল বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
উপজেলার ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নে ১৫ জন, বাড়াদী ইউনিয়নে ১০ জন, আইলহাঁস ইউনিয়নে ১৫ জন, বেলগাছি ইউনিয়নে ১০ জন, চিৎলা ইউনিয়নে ১০ জন, ডাউকী ইউনিয়নে ১০ জন, গাংনী ইউনিয়নে ১০ জন, হারদী ইউনিয়নে ১২ জন, কালিদাসপুর ইউনিয়নে ১০ জন, জামজামি ইউনিয়নে ১০ জন, জেহালা ইউনিয়নে ১৫ জন খাদিমপুর ইউনিয়নে ১৫ জন, খাসকররা ইউনিয়নে ১৫ জন, কুমারী ইউনিয়নে ১০ জন ও নাগদাহ ইউনিয়নে ১০ জন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া কিশোরী শিক্ষার্থির হাতে বাইসাইকেল তুলে দেওয়া হয়েছে।
হাড়গাড়ি গ্রামের কিশোরী সানজিদা আক্তার হারদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রি। প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যেতে হয় ভ্যান ভাড়া দিয়ে। শুধু টাকা খরচ যে হয় তা নয়, সময় মত ভ্যান না পাওয়ায় মাঝে মধ্যে বিদ্যালয়ে পৌঁছতে বিলম্ব হয়। দিনমজুর বাবার পক্ষে প্রতিদিন যাতায়াত খরচ দেওয়া কষ্টকর হয়ে ওঠে। এজন্য মাঝে-মধ্যে তাকে হেঁটেও তিন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে যেতে হতো।
সাইকেল পেয়ে কিশোরী সানজিদা বেশ উৎফুল্ল। সে জানায়, "সাইকেল পেয়ে আমি খুব আনন্দিত। লেখাপড়া শেষ করে চাকরি করবো যখন, আমিও তখন দরিদ্র শিক্ষার্থিকে সাহায্য করব।"
পাঁচলিয়া জামাল উদ্দীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আষ্টম শ্রেণির ছাত্রী হাসিয়া খাতুনের বাবা হাসিবুল ইসলাম বলেন, আমার সব সন্তানই পড়ালেখা করে। সংসার চালিয়ে তাদের পড়ালেখার খরচ বহন করা কঠিন। চেয়ারম্যান সাহেব আমার মেয়েকে একটি বাইসাইকেল উপহার দিয়েছেন। এতে আমার মেয়ের খুব উপকার হয়েছে।
পাঁচলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৈয়ব আলী বলেন, বাইসাইকেল বিতরণের মাধ্যমে নারী শিক্ষা ব্যবস্থাকে আ রও ত্বরান্বিত করা হলো। অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে স্কুলে আসত। ফলে যাতায়াতকারী কিশোরী শিক্ষার্থিদের দুর্ভোগের অন্ত ছিল না।
ইজামজামি উপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, অনেক গরিব শিক্ষার্থী মেধাবি হওয়া সত্ত্বেও অর্থের অভাবে স্কুলে যেতে অনীহা দেখায়। দিনমজুর বাবার পক্ষে প্রতিদিন স্কুলে যাতায়াতের ভাড়া দেওয়া কষ্টকর। বাইসাইকেল থাকলে গরিব পরিবারের সন্তানকে স্কুলে যাওয়ার ভাড়া নিয়ে ভাবতে হবে না।
আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নূর, বলেন, আমরা শিক্ষার্থিদের হাতে সাইকেল তুলে দিতে চেয়েছি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। প্রতিটি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র ও মেধাবী কিশোরী শিক্ষার্থিদের হাতে সাইকেল তুলে দেওয়া হয়েছে। এতে নারী শিক্ষা সহজ ও প্রসার ঘটবে। নারীর ক্ষমতায়ন এক ধাপ এগিয়ে যাবে।