আলমডাঙ্গায় আআবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি ও বহিতকরণে রোভিং সেমিনার
আলমডাঙ্গায় কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্পের আওতায় রোভিং সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ওই সেমিনারের আয়োজন করেন। ২০ জুন রবিবার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের সেমিনার রুমে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এখন আবহাওয়ার বোজদক পরিবর্তন ঘটছে। যার দরুণ অসময়ে বৃষ্টি, বন্যা ও ক্ষরা হচ্ছে। তাপমাত্রা ও আর্দতার পার্থক্য হচ্ছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ফসল আবাদে। আগাম আবহাওয়ার তথ্য জেনে কৃষকরা যাতে আবাদ করতে পারেন, সেজন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করেছে কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় ইউনিয়ন পর্যায়ে বৃষ্টিপাত রেকর্ড, তাপমাত্রা ও আদ্রতার পরিমাণ জানতে আবহাওয়া বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। তৈরী করা হয়েছে ‘বামিস পোর্টাল’ নামে ওয়েবসাইট। যে ওয়েবসাইট ব্যবহার করে কৃষকরা পরবর্তী ৭ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। এছাড়া কৃষকের ক্ষতি ও ঝুঁকি এড়িয়ে চাষাবাদ করে লাভবান হওয়ার জন্য নানা পরামর্শ পাবেন।
কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতিকরণ প্রকল্প ও বামিস ওয়েবসাইট সম্পর্কে কৃষকদের অবহিত করতে আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আয়োজিত ওই রোভিং সেমিনারে মূলপ্রবন্ধে উপরোক্ত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড সালমুন আহমেদ ডন , মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মারজাহান নিতু। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন উপজেলা কৃষি অফিসার হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী।
প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয় যে, কৃষি উৎপাদন টেকসই করার লক্ষ্যে কৃষকের কাছে কৃষি আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য পৌঁছে দেওয়া। এছাড়া আবহাওয়া ও জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবসমূহের সাথে কৃষকের খাপ খাওয়ানোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। একই সাথে বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত কৃষি-আবহাওয়া তথ্যপদ্ধতি প্রচলন করা ও যথোপযুক্ত তথ্য-উপাত্ত প্রণয়ন করা। কৃষি ক্ষেত্রে আবহাওয়া সংক্রান্ত ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য কৃষি আবহাওয়া এবং নদ নদীর সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কিত তথ্যাদি কৃষকের উপযোগী ভাষায় বিভিন্ন সম্প্রসারণ পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়া।
প্রধান অতিথি আলমডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন বলেন, কৃষকরা আবহাওয়ার আগাম তথ্য জেনে ফসল আবাদ করার মাধ্যমে তাদের উৎপাদন খরচ যেমন কমবে, তেমনি সম্ভাব্য ক্ষতির হাত থেকে তারা রক্ষা পাবে। এখন ঘরে ঘরে স্মার্ট ফোন রয়েছে। হয় নিজের কাছে, নয়তো, ছেলে-মেয়ে নাতি-নাতনির কাছে স্মার্ট ফোন রয়েছে। এই স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে বামিস ওয়েবসাইট কিংবা অন্যান্য অ্যাপস-ওয়েব পোর্টাল থেকে কৃষকরা আবহাওয়ার আগাম তথ্য জেনে ফসল আবাদ করে লাভবান হতে পারবেন।
বিশেষ অতিথি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড সালমুন আহমেদ ডন বলেন, কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে কৃষকদের সক্ষমতা তৈরীর মাধ্যমে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। তবেই কৃষকরা উৎপাদন খরচ ও ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারবেন। কৃষিতেও এখন ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ সুবিধার ব্যবহার করতে হবে। এজন্য আমরা এ ধরনের সেমিনারের মাধ্যমে কৃষকদের অবহিতকরণ ও সচেতন করতে চেষ্টা করছি। যাতে তারা পরিবর্তিত অবস্থার সাথে তাল মেলাতে পারে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সোহেল রানার উপস্থাপনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কৃষক সোহাগ, ওল্টু, উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা খালিদ সাইফুল্লাহ প্রমুখ।