আলমডাঙ্গায় লাল ফ্লাগ দেওয়ার পরও মালবাহী ট্রেন না থামানোয় চালক ও সহকারী চালককে মারধর
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় লাল ফ্লাগ দেওয়ার পরও মালবাহী ট্রেন না থামানোয় চালক ও সহকারী চালককে মারধর করেছেন ক্ষুদ্ধ রেললাইন শ্রমিকরা। লোকোমোটিভ মাস্টার এসএম আমিনুর রহমান ও সহকারী জুনায়েত হোসেনকে লাঞ্চিত করার বিচারের দাবিতে আলমডাঙ্গার লালব্রীজের উপর দীর্ঘ ৮ ঘন্টা ট্রেনটি থামিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনার ৮ ঘন্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার সময় এ ঘটনা ঘটে।
শ্রমিকরা জানান, আপ ও ডাউনে লাল ফ্লাগ পুঁতে বৃহস্পতিবার প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন শ্রমিক আলমডাঙ্গার রেলওয়ে লালব্রিজের ওপর কাজ করছিলেন। বেলা দেড়টার দিকে দর্শনা থেকে ছেড়ে আসা সিরাজগঞ্জগামী পাথর বোঝাই একটি মালবাহী ট্রেন লাল ফ্লাগ উপেক্ষা করে লালব্রিজের দিকে ছুটে যায়। ট্রেন না থামায় প্রাণ বাঁচাতে লালব্রীজের ওপরে থাকা শ্রমিকদের কেউ পানিতে লাফ দেন আবার কেউ কেউ ব্রীজের গার্ডারের সাথে শরীর সিটিয়ে রক্ষা পান। শেষ পর্যন্ত চালক টের পেয়ে ব্রীজের মাঝ কানে ট্রেনটি থামিয়ে দেন। এতে উত্তেজিত শ্রমিকরা চালক ও সহকারী চালককে মারধর করেন।
মালবাহি ট্রেনের লোকোমোটিভ মাস্টার এসএম আমিনুর রহমান জানান, দর্শনা থেকে ছেড়ে আসার সময় দর্শনা ও চুয়াডাঙ্গার থেকে রেল ব্রিজের লাইন সংস্কারের কোন তথ্য আমাকে দেওয়া হয়নি। আমি ট্রেনটি নিয়ে আলমডাঙ্গা রেল ষ্টেশন পার হয়ে আসার পর লাল ফ্লাগ দেখতে পায়্ দ্রæত থামাতে চেষ্টা করলেও ট্রেনটি ব্রিজের উপর গিয়ে থেমে যায়্ ব্রিজের উপর কর্মরত শ্রমিকদের হাত দিয়ে ইশারা করে সরে যেতে বলি। তার দ্রæত সরতে গিয়ে আহত হয়। পরে আমাকে ও আমার সহকারিকে মারধর করে আহত করে।
আলমডাঙ্গার স্টেশনমাস্টার তৌহিদুল ইসলাম টোকন জানান, চুয়াডাঙ্গার উর্দ্ধতন উপসহকারি প্রকৌশলী(পথ) শ্যামল কুমার দত্তের নেতৃত্বে বেশ কিছু শ্রমিক লাইনে কাজ করছিলেন। এ সময় লাল পতাকা দিয়ে সংকেত দিলেও পাথর বোঝাই মালবাহী ট্রেনটি থামাননি চালক। পরে লালব্রীজের ওপরে থাকা কর্মরত শ্রমিকরা প্রাণ বাঁচাতে নিচে ঝাঁপ দেন ও ঝুলে পড়েন। এতে আহত হন কয়েকজন শ্রমিক। উত্তেজিত হয়ে চালককে মারধর করেন শ্রমিকরা। পরে চালক মারধরের বিচার না হওয়া পর্যন্ত মালট্রেন থামিয়ে রাখেন। পাকশি থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসছেন। তারা তদন্ত করে বিষয়টি সমাধান করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। তবে এঘটনায় ট্রেন চলাচল একেবারে বন্ধ হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি। ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়নি। অপর লাইন থেকে ট্রেন চলাচল করে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
বিভাগীয় প্রকৌশলী পাকশী -১ বীরবল মন্ডল জানান, রাত ৯টার দিকে মালবাহী ট্রেনটি আলমডাঙ্গা থেকে সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। এখন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশীর ডি.টি.ও আনোয়ার হোসেন, ডিএমসি আশিষ মন্ডল, ডিএসটিই রাজিব বিল্লাহ, আরএনবি কমান্ডেন্ট মোরশেদ আলম, চুযাডাঙ্গার সহকারি প্রকৌশলী এএম হাবিবুর রহমান।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, সংকেত দিলেও চালক ট্রেন থামাননি। চালক ঘুমাচ্ছিলেন। লালফ্লাগ উপড়ে ট্রেনটি ছুটে আসতে থাকলে প্রাণ বাঁচাতে কর্মরত শ্রমিকরা ব্রীজের ওপর থেকে লাফ দেন। এসংবাদ জানতে পেরে দ্রæত ঘটনাস্থলে পুলিশের টিম পাঠানো হয়।