আলমডাঙ্গায় হাউসপুর টু বকসিপুর কুমার নদের অবৈধ বাঁধ অপসারণ : দীর্ঘদিন পর হলেও কুমার নদে পানির অবাধ প্রবাহ
আলমডাঙ্গার হাউসপুর টু বকসিপুরে কুমার নদে (মরা গাঙ) অবৈধ বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। ৯ জুন বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী, সহকারী কমিশনার ভূমি ও মৎস্য সম্প্রসারন কর্মকতার উপস্থিতিতে হাউসপুর জিকে ক্যানেলের কপাট থেকে বকসিপুর ব্রীজ পর্যন্ত দেওয়া বেশ কয়েকটি বাঁধ অপসারণ করা হয়। পরে জিকে ক্যানেলের কপাট তুলে দিলে পানির অবাধ প্রবাহের সৃষ্টি হয়।
আলমডাঙ্গার ডাউকি ইউনিয়নের হাউসপুর থেকে বকসিপুর, মাজু, ছত্রপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রাম দিয়ে প্রবাহিত কুমার নদ । এক কালের খরস্রোতা এ নদ আজ জল দস্যূদের কবলে পড়ে মৃত প্রায়। হাউসপুর থেকে বকসিপুর ব্রীজ পর্যন্ত কোন মতে এ নদ টিকে থাকলেও অবৈধ বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের কারণে পানির অবাধ প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাখা হয়। অন্যদিকে বকসিপুর ব্রীজের পর থেকে মাজু পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে পুকুর কেটে নদী দখল করে নেওয়া হয়েছে।
জেলা নদী রক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত চুয়াডাঙ্গার জেলার সকল নদীর অবৈধ বাদ দিয়ে মাছ চাষ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় কুমার নদ রক্ষার জন্য চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে বাধ অপসারণের উদ্দ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন বাঁধ অপসারণ ও অবৈধ দখল উচ্ছেদের জন্য ইতিপূর্বে সময় নির্ধারণ করে দেয়। নিদিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নূরের নেতৃত্বে, চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ রাওহার উপস্থিতিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি রেজওয়ান নাহিদ। বেলা ১১টার দিকে হাউসপুর জিকে খালের কপাট থেকে বকসিপুর ব্রীজ পর্যন্ত বেশ কয়েক জায়গায় বাঁশের বেড়া দিয়ে দেওয়া বাঁধ অপসারণ করা হয়। বাঁধ অপসারণের পর পরই হাউসপুর জিকে ক্যানেলের কপাট খুলে দিলে পানির অবাধ প্রবাহের সৃষ্টি হয়।
বাঁধ অপসারণকালে আরও উপস্থিত ছিলেন ডাউকি ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম, মৎস্য সম্প্রসারন কর্মকর্তা আব্দুল মালেক, আলমডাঙ্গা থানার এসআই সোহাগ, ইউপি সদস্য নাসিমা খাতুনসহ একদল পুলিশ ফোর্স।
বাঁধ অপসারণ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নূর বলেন, জাতীয় নদী রক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী,চুয়াডাঙ্গা জেলা নদী রক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক চুয়াডাঙ্গা জেলার সকল উপজেলার ন্যায় আলমডাঙ্গা উপজেলায় যত সরকারী খাল ও নদী আছে সেগুলোতে অবৈধ নেটপাতাসহ যত বাঁধ আছে তা অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে মোতাবেক আজকে এ কার্যক্রম শুরু হলো। মাস ধরে এটা চলবে।
এদিকে দীর্ঘদিন পর হলেও কুমার নদের কিছু অংশের অবৈধ বাঁধ অপসারণ করায় এলাকার মানুষ খুশি হয়েছেন। অনেকেই প্রশাসনকে এ কাজের জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন। তবে বকসিপুর ব্রীজের পর থেকে বিভিন্ন স্থানে নদী দখল করে পুকুর কেটে নদীর পানি প্রবাহ বন্ধ করা চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবন্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মানুষ।