সমালয় পদ্ধতিতে আবাদে কমেছে খরচ ও কষ্ট, বেড়েছে উৎপাদন জেলা প্রশাসক
আলমডাঙ্গায় সমালয় পদ্ধতিতে বোরো ধান আবাদে উৎপাদন খরচ ও শ্রম কমেছে। পক্ষান্তরে বেড়েছে উৎাপাদন। ফলে এ পদ্ধতিতে আবাদে উৎসাহ দেখাচ্ছেন অনেক কৃষক। এই আধুনিক পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি, তা ক্ষেতে রোপণ এবং ধান কেটে ঘরে তোলার কাজটিও করা হচ্ছে যন্ত্রের সাহায্যে। ফলে শ্রমিক সংকটসহ নানা প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে সময় মত ফসল ঘরে তোলা সহজ ও নিরাপদ হয়েছে। এ প্রকলের আওতায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রকল্পভূক্ত কৃষকদের ধানের বীজ থেকে শুরু করে বীজতলা তৈরি, চারা রোপণ, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ এবং সর্বশেষ ধান কেটে ঘরে তোলার কাজটিও করে দিচ্ছে। আলমডাঙ্গা কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহার সহজ করতে ৫০ একর জমিকে একত্রিত করে সমালয় পদ্ধতিতে ধান চাষ করা হয়। চলতি মৌসুমের ৫ ফেব্রæয়ারি যন্ত্রের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। তার আগে বিশেষ ট্রে-তে চারা তৈরি করা হয়।
উপজেলার ডাউকী ইউনিয়নের মাজু গ্রামে ৫০ একর জমিতে সমালয় পদ্ধতিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। সোমবার ২৩ মে হারভেস্টার মেশিনের সাহায্যে ধান কাটা শুরু করা হয়।
ধান কাটা উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, আমরা যারা চাকরি ও অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত, তাদের খাদ্যের যোগান দেন কৃষকরা। আমাদের দেশের মাটি অত্যন্ত উর্বর। যেখানে ফলের বীজ ফেলে রাখি না কেন তাতে চারা গজায়। কৃষি আমাদের দেশের পাণশক্তি। এই কৃষিকে এগিয়ে নিতে হবে। কৃষিতে প্রযুক্তির ছোয়া অনেক আগেই লেগেছে। এক সময়ে মানুষ কায়িক শ্রম করে ধান আবাদ করতো। এখন খুব অল্প খরচ ও সময়য়ে যন্ত্র ব্যবহার করে সহজেই আবাদ করা যাচ্ছে। উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা আমাদের সাফল্য। আমাদের কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি বিজ্ঞানিরা এ জন্য কাজ করছেন। আমাদের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি কৃষক, তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানায়। কৃষকদের কারণে আমাদের দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠছে।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নূর, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু মুসা, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. সালমুন আহমেদ ডন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মারজাহান নিতু, চুয়াডাঙ্গা পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলা উদ্দিন হেলা, চুয়াডাঙ্গা রেডক্রিসেন্টের সাধারন সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শাহান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক মাসুদ রানা তুহিন, ডাউকি ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার হোসেন শহীদ সরোওয়ার্দী। এসময় তিনি বলেন, হারভেস্টার মেশিনের সাহায্যে ধান কাটতে পেরে কৃষকরা দ্রæত সময়ে ফসল ঘরে তোলার সুযোগ পাচ্ছেন। সময় ও উৎপাদন খরচ কমে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে বীজ, চারা তৈরি , রোপণ ও ফসল কেটে ঘরে তুলে দেওয়া হচ্ছে। কৃষকরা শুধু সেচের পানি ও জমি চাষের খরচ বহন করেছেন। পদ্ধতিতে বিস্তীর্ণ জমি একত্রিত করে একই সময়ে একই সঙ্গে আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে চাষাবাদের আওতায় আনা হয়।
কৃষি সম্প্রসারন অফিসার সোহেল রানার উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন কালিদাসপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা শেখ সেলিম, কৃষক সিদ্দিক আলী, নাহিদ, উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা নজরুর ইসলাম, পাপিয়া খাতুন, প্রমুখ।