অনিয়ম ও দুর্নিতী করেও বহাল তবিয়তে ঝিনাইদহ অগ্রণী ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা!
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ- অনিয়মসহ নানা দুর্নিতী করেও বহাল তবিয়তে রয়েছে ঝিনাইদহ অগ্রণী ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা। এমনকি ওই দুই কর্মকর্তার হয়রানি, নির্যাতনের শিকার হচ্ছে ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। বছরের পর বছর একই কর্মস্থলে থাকায় জড়িয়ে পড়েছে ঘুষ ও দুর্নীতিতে। অগ্রণী ব্যাংক ঝিনাইদহ আঞ্চলিক কার্যালয়ের সিনিয়র অফিসার নজরুল ইসলাম ও ঝিনাইদহ শাখার ক্যাশ অফিসার বিশ্বজিৎ কুমার সাহা’র বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, নজরুল ইসলাম ও বিশ্বজিৎ কুমার সাহা চাকুরীবিধি লঙ্ঘন করে দীর্ঘদিন ধরে একই কার্যালয়ে কর্মরত আছেন। যে কারণে প্রভাব খাটিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হয়রানি করে চলেছে। অভিযোগে জানা গেছে, অগ্রণী ব্যাংক ঝিনাইদহ আঞ্চলিক কার্যালয়ের সিনিয়র অফিসার নজরুল ইসলাম প্রায় ৫ বছর যাবত একই স্থানে কর্মরত আছেন। কিছুদিন আগে হামদহ শাখায় বদলি হয়ে যোগদানের পরদিন থেকে আবারো আঞ্চলিক কার্যালয়ে ফিরে আসেন। তিনি অফিসে না এসেও ব্যাকডেটে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন।
গত ১৫ ফেব্রæয়ারি টাকার বিনিময়ে হামদহ বাসষ্টান্ড শাখায় সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যাক্তির প্রায় ১৪ লাখ টাকা ঋণের ভূয়া ফিজিবিলিটি রিপোর্ট দিয়ে ঋণ বিতরণের চেষ্টা করেন। বিষয়টি ব্যাংকের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে কর্তৃপক্ষ ঋণ বিতরণ বন্ধ করে দেয়। এমন অনিয়ম করলেও তার বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা। যে কারণে তিনি দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। গত ২০ ও ২৩ জানুয়ারি হামদহ শাখায় অফিস না করেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে জোরপুর্বক। গ্রহণ করে লাঞ্চকুপন। অফিসে এসেছিলেন কি না তা সিসিটিভির ফুটেজ প্রমাণ করে। এদিকে ঝিনাইদহ অগ্রনী ব্যাংক লিঃ এর ক্যাশ অফিসার বিশ্বজিৎ কুমার সাহার বিরুদ্ধে রয়েছে আরও গুরুতর অভিযোগ। আঞ্চলিক কার্যালয়ের পোষ্টিং দেখিয়ে তিনি পুনরায় রিলিভিং ডিউটি পালন করছেন।
৩ বছর এক কার্যালয়ে কর্মরত থাকার নিয়ম থাকলেও তিনি একই স্থানে ৪ বছর রয়েছেন। অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে চাকুরী করলেও তিনি ক্যাশ কাউন্টারে বসেন না। প্রভাব খাটিয়ে তিনি ক্যাশ রেমিটেন্সের দ্বায়িত্ব পালন করছেন। যেখান থেকে তিনি প্রতিদিন ৫’শ টাকা হারে ভাতা গ্রহণ করছেন। অফিসার সমিতির ব্যানারে প্রভাব খাটিয়ে প্রায় ২ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অঞ্চল ও অঞ্চলের বাইরে বদলি করিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, বিশ্বজিৎ কুমার সাহার চাহিদা মোতাবেক ঘুষ না দিলে তাদেরকে হয়রানী করা হয়। গত ৩ বছর ব্যাংকের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হয়েছে।
ঢাকা কলেজে লেখাপড়া করাকালীন সময়ে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদের নেতা ছিলেন। ছাত্রদল নেতা হয়ে এখন আওয়ামী লীগের লোকজনকে হয়রানি করছে তিনি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তার কোন সত্যতা নেই। অফিসে এসে আমার স্যারের সাথে কথা বলেন। বিশ্বজিৎ কুমার সাহা বলেন, আপনাদের সাথে ফোনে কোন কথা হবে না। পারলে ব্যাংকে আসেন। সামনা-সামনি কথা হবে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ অগ্রণী ব্যাংক আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ মহা ব্যবস্থাপক মানস কুমার পাল বলেন, ব্যাংকের অভ্যন্তরীন বিষয় নিয়ে আমরা বুঝব। এটা নিয়ে বাইরের কারও মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই। বিষয়টি নিয়ে অগ্রণী ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আনোয়ারুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। ডিজিএমকে বলেছি তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।