শিক্ষকের উত্ত্যক্তে প্রবাসির রূপবতী স্ত্রীর আত্মহত্যা মামলায় ৮ জনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা

আলমডাঙ্গার কামালপুর গ্রামে উত্ত্যক্তের কারণে প্রবাসীর রূপবতী স্ত্রীর আত্মহত্যার ঘটনার মামলায় ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রবাসীর স্ত্রীর বাবা বাদী হয়ে শিক্ষক শাকিলসহ কামালপুর গ্রামের ৮ জনকে আসামি করে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২৫ ফেব্রæযারি শুক্রবার ভোরে উপজেলার কামালপুর গ্রামে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। চিহ্নিত ওই শিক্ষকসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল ঘুরে জানা যায়, কামালপুর গ্রামের নাজমুল ইসলাম গত প্রায় ৫ মাস পূর্বে সৌদি আরব গেছেন। ৫ বছরের শিশুকন্যা নিয়ে স্বামীর বাড়িতে থাকেন রূপবতী স্ত্রী সোনিয়া খাতুন (২২)। আগে থেকেই রূপবতী সোনিয়া খাতুনের উপর নজর পড়েছিল একই গ্রামের শাকিল হোসেনের। কামালপুর গ্রামের মঙ্গল আলীর ছেলে শাকিল হোসেন (৪৫) আঠারোখাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ার পর থেকেই শাকিল হোসেন প্রতিবেশি ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে খুব বেশি উত্ত্যক্ত করছিল।
গ্রামসূত্রে জানা যায়, স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ার পর সোনিয়া খাতুনের সাথে শাকিল হোসেন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত এক মাস পূর্ব থেকে সোনিয়া খাতুন সে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসে। শাকিল হোসেনের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন শাকিল হোসেন। তার সাথে সোনিয়ার পরোকীয়ার সম্পর্ক আছে বলে গ্রামে প্রচার শুরু করে শাকিল। পরে শাকিলের সাথে একই গ্রামের মৃত খবিরের ছেলে বয়স্ক কলিম উদ্দীন, ফনির ছেলে রনি, আবুল কাশেমের ছেলে উজ্জ্বল, মনির ছেলে শাওন সোনিয়াকে উত্ত্যক্ত করতো। এই ৫ ব্যক্তির অপকর্মের বিষয়ে গ্রামের অনেকেই এখন খোলাখুলি বলাবলি করছেন। এ সব কথা শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে বললেও তারা কোন পদক্ষেপ নেননি। বরং মেয়ের শ^শুর সিরাজুল, শ^াশড়ি ছায়েরা খাতুন ও মেয়ের জা মুক্তা খাতুন এসব কথা নিয়ে সোনিয়াকে ভৎসনা করতে থাকে। এরই এক পর্যায়ে ২৫ ফেব্রæয়ারি ভোরে ঘরের আড়াই গলায় ওড়নায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। এ আত্মহত্যার পর পর অভিযুক্ত শিক্ষক শাকিলসহ উক্ত ৬ ব্যক্তিই নিরুদ্দেশ রয়েছেন। এদের সকলকেসহ শ্বশুর সিরাজুল ইসলাম ও শ্বাশুড়ি ছায়েরা খাতুন ও জা মুক্তা খাতুনকেও আসামি করা হয়েছে।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাকিল হোসেন বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক। ৭/৮ বছর পূর্বে শেফালী খাতুন নামের পাঁচলিয়া গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছেন। শেফালী খাতুনও শিক্ষক। তারা স্বামী-স্ত্রী আঠারখানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকুরী করেন।
এ ঘটনায় সোনিয়া খাতুনের বাপ সকির উদ্দীন বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা দায়ের করেছে।