২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গার বেলগাছি গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় ৪ জন গুরুতর জখম

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
নভেম্বর ১৯, ২০২১
120
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

আলমডাঙ্গার বেলগাছি গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় ৪ জন গুরুতর জখম হয়েছেন। আহতদের সকলেই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হাসান চঞ্চলের সমর্থক। তাদের ৩ জনকে উদ্ধার করে আলমডাঙ্গার হারদী স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আশরাফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাস্তা নিয়ে এ হামলার সূত্রপাত হলেও নেপথ্যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এই হামলা করা হয়েছে বলে গ্রামবাসীদের অনেকে মন্তব্য করেছেন। তবে এ মন্তব্যেরত সাথে অনেকেই দ্বিমত পোষণ করেছেন।


ঘটনাস্থলে ঘুরে জানা যায়, বেলগাছি গ্রামের বোমা কালামের বাড়ির সামনে তার ব্যক্তিগত অফিস আছে। বুধবার সন্ধ্যার পর তিনি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হাসান চঞ্চলের কয়েকজন সমর্থক্কে নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। সে সময় অফিসের পাশের বাড়ির আব্দুল মান্নানের সাথে কালামের মায়ের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আব্দুল মান্নানের ছেলেদের সাথে কালামের বিতন্ডা হয়। সে সময় আব্দুল মান্নানের ছেলে জাফরের নেতৃত্বে এক দল যুবক লাঠি দিয়ে হামলা করে কালামসহ তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন যুবকের উপর। এ সময় রক্তাক্ত জখম হয়েছেন বোমা কালাম ওরফে কালাম, কালামের ভাই সেন্টু, বকুলের ছেলে প্লাবন, রবিউলের ছেলে আশরাফুল, সাইফুল্লাহ। তাদেরকে বাঁচাতে গিয়ে কালামের মা, কাশেম, কালামের মেয়ে পূর্ণিমাও আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে হারদী স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে কেউ কেউ বাড়িতে ফিরলেও কালাম, কালামের মাসহ ৩ জন এখনও হারদী স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। আশরাফুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে গতকাল কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।


এ হামলার ঘটনাকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিরুল ইসলাম মন্টুর সমর্থক্অরা পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে। আব্দুল মান্নানের ছেলে জাফর ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে নেতৃত্ব দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এমন দাবি কালাম পক্ষের।
অন্যদিকে, জাফরের স্ত্রী মধুবালা জানান, কালাম পক্ষের দাবি অসত্য। তিনি দাবি করেন, সরকারি জমি দখল করে বোমা কালাম নিজে পাকা অফিস নির্মাণ করেছেন। সেই অফিসে যাওয়ার পাকা রাস্তা নির্মাণ করেছেন খাস জমিতে। জাফরের পরিবারের লোকজনকে সেই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। কালাম ঘটনার সন্ধ্যায় আব্দুল মান্নানকে প্রথমে রাস্তা দিয়ে যেতে বাধা দেন। এই নিয়ে তর্কের এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। সে সময় মধুবালাও আহত হয়েছেন।


স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মন্টু জানান, এ মারামারির ঘটনা মোটেও নির্বাচন কেন্দ্রিক না। এটা মাদক ব্যবসায়ী কালামের সাথে তাদের প্রতিবেশীদের বিরোধ। এ ঘটনাকে নির্বাচন কেন্দ্রিক দাবি করার কোন সুযোগ নেই।


অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুল হাসান চঞ্চল জানান, এটা পরিকল্পিতভাবে মন্টুর সমর্থকরা আমার কর্মীদের উপর আক্মির্ষিকভাবে হামলা চালিয়েছে। বোমা কালাম খারাপ ব্যক্তি। কিন্তু তাকে খারাপ তৈরি করেছে লালন করেছে এতদিন মন্টু। এখন তার নির্বাচনে কাজ করছে না বলে ক্ষোভে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।


নাম প্রকাশে একাধিক এলাকাবাসী জানান, বেলগাছি গ্রামের চিহ্নিত সন্ত্রাসী বোমা কালাম। তিনি চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। খাস জমি দখল করে সেখানে পাকা অফিস তৈরি করেছেন কালাম। অফিসে তিনি বঙবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টাঙিয়ে রেখে সেখানে বসে প্রতিদিন রাতে নেশাখোরদের নিয়ে নেশার আড্ডা জমায়। লাউড ভলিয়মে স্পিকারে গান বাজায়। প্রতিবেশ্রীরা প্রচন্ড বিরক্ত হলেও সন্ত্রাসী কালামের ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারেন না। জাফরের মা ক্যান্সারের রোগী। পাশে আরেক যুবক ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। তিনি পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। এখন বাড়িতে চিকিৎসাধীন। কালামের অফিসে লাউড ভলিয়ুমে বাজানো গানে তারও প্রচন্ড মাথায় যন্ত্রণা হয় বলে জানান। গত বুধবার সন্ধ্যায় জাফরদের সাথে কালামের গোলযোগ হলে প্রতিবেশীরা সকলে মিলে জাফরের পাশে দাঁড়িয়ে য়ায়। ফলে কালামকে শায়েস্তা করার মোক্ষম সুযোগ ঘটে।
ঘটনার রাতেই পুলিশ সজিব নামে এক যুবককে আটক করেছে। সজিব বেলগাছি গ্রামের জিন্নাত আলীর ছেলে।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram