বই আটকে রেখে ঘুষ আদায় গ্রাহকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ- ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ নলডাঙ্গা পোষ্ট মাস্টার কেয়া খাতুনের বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্য ও গ্রাহকদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। যশোর ডেপুটি পোষ্ট মাস্টার জেনারেলের দপ্তরে পাঠানো অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে. পোষ্ট মাষ্টার কেয়া খাতুন ফিক্সড ডিপোজিট (এফডি) একাউন্টের মেয়াদ উত্তীর্ন হওয়ার পর ঘুষ ছাড়া টাকা দেন না। তাছাড়া তিনি ফিক্সড ডিপোজিটের বই আটকে রেখে গ্রাহকদের হয়রানী করেন।
ঘুষ নিয়ে আবার অনেকের টাকা ফোরতও দিয়েছেন। কালীগঞ্জের খয়েরতলা গ্রামের আলা আমিন নামে এফডি-৩০৯৩৯ একাউন্টের গ্রাহক অভিযোগ করেন তার ৩ বছর মেয়াদী ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্টের টাকা তুলতে বই আটকে রেখে একাধিক বার হয়রানী করেন। এরপর চা মিষ্ট খাওয়া বাবদ তিন হাজার টাকা দাবী করেন।
টাকার বিশেষ প্রয়োজন থাকায় তিনি কেয়া খাতুনের দাবীকৃত ৩ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে টাকা উত্তোলন করেন। কালীগঞ্জ কলেজপাড়ার অসিত কুমার ঘোষ নামে এফডি-২৫০৫৪ একাউন্টের গ্রাহক অভিযোগ করেন তার এফডি বইয়ের এক লাখ টাকা ৬ বছর ও পঞ্চাশ হাজার টাকা ৪ বছর মেয়াদ পুর্ন হলে তিনি টাকা তুলতে যান। পোষ্ট মাস্টার কেয়া খাতুন তাকে দুই লাখ ৩১ হাজার টাকা ৪২০ টাকা দেন। পরে হিসাব করে দেখেন তাকে ৯ হাজার টাকা কম দেওয়া হয়েছে। টাকা দাবী করলে কেয়া খাতুন উল্টো আমার কাছে ২৫২০ টাকা পাবেন বলে টাকা আত্মসাতের ঘটনা ধামা চাপা দিয়ে তাড়িয়ে দেন।
একই ভাবে আনোয়ার হোসেন, রেশমা খাতুন, শাকিল, গনেশ, রিতা, মনির ও গোপাল নামে ব্যক্তিরাও হয়রানীর শিকার হন। এর মধ্যে রেশমা খাতুন ও আনোয়ারের কিছু টাকা ফেরৎ দিয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। বড় তালিয়ান গ্রামের আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করেন, নলডাঙ্গা পোষ্ট মাস্টার কেয়া খাতুনের বই আটকে রেখে ঘুষ বানিজ্য, আর্থিক কেলেংকারী ও গ্রাহকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহরের কারণে নলডাঙ্গা পোষ্ট অফিসে ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। মানুষ তার নিষ্ঠুর আচরণ ও হয়রানীর কারণে অফিসে যেতে ভয় পায়। স্টাফদের সঙ্গেও তিনি সব সময় খারাপ ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। কেয়া খাতুন যখন শৈলকুপায় ছিলেন সেখানেও এ ধরণের কর্মকান্ড করেছিলেন বলে অভিযোগ।
বিষয়টি নিয়ে নলডাঙ্গার পোষ্ট মাস্টার কেয়া খাতুন তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এরকম কিছুই পোষ্ট অফিসে হয় না। অনেক সময় গ্রাহকের টাকা কম বেশি যায়। আবার ক্যাশে টাকাও থাকে না। তিনি বলেন আমি কারো কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা গ্রহন করিনি। ঝিনাইদহ পোষ্ট অফিসের পরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম জানান, কোন গ্রাহক অভিযোগ করলে অবশ্যই সেটা তদন্ত হবে। তিনি বলেন বিভাগের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয় এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকাই ভালো। তবে কেয়া খাতুনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন কিছু নয়।