স্বামীর পরকীয়ায় বাঁধা দেওয়ায় অন্ত:সত্বা স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টা: স্বামী গ্রেফতার

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বাড়ান্দী গ্রামে স্বামীর পরকীয়ায় বাঁধা দেওয়ায় অন্ত:সত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে পুলিশ পাষন্ড স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৫ আগস্ট বুধবার বিকালে নির্যাতনের শিকার গৃহবধুকে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এজাহার সুত্রে জানা যায়, জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বাড়ান্দী মাঠপাড়ার মৃত জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদোসী (২৪)“র সাথে গত ১১ বছর আগে বিয়ে হয় একই গ্রামের মির্জাপাড়ার ওয়াজেদ আলী খানের ছেলে রফিকুল ইসলাম(৩২)। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে যৌতুকের দাবিতে নানা ভাবে নির্যাতন করতে থাকে । এরই মধ্যেই তাদের সংসার জীবনে ৯ বছরেরর একটি কন্যা রয়েছে।
মেয়ের অমানসিক নির্যাতন দেখে সহ্য করতে না পেরে বাবা জাহাঙ্গীর কয়েকমাস আগে মারা যান।সে ঘটনায় আইন আদালত করা হলেও মেয়ের ভবিষ্যতের কথা করে মামলাটি আপস নিস্পত্তি হয়ে যায়। এদিকে রফিকুল ইসলাম ঘরে স্ত্রী সন্তান রেখে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে।
স্বামীর পরকীয়া প্রেমের ব্যাপারটি স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদোসী প্রতিবাদ করে। এক পর্যায়ে রফিকুল লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে এবং টাকা দিতে না পারলে স্ত্রীকে তালাকের হুমকি দেয়।৫ আগস্ট বুধবার বিকালে যৌতুকের টাকা চাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির হতে হতে স্বামী শ্বশুড় মিলে অন্ত:সত্বা জান্নাতুল ফেরদোসী কে মারপিট করে। গৃহবধু জান্নাতুল ফেরদোসী মারাত্মক ভাবে আহত হয়ে পড়লে তারা তাকে বাড়ীর পার্শ্ববর্তী মাঠের মধ্যে ফেলে আসে।
নির্যাতিত গৃহবধুকে পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে জীবননগর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এদিকে স্বামী রফিকুল ইসলাম তার পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে রায়পুর বারইপাড়াই ফুর্তি করা কালে জনতার হাতে আটক হয়। এলাকাবাসী তাদেরকে থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করেন।
গৃহবধু জান্নাতুল ফেরদোসের মা রোজিনা খাতুন ও মামা আব্দুস সাত্তার বলেন,রফিকুল ইসলাম আমাদের কাছে যৌতুকের তিন লাখ টাকা না পে্য়ে আমাদের মেয়ে জান্নাতুলকে অমানসিক নির্যাতনের পর ঘটনা ধামা চাপা দিতে মেয়েকে তারা অজ্ঞান করে মুখ বিষ ঢেলে দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডর মেম্বার আব্দুল মালেক বলেন,রফিকুল ইসলামের নৈতিক চরিত্র খুবই খারাপ। তার বিরুদ্ধে ইতিপুর্বেও পরকীয়া প্রেমের অভিযোগ ছিল। এ অবস্থায় আবার তার বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ ওঠে এবং তার স্ত্রী প্রতিবাদ করার কারনে বুধবার বিকালে মারপিট করে মাঠের ভিতর ফেলে রাখেবলে জানতে পারি। রফিকুল তার পরকীয়া প্রেমিকসহ জনতার হাতে ধরা পড়ে। কিন্তু পুলিশ রফিকুলকে আদালতে চালান দিলেও পরকীয়া প্রেমিকাকে রহস্যজনক কারনে ছেড়ে দিয়েছে।
জীবননগর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. হেলেনা আক্তার নিপা বলেন,গৃহবধুকে জান্নাতুল ফেরদোসকে শারীরিক ভাবে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেলেও বিষের কোন সিম্টম পাওয়া যায়নি।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, গৃহবধু জান্নাতুল ফেরদোসের মা রোজিনা খাতুন ঘটনার ব্যাপারে বাদী হয়ে রফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে একটি দিয়েছেন। ঘাতক স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।