৮ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোবারকগঞ্জ চিনিকলে এক কেজি চিনির উৎপাদন খরচ ১২৩ মিলিগেটে বিক্রি ৬৩!

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
সেপ্টেম্বর ২, ২০২১
110
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 


জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ- ঝিনাইদহের একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান মোবারকগঞ্জ চিনিকলে (মোচিক) প্রতি কেজি চিনিতে এখন লোকসান ৬০ টাকা। আর এক কেজি চিনি উৎপাদন করতে ব্যায় হচ্ছে ১২৩ টাকা। ১২৩ টাকার উৎপাদিত চিনি মিলগেটে বিক্রি করা হচ্ছে ৬৩ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজিতে মিলটির লোকসান গুনতে হচ্ছে ৬০ টাকা। অন্যদিকে মিল গেট থেকে ২০ গজ দুরে গেলে সেই একই চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। মোবারকগঞ্জ চিনি কলের চিনি উৎপাদন ও বিপনন বিভাগ সুত্রে এ সব তথ্য জানানো হয়।

মোচিক সুত্রে জানা গেছে, ২০২০-২০২১ আখ মাড়াই মৌসুমে ৬৩ টাকায় বিক্রিত এই এক কেজি চিনি উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে ১৮২ টাকা। ১৮২ টাকার খরচায় উৎপাদিত এক কেজি চিনিতে ব্যাংক সুদ রয়েছে ৫৯ টাকা। আর সুদ বাদ দিয়ে এক কেজি চিনি উৎপাদন খরচ হয়েছে ১২৩ টাকা।

এ মাড়াই মৌসুমে মিলটি চিনি উৎপাদন করে ৭ হাজার ৮৬২ মেট্রিক টন। এর মধ্যে মিল গোডাউনে এখনো অবিক্রিত রয়েছে ২ হাজার ৪৯৪ মেট্রিক টন চিনি। এই পরিমাণ চিনি উৎপাদন করতে মিলের লোকসান দিতে হয়েছে প্রায় ৭৬ কোটি টাকা। ্আর মোট এই লোকসানের মধ্যে অর্ধেকের বেশি ব্যাংক সুদ রয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। এর আগের বছর ২০১৯-২০২০ মাড়াই মৌসুমে এ লোকসানের পরিমাণ ছিল ৮৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ফলে ২০২০-২০২১ মৌসুমে লোকসানের পরিমাণ কমেছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। ওই বছর এক কেজি চিনিতে উৎপাদন খরচা পড়েছিল ১৯৩.৫৮ টাকা। এবং মিলগেটে চিনির বিক্রিত মূল্য ছিল ৬০ টাকা। এই ৬০ টাকায় বিক্রিত এক কেজি চিনি উৎপাদন করতে মিলটির সুদ গুনতে হয়েছিল ৬৯.৫৮ টাকা। মিলের শেষ দুই মাড়াই মৌসুমের উৎপাদন খরচের চিত্রে দেখা গেছে, ২০১৯-২০২০ মাড়াই মৌসুম থেকে ২০২০-২০২১ মাড়াই মৌসুমে উৎপাদন খরচ কমেছে প্রায় ১০ কোটি টাকা।

২০১৮-১৯ মাড়াই মৌসুমে মিলটিকে এক কেজি চিনি উৎপাদন করতে ব্যাংক সূদ দিতে হয়েছিল ৭৮.১১ টাকা। ওই বছর মিলটি এক কেজি চিনি উৎপাদন করতে সূদ বাদে খরচ হয় ১৩৩.০৩ টাকা আর সূদসহ উৎপাদন ব্যয় হয় ২১১.১৪ টাকা। ২১১ টাকায় উৎপাদিত চিনি বাজারে বিক্রি হয়েছিল ৫৫ টাকায়। মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মোশারফ হোসেন বলছেন, পুরাতন যন্ত্রপাতি, কৃষক পর্যায়ে আখের মূল্য বৃদ্ধি, জনবল সংকট, শ্রমিক মজুরী বৃদ্ধি, দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি ও উৎপাদন ব্যয়ের সাথে সঙ্গতিহীন চিনির মূল্য নির্ধারনের ফলে লোকসান বাড়ছে। সাথে মোটা অংকের ব্যাংক ঋণের সুদ উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণ। অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সময় মিলটিতে অনিয়ম দুর্নীতি করা হয়।

আখ কেনা থেকে চিনি উৎপাদন পর্যন্ত চুরি হয়। শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নামে নানা খাতে চলে লুটপাট। কিন্তু প্রশাসনিক ভাবে শোকজ ও সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও কোন স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় না। উল্লেখ্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় ১৯৬৫ সালে ৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নেদারল্যান্ড সরকার মোবারকগঞ্জ চিনিকলটি স্থাপন করে। এ শিল্প প্রতিষ্ঠানে ১১৮৪ পদের বিপরীতে কর্মকার্তা ও শ্রমিক কর্মচারী রয়েছে ৬৭৯ জন।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram