ঝিনাইদহে একটি হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের ৭০টি পরিবার ঘর বাড়ি ছাড়া!
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ- ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় দোগাছী ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামে একটি হত্যা কান্ডকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের ৭০টি পরিবার ২৫দিন যাবৎ বাড়ি ছাড়া রয়েছে। হত্যা মামলার আসামীদের বেশ কয়েকজনের বাড়ি ঘরে অগ্নি সংযোগ, গরু ছাগল ছিনতায়, স্যালো মেশিন, টিউবয়লের মাথা এবং বাড়ির আসবাব পত্রসহ সকল কিছু লুটপাট করে নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষরা বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
হত্যা এবং হত্যা পরবর্তি সহিংসতার অভিযোগে উভয় পক্ষের ৪টি মামলা হয়েছে। উল্লেখ্য গত ২৯ জুলাই পুটিয়া গ্রামের মসজিদে মাগরীবের নামাজের একামত দেওয়াকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রæতার জের ধরে গ্রামের দুটি পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তি ৩০জুলাই সকালে সংঘর্ষ চলা কালে মোদাচ্ছের হোসেন মোল্লা (৫৫) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় একই দিনে থানায় একটি হত্যা ও নাশকতার মামলা হয়। এই মামলায় প্রধান আসামী ওমর আলীসহ ১১জন আসামী আত্মসমার্পন করেন। তারা এখনো জেলা হাজতে রয়েছে। হত্যা মামলার পরে গ্রামে শুরু হয় লুটপাট, অগ্নি সংযোগ এবং প্রতিপক্ষের উপর হামলা। একই গ্রামের ইবনে মিলন, মোফাজ্জেল হোসেন, তাহের মোল্লা, রাশেদ মোল্লা, হাসিব মোল্লা, মোকাদ্দেছ, রইচ, নজির, ইমরান, জাকিরসহ সংঘবদ্ধ একটি দল জয়নাল , মিল্টন, পাতা ও ওমর আলীসহ অনেকের বাড়িতে হামলা চালায় এবং অগ্নি সংযোগ করে বাড়ির মালামাল পুড়িয়ে দেয়।
এই হামলায় নারী শিশুসহ বেশ কয়েকজনকে আহত করে গ্রাম ছাড়া করে। পরবর্তিতে হামলার ভয়ে তারা আর গ্রামে ডুকতে পারছে বলে জানান। হামলা এবং সহিংসার ভয়ে গ্রামের ৭০টি পরিবার ২১/২২দিন যাবৎ বাড়ি ছাড়া রয়েছে। সোমবার সরেজমিনে গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের একটি পক্ষের প্রায় ২০টি পরিবারের কেউ বাড়িতে নেই। তাদের বাড়িতে কোন মালামাল, পুরুষ, মহিলা কাউকেই খুজে পাওয়া যায়নি। গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে জানতে চাইলে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন হামলার ভয়ে তারা বাড়ি ছাড়া রয়েছে। গ্রামে ডুকলেই তাদের উপর হামলা করা হবে বলেও অনেক মহিলারা জানান। জয়নাল, মিল্টন, এবং পাতার বাড়িতে আগুন দিয়ে কিছু অংশ পাড়িয়ে ফেলা হয়েছে বলে দেখা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া গ্রামে ফিরে যাওয়ারমত অবস্থা নেই বলেও জানান অনেকে। ভুক্তভোগি মোছাঃ লালমতি বেগমের একটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রফিক জানান নাশকতা যা ঘটেছে তা হত্যার পর পরই হয়েছে পরে আর কোন ভাংচুর বা নাশকতা হয়নি। যারা মামলার সাথে জড়িত নয় তাদের কে আমরা গ্রামে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। যেহেতু বিষয়টি এখন বিচারাধীন রয়েছে সেহেতু নতুন কোন সহিংসার সৃষ্টি না করে প্রশাসনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ভাবে উভয় পক্ষের সহ-অবস্থানের দাবি জানান অনেকে।