আলমডাঙ্গায় প্রাইভেটকার তল্লাশি করে ২ কেজি ৫৮৫ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধারঃ আটক ৩
আলমডাঙ্গায় অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা সোনা চোরাচালান চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় তাদের একটি প্রাইভেটকার তল্লাশি করে প্রায় ২ কেজি ৫৮৫ গ্রাম সোনার গহনা উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা হয়েছে প্রাইভেটকারটি। ১৮ আগস্ট বুধবার বিকেল ৩ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কের আলমডাঙ্গা পৌর সিমানা গেটের বন্ডবিল গেইট এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন- প্রাইভেট কারের মালিক চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানার শ্যামপুর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ বাপ্পী (৩০), চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বনানী পাড়ার রিপন হোসেনের ছেলে সম্রাট হোসেন (২১) ও মাদারীপুর জেলার সদর উপজেলার জালালপুর গ্রামের বাবু হাওলাদারের ছেলে সুমন হাওলাদারকে (৩৫)। আটককৃতরা সবাই আন্তঃজেলা সোনা চোরাচালান চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জানা যায়, ভারত সীমান্তবর্তি দর্শনা থেকে সোনার একটি বড় ধরণের চালান প্রাইভেট কারে ঢাকার উদ্দ্যেশে রওনা হচ্ছে - গোপনসূত্রে এমন সংবাদ জানতে পেরে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ ফখরুল আলম খানের নেতৃত্বে পুলিশ চুয়াডাঙ্গা শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থান নেয়। পুলিশের একটি দল (ঢাকা মেট্রো- গ ১৭-৮৩৩২) এলিয়ন প্রাইভেটকারের পিছু নেয়। কিন্তু পুলিশ প্রাইভেট কারটিকে চুয়াডাঙ্গায় থামাতে পারেনি। প্রাইভেটকারটি চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কে দ্রæত গতিতে ছুটে যায়।
এদিকে,- সংবাদ পেয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নূরকে সাথে করে পুলিশের একটি টিম নিয়ে চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কের বন্ডবিল এলাকায় পৌর সীমানা গেটের সামনে অবস্থান নেয়। বেলা ৩টার দিকে প্রাইভেট কারটি সেখানে পৌঁছলে সেটি থামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় চালকের সিটের পেছনে বাঁশপাতা রঙের মোটা কাগজে ক্রসটেপ দিয়ে মোড়ানো ৬ টি বান্ডিলের ভেতর থেকে স্বর্ণের বালা, নেকলেস, আংটি, কানের দুলসহ বিভিন্ন ধরণের স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়। এ সময় প্রাইভেট কারের চালকসহ ৩ জন যুবককে আটক করা হয়। জব্দ করা হয় সোনা চোরাচালানে ব্যবহৃত প্রাইভেট কারটি।
পরে, আলমডাঙ্গা থানায় এনে উদ্ধারকৃত গহনাগুলি ওজন করা হয়। ওজন ২ কেজি ৫৮৫ গ্রাম। ২২ ক্যারাট সোনা দিয়ে প্রস্তুত ওই গহনাগুলির আনুমানিক মূল্য এক কোটি ৪৪ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন উপস্থিত স্বর্ণব্যবসায়ী।
আটক ৩ যুবক হচ্ছেন চোরাচালানে ব্যবহৃত প্রাইভেট কারের চালক দর্শনার শ্যামপুরের নূর ইসলামের ছেলে বাপ্পি (৩০), চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বনানীপাড়ার লিপন ওরফে রিপনের ছেলে সম্রাট (২১) ও মাদারীপুরের জালাল্পুরের বাবু হাওলাদারের ছেলে সুমন হাওলাদার।
আটক ৩ যুবক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছে। প্রাইভেটকারের ড্রাইভার বাপ্পি জানিয়েছেন, ভারতের কলকাতার বিজন হালদারের স্বর্ণালঙ্কার দামুঢ়হুদার পুড়োপাড়া থেকে তিনি ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। ঢাকার কল্যাণপুর থেকে ভবেশ নামক এক ব্যক্তি তা গ্রহণ করবেন –এমন কথাবার্তা ছিল। ইতোপূর্বে তিনি ৪ ট্রি স্বর্ণালঙ্কার পাচার করেছেন বলেও স্বীকার করেছেন বলে জানা যায়। এ কাজের জন্য বিজন হালদার তাকে এলিয়ন প্রাইভেট কার কিনে দিয়েছেন। প্রতি মাসে ৬০ হাজার তাকা বেতন দেন। এছাড়া প্রতিট্রিপে অতিরিক্ত ৮ হাজার টাকা করে দেন বলেও ভ্রাইভার বাপ্পি জানিয়েছেন।
তবে আটক সম্রাট ও সুমন হাওলাদার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেননি। সন্ধ্যায় আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ সোনা চোরাচালানের নেপথ্যের গডফাদার কারা তাদের পরিচয় উন্মোচন করে ব্যবস্থা নিতে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ এখন উদগ্রীব বলে জানা গেছে। ভবেশ ও বিজন হালদারের সঠিক তথ্য তালাশ করছে পুলিশ।