কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার নার্সসহ করোনায় আক্রান্ত ১২ জন
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ- ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা আক্রান্ত অপর্যাপ্ত ডাক্তার ও নার্স নিয়েই এই হাসপাতালকে সামাল দিতে হচ্ছে অব্যাহত ভাবে খারাপ হতে থাকা করোনা মহামারি। হাসপাতালের ডাক্তার,নার্স,ওয়ার্ডবয়সহ অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসা দিতে কর্মকর্তারা হিমসিম খাচ্ছেন।
কোভিড-১৯ এর সংকট প্রকট আকার ধারণ করায় সংক্রমণ রোধে লকডাউন দেওয়া হয়েছে। তবে এই কালীগঞ্জ হাসপাতালে নেই পর্যাপ্ত সংখ্যক ডাক্তার ও নার্স। কর্মরতদের মধ্যে অনেকের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে করোনা রোগিদের সেবা দেওয়ার জন্য। যে কারণে এ হাসপাতালে করোনা রোগিদের চিকিৎসা দিতে মারাতœক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। করোনা রোগিদের জন্য রাখা হয়েছে ১৭ বেড।
রোগি বৃদ্ধি হলে বেড বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কালীগঞ্জ হাসপাতালে ২ জন ডাক্তার, ৫ জন নার্স, ১জন ওয়ার্ডবয়, টিকিটপ্লান ১জন, ফার্মাাসিষ্ট ১ জন, প্যাথোলোজিষ্ট ১ জন, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে এ ১২ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। সাধারন বহিরাগত করোনা রোগি রয়েছেন ১১ জন ভর্তি। এ হাসপাতালে অন্তত ২৫ জন ডাক্তারের প্রয়োজন রয়েছে, সেখানে কর্মরত রয়েছেন ১১ জন। দু’জন ডাক্তার কে খুলনা মেডিকেলে ডেপুটেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ১১ জন ডাক্তার কে দুটি ভাগ করে দায়িত্ব পালন করছেন।
আবার সকাল, সন্ধ্যা ও রাতের শিফটে ভাগ হয়ে প্রতিদিন কাজ করেন, তারা কোন ভাবেই বিরাম পাচ্ছেন না। হাসপাতালে এখন ও ১২ জন নার্স প্রয়োজন রয়েছে, বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ১৩ জন। ৪ জনকে ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে করোনা রোগির সেবা প্রদানের জন্য। ১৩ জন নার্সের মধ্যে ৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। কালীগঞ্জ হাসপাতালে ক্রমবর্ধমান করোনা রোগীর চাপ রয়েছে, প্রতিদিন রোগির চাপ বাড়ছে আবার বেশি গুরুতর হলে যশোর, খুলনাতে পাঠানো হচ্ছে উন্নত চিকিৎসার জন্য।
এখানে জনবল সংকট রয়েছে ফলে চিকিৎসা দেওয়া খুবই কষ্ট হচ্ছে। কালীগঞ্জ হাসপাতাল টি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট জনবলের দিক থেকে ভালো অবস্থানে নেই বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান। কালীগঞ্জ হাসপাতালের কর্মরত করোনায় আক্রান্তরা সবাই এর আগে টিকা ও নিয়েছিলেন। আক্রান্ত সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে ও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শামিমা শিরিন লুবনা জানান, ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ জনবল সংকট থাকার কারণে করোনার চিকিৎসা দেওয়া খুবই কষ্ট হয়ে পড়ছে।
ইতোমধ্যে ডাক্তার, নার্সদের খুলনা ও ঝিনাইদহে ডেপুটেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে জনবল সংকট হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে অনেক পদ শূন্য রয়েছে। জনবল বৃদ্ধির জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা স্বাস্থ্য বিভাগের উপরি মহলে চিঠি পাঠিয়েছেন। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালের প্রয়োজনীয় জনবল নেই আমরা বিদ্যমান জনবল দিয়ে রোস্টার অনুযায়ী কাজ করছি এবং রোগীদের চিকিৎসা নিতে উৎসাহিত করছি। হাসপাতালের কর্মরত ডাক্তার মাজহারুল ইসলাম করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ও ডাক্তার সুমন আক্রান্ত হয়ে সুস্থ্য হয়েছেন।
এদিকে ডাক্তার মাজহারুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ঝিনাইদহ কারাগারের ডাক্তার হিসাবে কর্মরত থাকা অবস্থায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং তার শিশু কন্যা ও আক্রান্ত হয়েছে। ডাক্তার মাজহারুল ইসলামের পরিবারের ৩ জন আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কালীগঞ্জ উপজেলার প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের জন্য এ উপজেলার একমাত্র সরকারি হাসপাতালটিতে সারা বছরই রোগী ভর্তি থাকে। আবার অনেকের মধ্যে করোনা নিয়ে চলছে অজানা এক আতঙ্ক। কালীগঞ্জে একমাত্র সরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তি সব সময় বেশি থাকে। সারা দিনেই ঠান্ডা-কাশির সাধারণ রোগীরা আসছেন। তাদের ব্যবস্থাপত্র দেয়ার পাশাপাশি করোনা সংক্রান্ত নিয়মকানুন মেনে চলতে এবং আতঙ্কিত না হওয়ার সাহস দিচ্ছেন।